বিজ্ঞাপন

‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি রেখে জঙ্গি নির্মূল সম্ভব না’

March 15, 2018 | 9:39 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সরকার একদিকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে অন্যদিকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিরও সুযোগ রেখেছে। এতে করে জঙ্গি নির্মূল সম্ভব নয়। জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে হলে সবার আগে দেশ থেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রতিবাদী লেখক জাফর ইকবাল হত্যাপ্রচেষ্টা : ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধকরণে বাধা কোথায়’ শিরোনামে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এমন মত দেন।

এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। মূলবক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় অংশ নেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইশফাক ইলাহী চৌধুরি, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তাদের সবারই বলা উচিত দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত। সরকার একদিকে জঙ্গিদের ধরছে, মারছে অপরদিকে তাদের যারা পৃষ্ঠপোষক তাদের তোষণ করছে। এতে করে জঙ্গিবাদ নির্মূলে যে লক্ষ্য তা পূরণ হচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকার তেতুল হুজুরদের (হেফাজতে ইসলাম) সঙ্গ দিচ্ছে, তারা হাটহাজারিতে প্রকাশ্যে জমি-জমা নিচ্ছে। বিনিময়ে সরকার তাদের কাছ থেকে ভোট আশা করছে। ভোটের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির নীতি যদি একই হয়, তবে আদর্শের রাজনীতি কোথায় রইলো?

তিনি বলেন, ৭৫-এর পর সংবিধান এবং সংবিধানের বাইরে বেশ কিছু দুষ্কর্ম হয়েছে। এরমধ্যে মোটা দাগে চারটি দুষ্কর্ম

বিজ্ঞাপন

করেছেন জেনারেল জিয়া। তিনি আধা গণতন্ত্র, আধা সামরিকতন্ত্র করে রাজনীতিতে বিএনপি নামের একটি বিষবৃক্ষ পুতে গিয়েছেন। যারা এখন জঙ্গিবাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। তাই কেবল জঙ্গিবাদকে প্রত্যাখ্যান করলেই হবে না। তাদের যারা প্রশ্রয় দেয় তাদেরও প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশে  দু-একটা জঙ্গি মেরে কিংবা তাদের ধরে জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধ করা যাবে না। তাদের শেকড় দেশের বাইরেও রয়েছে।তাই সরকারের একার পক্ষে এটি রোধ করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।

সরকার ভোটের জন্য হেফাজতকে কাছে টানলেও তাদের ভোট পাবে না উল্লেখ করে ড. আনিসুজ্জামান আরও বলেন, তাদের যতই প্রশ্রয় দেওয়া হোক আমাদের একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, তারা কখনোই গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে ভোট দেবে না।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, এ সরকারের আমলে দেশের অর্থনীতিতে গতি আসলেও শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে পিছিয়েছে। একটি দেশে আট থেকে নয় ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি। কেবল মাদরাসার মধ্যেই চার থেকে পাঁচ ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি। যা কর্মবান্ধব জনগোষ্ঠী তৈরি করতে পারছে না।

বিজ্ঞাপন

সরকার ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে যেভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছে তাতে আমাদের উচিত সরকারের সরাসরি বিরোধীতা করা। কিন্তু সরকার আমাদের জন্যও কিছু কিছু কাজ করছে। ফলে আমি সরাসরি সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারছি না। তবে এটা ঠিক যে এমন দ্বিমূখী নীতিতে কোনো সফলতা আসবে না। কেন না সরকার ও প্রশাসন একইসঙ্গে জঙ্গি নির্মূলে পদক্ষেপ নিচ্ছে আবার তারাই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।

সারাবাংলা/এমএস/এমঅাই/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন