বিজ্ঞাপন

‘হত্যার উদ্দেশেই ধাক্কা, স্বরাষ্ট্রের গাড়ি দেখে ছেড়ে দেয় পুলিশ’

December 10, 2020 | 6:35 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় ও বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে আমার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। ঘটনার সময় টার্গেট করা মোটরসাইকেলে না থাকায় আমি প্রাণে বেঁচে যাই। ওই সময় আমার সহকর্মীরা গাড়িটিকে আটক করে পুলিশ ডাকলেও সংসদ সচিবালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টীকার দেখে ছেড়ে দেয়।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে পুরানা পল্টন এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নুরের অভিযোগ, ঘটনার পর এ ব্যাপারে ১০ ডিসেম্বর ভোররাত আনুমানিক চারটার দিকে হাতিরঝিল থানায় স্বহস্তে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, আমার লিখিত অভিযোগে পুলিশ কোনো সিল দেয়নি। হাতিরঝিল থানার ওসির সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়েছে। এরপরেও এখন পর্যন্ত জিডির বিষয়ে কোনও কিছু জানায়নি পুলিশ।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘বেশিরভাগ সময় আমি আমার ছোট ভাইয়ের মোটরসাইকেলেই যাতায়াত করি, কিন্তু গতকাল বেশি রাত হওয়ার কারণে বাসায় ফেরার সময় উবার নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা হই। বুধবার আনুমানিক রাত ১১টার দিকে পল্টনের অফিস থেকে আমার মোটরসাইকেলটি ছোটভাই চালিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। মালিবাগ ফ্লাইওভারে পৌঁছলে পুলিশের গাড়ির মতো হুইসেল দিয়ে ওভারব্রিজ থেকে ফলো করে আমাদের দিকে আসছিল একটি গাড়ি। তখন আমার ছোট ভাই পুলিশ ভেবে ওই প্রাইভেটকারটিকে (ঢাকা মেট্রো গ-৩১-৬৫০৮) সাইড দেয়। তারপরেও আমার মোটরসাইকেল যেদিকে যাচ্ছিল ঠিক সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রাইভেটকারটি চাপ দিচ্ছিল।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘পরপর দুই বার প্রাইভেটকারটি আমার মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মোটরসাইকেল চালক আমিনুল ইসলাম কৌশলে প্রাইভেটকারের ধাক্কা এড়িয়ে গেলে তৃতীয়বারও একইভাবে প্রাইভেট কারটি ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমার মোটরসাইকেলটি তা এড়িয়ে গেলে পাশে থাকা বাসকে সজোরে ধাক্কা দেয়।’

এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ, ভুক্তভোগী বাসের ড্রাইভার ও আমার পেছনে থাকা সহযোগী ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন ও শাকিল উজ্জজামান এগিয়ে আসে। কিন্তু ঘটনাস্থলে রামপুরা আবুল হোটেলসংলগ্ন টহলরত পুলিশ প্রাইভেটকারে থাকা ব্যক্তিদের পরিচয় পেয়ে কোনোরকম জিজ্ঞাসাবাদ ও গাড়ি জব্দ না করে তাদের ছেড়ে দেয়। দুষ্কৃতিকারীরা গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার উদ্দেশে ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে বলে, অভিযোগে উল্লেখ করেন নুরুল হক নুর।

বিজ্ঞাপন

নুর আরও বলেন, ‘পুলিশের ভাষ্যমতে, গাড়িতে থাকা একজন হলেন- সিনিয়র সচিবের ছেলে। এরপর ভোররাত আনুমানিক চারটার দিকে হাতিরঝিল থানায় স্বহস্তে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, আমার লিখিত অভিযোগে পুলিশ কোনো সিল দেয়নি। এ ব্যাপারে হাতিরঝিল থানার ওসির সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত জিডির বিষয়ে কোনও কিছু জানায়নি পুলিশ।’ এ ব্যাপারে সরকার ও প্রশাসনের কাছে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন নুর।

মোটরসাইকেল চালক আমিনুল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “গাড়িটি যখন চাপ দিচ্ছিল তখন গাড়ি চালককে কারণ জিজ্ঞেস করলে গাড়ির ভেতরে থাকা বেশ কয়েকজন ‘ধর, ওকে ধরৎ” বলে চিৎকার করে। তাদের এরকম আচরণ দেখে মনে হয়েছিল, ওরা ডিবির সদস্য হতে পারেন। কিন্তু পরে দেখলাম ডিবি নয়, তারা একজন সচিবের ছেলের পরিচয় দিয়েছেন।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন