বিজ্ঞাপন

সরকারের অদূরদর্শিতায় ভ্যাকসিন নিয়ে অনিশ্চয়তা: বিএনপি

January 6, 2021 | 5:12 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারের অদূরদর্শিতার কারণেই ভ্যাকসিন নিয়ে অনিশ্চিয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। অনিশ্চয়তা দূর করতে অতিদ্রুত বিকল্প উৎস্য খোঁজারও পরামর্শ দিয়েছে দলটি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেল ভ্যাকসিনের ব্যাপারে দলীয় বক্তব্য তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় থাকায় জনগণের প্রতি তাদের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নেই। তাদের অদূরদর্শিদতা ও লুটপাটনীতির কারণেই ভ্যাকসিন নিয়ে আজ অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। যে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে তার থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে অনতিবিলম্বে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, মূল্য, সংরক্ষণ এবং বিতরণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বক্তব্য জনগণের সামনে উপস্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’

‘সেইসঙ্গে ভ্যাকসিন সরবারহের জন্য অতিদ্রুত বিকল্প উৎস্য খুঁজে বের করার জন্য আহবানও জানাচ্ছি’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

বিকল্প উৎসে ভ্যাকসিন কোন দেশ থেকে আনার কথা বলছেন—প্রশ্ন করা হলে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘ফাইজার ও মর্ডানার ভ্যাকসিন সম্পর্কে সবাই ওয়াকিবহাল যে, এটা সংরক্ষণে একটা ৭০ ডিগ্রি মাইনাস এবং আরেকটা ২০ ডিগ্রি মাইনাস তাপমাত্রা লাগে। এসব আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য না এবং আমাদের দেশে এসব আনাও সম্ভব হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়া অন্যান্য দেশ যেমন রাশিয়া স্পুটনিক টাস্ক, চীন সিনো ফার্মা অনুমোদন দিয়ে তারা ইতিমধ্যে টিকা দিচ্ছে। অতত্রব তিন বা চারটি টিকাই অ্যাভেইলেবল হবে, তা নয়। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কয়েকটি ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে। তাই বিকল্প বলতে আমরা যেসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত, আমাদের দেশের তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে দেওয়া হচ্ছে— সেগুলোর সঙ্গে নেগোসিয়েশন করা হলে আরও কম দামে আমাদের দেশ টিকা পেতে পারতো।’

‘এখনো সুযোগ আছে বলে আমরা সরকারকে বিকল্প উৎস খোঁজার জন্য আহবান জানাচ্ছি’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের ও বেক্সিমকো প্রধান নির্বাহীর বিভিন্ন ধরনের বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জি টু জি চুক্তি হয়েছে বলে সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছে। আবার বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সরকারের সঙ্গে নয়, চুক্তি হয়েছে বেক্সিমকোর সঙ্গে। গতকাল তড়িঘড়ি করে করোনাভাইরাসের টিকা কেনার জন্য প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানেও রাখা হয়েছে বিশাল দুর্নীতির খাত।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘ভ্যাকসিন ক্রয় করতে গিয়ে সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে (বেক্সিমকো) চুক্তি করায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এর মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রতিটি ডোজের দাম প্রায় দ্বিগুণ পড়বে। যদি কয়েক কোটি ভ্যাকসিন আমদানিও হয় তা সাধারণ মানুষ আদৌ সে ভ্যাকসিন পাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাওয়া জনগণের অধিকার। এই অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত না হয় সেজন্য বিএনপি প্রথম থেকে এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে সরবারহের দাবি জানিয়ে আসছে। জনগণ যাতে এই ভ্যাকসিন সঠিকভাবে পায় সেটা অবশ্যই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।’

ভ্যাকসিন বিতরণের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রণীত গাইড লাইনের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওই গাইড লাইন অনুযায়ী যাদের ভ্যাকসিন পাওয়ার অগ্রাধিকার রয়েছে তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার মাধ্যমে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিবর্তে অন্যদেরকে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে সরকারের প্রণীত নীতিমালায়। দেশের ৬০ বছরের অধিক বয়সী জনগোষ্ঠী, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠী, প্রাধিকার প্রাপ্ত জনগোষ্ঠী, সম্মুখ সারির করোনা যোদ্ধারা বঞ্চিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে— যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন-উর রশীদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন