বিজ্ঞাপন

নিলামের গাড়ি নিয়ে প্রতারণা, বন্দরের কর্মচারীসহ গ্রেফতার ৬

November 19, 2020 | 5:12 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিলামের জন্য রাখা আমদানি করা গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার ছয় জন হলো- নূরুল আবছার, রুহুল আমিন, মো. ইউসুফ, মহিদুল ইসলাম সরকার নজরুল, মোবারক হোসেন সুমন এবং আনোয়ার হোসেন

এ সংক্রান্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন রতন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, গ্রেফতার নূরুল আবছার চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগে স্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত আছেন। তিনি গাড়ির শেডের সংশ্লিষ্ট জেটিতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইউসুফও অস্থায়ী ভিত্তিতে একই জেটিতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে আছেন। আর রুহুল আমিন চট্টগ্রাম বন্দরে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তিতে পিওন হিসেবে কাজ করেন।

পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ সারাবাংলাকে জানান, মানিকগঞ্জের গাড়িচালক মো. শাহীনুর রহমান হালিম চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিলামে একটি ‘নোয়া মাইক্রোবাস’ কেনার জন্য তার বন্ধু রুবেলের মাধ্যমে মোবারক হোসেন সুমনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। সুমন জানায়, তার মামা মহিদুল ইসলাম সরকার নজরুল চট্টগ্রাম কাস্টমসের এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ)। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে কম দামে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গাড়ি কেনা যাবে।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সুমন হালিমকে নিয়ে চট্টগ্রামে আসেন। তার কথিত মামা মহিদুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সানোয়ার হোসেন নামে একজনের সঙ্গে মহিদুল হালিমকে পরিচয় করিয়ে দেন। সানোয়ারকে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। মহিদুল ইউসুফ, নুরুল আবছার ও রুহুল আমিনের মাধ্যমে হালিমের এক বন্ধুকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে একটি মাইক্রোবাস দেখিয়ে আনেন। ১২ জানুয়ারি গাড়ি কেনার জন্য সুমন হালিমকে নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের পেছনে যান। সেখানে আগে থেকে একটি প্রাইভেটকারে বসা ছিলেন সানোয়ার। ওই গাড়িতে বসে হালিম তার হাতে ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন।

টাকা পাবার পর সানোয়ার জানান, গাড়ির কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর জেটিগেট দিয়ে বের হবে। এরপর হালিমকে সেখানে দাঁড় করিয়ে রেখে সুমন ও সানোয়ার ওই প্রাইভেট করে করে চলে যান। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর হালিম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। পরে তিনি বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।

১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা আত্মসাতের পর নগরীর জুবিলী রোডে আল ফয়সল হোটেলে বসে তারা টাকা ভাগাভাগি করে। সুমন নেয় ২ লাখ টাকা, মহিদুল এক লাখ ১০ হাজার টাকা এবং বাকি টাকা নেয় সানোয়ার।

বিজ্ঞাপন

শাহনেওয়াজ বলেন, ‘বাস্তবে সানোয়ার এবং মহিদুল কেউই কাস্টমসে চাকরি করেন না। তারা প্রতারক। চট্টগ্রাম বন্দরের স্থায়ী-অস্থায়ী তিন কর্মচারী তাদের প্রতারক সিন্ডিকেটের সদস্য। সানোয়ারকে ডবলমুরিং থানার একটি মামলায় আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এই মামলায় প্রথমে মহিদুলকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করি। এরপর তার দেওয়া তথ্যমতে বাকি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করি।’

‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, হালিমের বন্ধু রুবেলের সঙ্গে পরিচয় ছিল গ্রেফতার আনোয়ার হোসেনের। আবার আনোয়ারের সঙ্গে সুমনের পরিচয় ছিল। হালিমকে সুমনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আনোয়ার ৫০ হাজার টাকা নেয়। সুমনের সঙ্গে ইউসুফের পরিচয় ছিল। তার মাধ্যমে নুরুল আবছার ও রুহুল আমিনের পরিচয় হয়। হালিমের বন্ধুকে বন্দরের ভেতরে ঢুকিয়ে গাড়ি দেখানোর জন্য সানোয়ার দুই দফায় ইউসুফকে ৬৬ হাজার টাকা দেয়’, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন