বিজ্ঞাপন

করুণ হাল ‘প্রহরীদের’; ক্লাবগুলোর অনাস্থা

March 16, 2018 | 6:22 pm

জাহিদ-ই-হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঘরোয়া ফুটবলের পরের মৌসুম শুরু হবে অনেক পরে। তার আগেই দল গোছানোয় ব্যস্ত পেশাদার লিগের ক্লাবগুলো। এই খেলোয়াড় দলবদলের লড়াইয়ে পিছিয়ে ক্লাবগুলোর গোলরক্ষকদের। বেশিরভাগ ক্লাবই তাদের গোলরক্ষকদের ধরে রাখতে চায় না।

গেল মৌসুমে এই পোস্ট প্রহরীদের উপর ভরসা নেই কারও। তাই ছেড়ে দিতে চায় ক্লাবগুলো। তাদের দাবি, যাচ্ছেতাই ছিল এবারের ঘরোয়া ফুটবল মৌসুমে গোলরক্ষকদের পারফরম্যান্স।

এটা একদিক থেকে দেশের জন্য অশনিসংকেত। সংকট হচ্ছে। পাইপলাইনেও নেই ভালো মানের প্রহরী।

বিজ্ঞাপন

এবারের লিগে রানার্সআপ লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব তিন গোলরক্ষক মিতুল হোসেন, সামিউল ইসলাম মাসুম ও মোহাম্মদ নাঈমকে খেলিয়েছে। পুরো মওসুমে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পোস্টের নিচে ছিলেন মাসুদুর রহমান মোস্তাক, জিয়াউর রহমান, অভিজ্ঞ বিপ্লব ভট্টাচার্য্য। জানা গেছে, এ জন্য এবার এই তিন কিপারের কাউকেই রাখছে না শেখ রাসেল। আরামবাগ ক্রীড়া সঙ্ঘ একেক দিন এককজনকে খেলিয়েছে। কখনো আক্কাস শেখ, কখনো অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের মাহফুজ হাসান প্রিতম এবং শেষ দিকে খেলেন আজম খান। রহমতগঞ্জ প্রথমে রাজীব, পরে লিংকন এবং শেষপর্যায়ে গোলাম মোস্তফা তোয়ানকে একাদশে চান্স দেয়।

মোহমেডানে একদিন মামুন খান খেলেছেন তো অন্য ম্যাচে রাসেল মাহমুদ লিটন। ফরাশগঞ্জের পোস্টের নিচেও খেলোয়াড় বদল হয়েছে। অসীম দাস, বোরহানউদ্দিন ও মামুন আলিফ তারা সবাই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ব্রাদার্স তো নিয়মিত গোলরক্ষদের ওপর আস্থা রাখতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বিসিএল থেকে সুজন চৌধুরীকে এনে রেলিগেশন এড়ায়।

একই অবস্থা ছিল বিজেএমসিতেও। তাদের কোনো কিপারই নিয়মিত হতে পারেননি। সোহাগ হোসেন পলাশ, আরিফুজ্জামান হিমেল ও আরিফুর ইসলামরা খেলেছেন অদল বদল করে। ইনজুরি আক্রান্ত উত্তম বড়–য়াকে হটিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পোস্টের নিচে জায়গা করে নেন আজাদ হোসেন। সাইফ স্পোর্টিং আনিসুর রহমান জিকোকে দিয়ে মওসুম শুরু করলেও পরে চলে আসেন পাপ্পু হোসেন।

বিজ্ঞাপন

শুধু ঢাকা আবাহনী ও চট্টগ্রাম আবাহনী যথাক্রমে শহীদুল আলম সোহেল এবং আশরাফুল ইসলাম রানার ওপর নিয়মিত আস্থা রাখে।

শেখ জামালে অবশ্য ইনজুরির জন্য পর্যায়ক্রমে তিন গোলরক্ষককে খেলাতে বাধ্য হয়েছিল। জানান দলের কর্মকর্তা আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। তবে শেখ রাসেলের সহকারী কোচ এস এম আসিফুজ্জানান তথ্য দেন, পারফরম্যান্সের জন্যই তিন গোলকিপারকে মাঠে নামাতে বাধ্য হয়েছি আমরা। জিয়া ও মোস্তাকের ধারাবাহিকতা ছিল না। যে কারণে বিপ্লবকে শেষ দিকে খেলিয়েছি। রহমতগঞ্জ কোচ কামাল বাবু তো তার দলের বাজে পারফরম্যান্সের জন্য গোলকিপারদেরই দায়ী করেন। মোহামেডান কোচ রাশেদ মাহমুদ পাপ্পু জানালেন, মামুন খান ইনজুরির জন্য বাদ পড়েছিল। এই গ্যাপে লিটন ভালো করতে না পারায় ফিট মামুন ফের একাদশে চলে আসে।

কেন গোলরক্ষকদের এই অবস্থা। মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক কোচ ও জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক পনিরুজ্জামান পনির এ জন্য গোলরক্ষকদের ঠিক মতো কোচিং না হওয়াকে দায়ী করলেন। তার মতে, ‘সেভাবে তো এই পজিশনে কোচিং হয় না।’ একই মত মোহামেডান কোচ পাপ্পুরও। চট্টগ্রাম আবাহনী ও জাতীয় দলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা মাঠে কিপারদের বাজে পারফরম্যান্সের জন্য এই শেষ প্রহরীদের মনসংযোগের অভাবকে দায়ী করলেন।

ক্লাব দলে কিপারদের এই বাজে পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়ছে জাতীয় দলেও। আমিনুল ও বিপ্লবের পর কেউই জাতীয় দলে আস্থার প্রতীক হতে পারেননি। ২০১৬তে ভুটানের কাছে বাংলাদেশের হারের নেপথ্যও ছিল কিপারের ভুল। প্রিতমের ভুলেই নেপালের কাছে হেরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন