বিজ্ঞাপন

বরিশাল পুলিশে ডোপটেস্ট ভীতি: গ্রেফতার ৫, চাকরিচ্যূত ৪

December 24, 2020 | 12:42 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ১৭ সদস্যকে মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) থেকে কনস্টেবল মর্যাদার পাঁচ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার ও চার জনকে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ।

একজন পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ‘বাহিনীতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান নিজেই প্রতিটি সদস্যকে ডোপ টেস্ট করানোর উদ্যোগ নেন। সম্প্রতিকালে বরিশালে মাদকসহ বেশ কয়েকজন মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের সদস্য আটক হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইমেজ সংকট দেখা দেয়। প্রশাসন যেখানে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স অবস্থান নিয়েছে, সেখানে তাদেরই সদস্যরা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি একেবারে অনৈতিক।’

তিনি আরও জানান, পুলিশ কমিশনার ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নিয়ে হেডকোয়াটার্সকে বিষয়টি অবহিত করেন। প্রাথমিকভাবে কারা মাদক গ্রহণ করতে পারে এ ধরনের পুলিশ সদস্যদের সম্ভাব্য তালিকা করা হয়। এরপর পুলিশ কমিশনার কার্যালয় বিশেষ ব্যবস্থায় সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ধারাবাহিকভাবে এ পরীক্ষার মুখোমুখি করে।

বিজ্ঞাপন

তবে পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান ডোপ টেস্ট চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও হেডকোয়াটার্সের অনুমতির বিষয়টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে স্বচ্ছতা ধরে রাখতে ইতিবাচক যেকোনো উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে নেওয়া যেতে পারে। তারই আলোকে ডোপ টেস্ট চালু করে পুলিশ সদস্যদের এক ধরনের সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে।’

এ পর্যন্ত কতজন পুলিশ সদস্যকে ডোপ টেস্টে মাদকাসক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এমন প্রশ্নে শীর্ষ এই পুলিশ কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেনি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, বেশ কয়েকজন মাদকাসক্ত হিসেবে প্রমাণিত হওয়ার তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

ওই সূত্রটি আরও জানায়, ‘গত ১৫ মাসে ৪৮ জন সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্টে ১৭ জনের রিপোর্ট পজেটিভ হয়। তাদের মধ্যে কনস্টেবল থেকে এএসআই পর্যায়ের চার জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়া মাদক বিক্রিতে জড়িত থাকায় মামলা দিয়ে পাঁচ সদস্যকে পাঠানো হয়েছে কারগারে।’

বিজ্ঞাপন

জানাগেছে, মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের ধরতে পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে গোয়েন্দা নিয়োগ করা হয়েছে। ইউনিট প্রধানরা কাউকে সন্দেহ করলে তারা গোপনে কমিশনার কার্যালয়ে মাদকাসক্ত কিংবা মাদক কারবারী পুলিশের তালিকা প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের কৌশলে ডেকে এনে ডোপ টেস্ট করা হয়। যাদের রিপোর্ট পজেটিভ হয় তাদের কিছুদিন পর আবার ডোপ টেস্ট হয়। চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হতে তৃতীয়বারের মতো করা হয় ডোপ টেস্ট।

ডোপ টেস্টে কারোর রিপোর্ট পজেটিভ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত এবং বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে করা হচ্ছে চাকরিচ্যূত। ডোপ টেস্টের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও অনেকেই স্বচ্ছ থাকতে নিজ উদ্যোগেই ডোপ টেস্টে আগ্রহী হচ্ছেন।

সারাবাংলা/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন