বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ সেই চর খানপুরবাসীর

December 20, 2020 | 9:19 am

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

চর খানপুর (রাজশাহী) থেকে ফিরে: চর খিদিরপুর পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। রাজশাহীর সীমান্তবর্তী পদ্মাচরের শেষ গ্রাম বলতে এখন চর খানপুর। এই গ্রামটিও যেকোনো মুহূর্তে চলে যেতে পারে পদ্মার পেটে। সব হারানো মানুষগুলোর স্বপ্নও হারিয়ে গিয়েছিলো পদ্মার ভাঙনে। কখন পদ্মা সবটুকু নিয়ে নেয় সেই আশঙ্কা সুর হয়ে বাজতো সবার মনে। শিক্ষার আলো তো ছিলোই না, সাথে রাতের অন্ধকার দূর করার একটা মাত্র উপায় ছিলো কেরোসিনের কুপি বাতি। সেই ঘুটঘুটে অন্ধকার গ্রামে জ্বলছে বিদ্যুতের আলোর। বাড়ির চালে বসেছে সোলার প্যানেল। গ্রামের যুবকদের হাতে পৌঁছেছে মোবাইল ফোন।

বিজ্ঞাপন

৩০ বছরের লিখন চৌধুরী। ভিটায় লাগানো পেঁয়াজের ক্ষেতে কাজ করছিলেন। পাশেই মোবাইল ফোনে গান বাজছে। পাশেই টিনের চালা দিয়ে তৈরি করা বাড়ির চালের ওপর লাগানো রয়েছে সোলার প্যানেল। সোলারের বিষয়ে জানতে চাইলে লিখন সারাবাংলাকে বলেন, অন্ধকার এই গ্রামে সবাই কেরোসিনের কুপি বাতি জ্বালাইতাম। কয়েকমাস হলো সরকার সবার ঘরে ঘরে সোলার প্যানেল দিয়েছে। ক্যাবল, বাতি সবই দিয়েছে। কোনো টাকা লাগেনি। সোলার আসার পর সবাই কুপি বাতি জ্বালানো বন্ধ করেছি। এখন সবাই ফোনও চালাতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিয়ে লিখন বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এই গ্রামে বিদ্যুৎ আনা সম্ভব নয়, তাই সোলার দিয়ে আলোকিত করেছেন তিনি। এই গ্রামের সকলেই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

বিজ্ঞাপন

৭০ বছরের বৃদ্ধ জয়নাল আবেদীন বলেন, সূর্য ডুবে গেলে অন্ধকারে ডুবে যেত এই গ্রাম। আর এখন রাত গভীর হলেও আলোকিত থাকে। সোলারের বাতি ঝলমল করে। এটা শেখ হাসিনার অবদান। তাঁর জন্য ছেলে মেয়েরা আনন্দে পড়তে পারে খেলতে পারে। বয়স্করা আলোতে চলতে পারে।

আয়নাল হোসেন নামে আরেক যুবক বলেন, পুরো গ্রামে মাত্র তিনজনের বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে। সোলার দিয়ে চলে। বিটিভি ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। তবে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়েছে ফোন চার্জ করা যায়।

সোলার বাতি লাগানো হয়েছে একমাত্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতেও। সোলারের আলোকিত খানপুর বিজিবি ক্যাম্পও। জানতে চাইলে খানপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার মানিক দেবনাথ সারাবাংলাকে বলেন, খানপুরে সোলার আসায় সবার উপকার হয়েছে। গ্রামের মানুষ খুব খুশি। বিজিবিরও অনেক সুবিধা হয়েছে। সীমান্ত পাহারা, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ক্যাম্প পাহারা দেওয়াসহ নানান সুবিধা হয়েছে। বিশেষ করে চোরাচালান প্রতিরোধে ব্যাপক সহযোগিতা হচ্ছে। আলো থাকায় সহজেই সবকিছু দেখা ও চেনা যায়।

বিজ্ঞাপন

খানপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের সারাবাংলাকে বলেন, তিন মাস হলো গ্রামে সোলার এসেছে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ সব কাজে সহযোগিতা করছে সোলার। বিদ্যুৎ আসার কোনো সম্ভাবনা নেই কারণ এই ভুখণ্ডই হয়তো থাকছে না। পদ্মার স্রোতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মোট ২৫০ টি সোলার প্যানেল এই গ্রামে বিতরণ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনা খরচে এসব সোলার দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। এই গ্রামকে বাঁচাতে পারলে আরো ভালো হতো। শক্ত বাধ তৈরি করা গেলে হয়তো গ্রামটাকে রক্ষা করা যেতো।

সারাবাংলা/ইউজে/এএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন