বিজ্ঞাপন

বিজয় মাসে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না

December 6, 2020 | 7:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কথা ছিল, বিজয় দিবসের আগে আংশিক রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করবে সরকার। তবে সারাদেশ থেকে নির্ভুল তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ার কারণে রাজাকারদের সেই সঠিক তালিকা প্রণয়ন করতে পারেনি সরকার। ফলে বিজয়ের মাসে প্রকাশ করা হচ্ছে না রাজাকারদের তালিকা।

বিজ্ঞাপন

রাজাকারের তালিকা প্রণয়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির অধীনে গঠিত উপকমিটির তথ্য বলছে, এই তালিকা কবে নাগাদ প্রকাশ পেতে পারে, সেই দিন-তারিখও ঠিক করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে আগামী মার্চ মাসে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করতে পারে এই উপকমিটি।

রোববার (৬ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে মুক্তিযুদ্ধ বিষায়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে রাজাকারদের তালিকা প্রণয়ন ও তা প্রকাশ করার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্র বলছে, রাজাকারদের তালিকা প্রণয়ন করার জন্য সারাদেশে জেলা-উপজেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে থাকবেন জেলা-উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডাররা।

রাজাকারদের তালিকা করার জন্য সহায়তা করবে মুক্তিযুদ্ধ সংসদের উপজেলা পর্যায়ের সদ্য ও সাবেক কমান্ডাররা। তাদের আহ্বায়ক করে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন জীবিত কমান্ডারদের নিয়ে রাজাকারদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এ কমিটি গঠনের জন্য সব জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হবে বলেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি এবং রাজাকারের তালিকা প্রণয়ন বিষয়ক উপকমিটির প্রধান শাজাহান খান বলেছেন, বিজয়ের মাসে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বৈঠকে রাজাকারদের তালিকা তৈরির অগ্রগতি নিয়ে আলেচনা করেন বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাজাকারদের এই তালিকা প্রকাশ করার আগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনটি যেন জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে পাস করা হয়, সে বিষয়টি কমিটির বৈঠকে উঠে আসে। আইনটি পাস হলে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ আরও সহজ হবে। আগামীকাল সোমবার (৭ ডিসেম্বর) আইনটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার কথা রয়েছে বলে মুক্তিযোদ্ধ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন।

এদিকে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ৪২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এতে গিয়ে পিস কমিটির নেতাদেরও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিএনপি ২০০৫ সালে তাদের মনোভাবাপন্ন অনেককে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। এদের বেশিরভাগই ছিলেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।

বিজ্ঞাপন

এসব বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগই আওয়ামী ঘরানার। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আওয়ামী লীগের প্রাধান্য বেশি দেখে ক্ষমতায় থাকলে বিএনপি ২০০৫ সালে তাদের মনোভাবাপন্ন অনেককে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। এদের বেশিরভাগই ছিল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।

রাজাকারদের তালিকা প্রকাশের বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘বিজয়ের মাসে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ সঠিকভাবে তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভভ হয়নি।’

আইনি কোনো জটিলতার কারণে কি সম্ভব হচ্ছে না?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজাকারদের তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা নেই। নির্ভুল রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হবে। কবে এই তালিকা প্রকাশ করা হবে, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।’

সচিব আরও বলেন, ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনটি আগামীকাল (সোমবার) মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে আগামী অধিবেশনে আইনটি পাস হতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন