বিজ্ঞাপন

সতীর্থদের শ্রদ্ধা-স্মরণে রফিক জামান পরিবার

March 15, 2018 | 10:20 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারানো সেই রফিক জামান রিমু ও তার পরিবারকে স্মরণ করলেন তারই হাতে গড়া সংগঠনের কর্মীরা। এসব প্রতিবন্ধীদের অধিকার আদায়েই লড়াই করছিলেন সংগঠক রফিক জামান।

বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে রফিক জামানের হাতে গড়া সংগঠন পিএনএসপি ও এসডিএসএলের আয়োজনে রফিক জামান রিমু, তার স্ত্রী সানজিদা হক ও সন্তান অনিরুদ্ধ জামানকে স্মরণ করতে জড়ো হতে থাকেন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা। তাদের মধ্যে কেউ এসেছেন হুইল চেয়ারে, কেউ এসেছেন সঙ্গীকে নিয়ে। এসময় তারা মোমবাতি প্রজ্বলন নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বিজ্ঞাপন

আয়োজকরা জানান, ২০০৭ সাল থেকে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামে কাজ শুরু করেন রফিক জামান। ফোরামে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ২০০৮ সালে তাদের সংগঠিত করেন তিনি। গড়ে তোলেন সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্স (এসডিএসএল)। প্রতিষ্ঠাতাকালীন কোষাধ্যক্ষও ছিলেন তিনি।

রফিক জামান মনে করতেন, শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীরা কেবল ভাষাগত যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতার কারণে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাই তিনি প্রথম বাংলা ইশারা ভাষার স্বীকৃতি নিয়ে কথা বলেন। ইশারা ভাষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি করেন দোভাষী।

২০০৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রফিক জামানের প্রচেষ্টায় বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো বাংলা ইশারা দোভাষী ব্যবহার করা হয়। ২০১০ সাল থেকে বাংলা ইশারা ভাষা দিবসও পালন করছে এডিএসএল। এই দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিও ছিল তাদের। এ প্রেক্ষিতেই ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তৃতীয় গ্রেডের সরকারি দিবস হিসেবে ৭ ফেব্রুয়ারিকে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

রফিক জামান মনে করতেন, নির্যাতিত ও ধর্ষণের শিকার শ্রবণ প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুরা যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতার কারণে সমাজে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। তাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য থানাসহ জেলা আদালতে জবানবন্দি নেওয়ার জন্য বাংলা ইশারা ভাষায় প্রশিক্ষিত দোভাষীদের সহায়তা রাখার উদ্যোগ নেন তিনি। এক পর্যায়ে বাংলা ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা ও ইশারা ভাষা আইন প্রণয়ন নিয়েও তিনি কাজ করেছেন।

এসডিএসএল ও পিএনএসপি’র সভাপতি এম ওসমান খালেক, পিএনএসপি’র সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব, বি-এসসিএএন’র সভাপতি সাবরিনা সুলতানা, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম প্রমুখ উপস্থিত হয়েছিলেন রফিক জামান ও তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এই আয়োজনে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণ করতে গিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। ওই উড়োজাহাজে থাকা ৬৭ যাত্রীসহ ৭১ আরোহীর ৫১ জনই নিহত হন। ফ্লাইটের ৩২ যাত্রীসহ ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে প্রাণ হারান ২৬ জন। পারিবারিক ভ্রমণে নেপালে যাওয়া রফিক জামান রিমু, তার স্ত্রী সানজিদা হক ও সন্তান অনিরুদ্ধ জামানও ওই দুর্ঘটনাতে নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/এমএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন