বিজ্ঞাপন

ভোটযুদ্ধের অপেক্ষায় প্রস্তুত চট্টগ্রাম সিটি

January 26, 2021 | 10:55 pm

রমেন দাশ গুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সকাল হলেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন। সব প্রস্তুতি শেষ করে এখন ভোটের অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং প্রশাসন। টানা ২১ দিনের প্রচারণা শেষ করে অবশেষে হারজিতের লড়াইয়ে নামছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা, যে নির্বাচনটি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ১০ মাস পিছিয়ে গেছে। প্রথমবারের মতো সরাসরি রাজনৈতিক মনোনয়নে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই নির্বাচন। একইসঙ্গে প্রথমবারের মতো পুরো নির্বাচনও হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে।

বিজ্ঞাপন

করোনাকাল, দলীয় প্রতীকে লড়াই, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’দের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ভোটের দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা না করা— সব মিলিয়ে স্বাভাবিকভাবেই এ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে ভিন্নতর আলোচনা, কৌতূহল আছেই। কেমন হবে ভোট— উৎসাহ আর সংশয় নিয়ে অপেক্ষা চট্টগ্রাম নগরবাসীর, যার জবাব মিলবে বুধবার (২৭ জানুয়ারি)।

বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। শেষ হবে বিকেল ৪টায়। নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামে নির্বাচন কমিশনের স্থাপিত অস্থায়ী কেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষণা করবেন রিটার্নিং অফিসার।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। চট্টগ্রাম নগরীকে নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করা হয়েছে, যেন অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার সুযোগ না থাকে। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে, নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে— সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে একটি সুন্দর নির্বাচন হবে।’

মেয়র পদে মূল লড়াই নৌকা-ধানের শীষে

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে মোট সাত জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন— আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর, মোমবাতি প্রতীকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাতি প্রতীকে খোকন চৌধুরী, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী ও ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন।

তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী এই নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের রেজাউল এবং বিএনপির শাহাদাতের মধ্যে মূল লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। গত ৮ জানুয়ারি থেকে প্রচারণা শুরু হয়। জোর প্রচারণা চালিয়েছেন রেজাউল ও শাহাদাত। প্রচারণার মাঠে বাকি প্রার্থীরা তেমন কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

২ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হচ্ছে না

চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ হলেও সাধারণ কাউন্সিলর পদে দু’টি ওয়ার্ডে নির্বাচন হচ্ছে না। এর মধ্যে ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত হারুনুর রশীদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলায়মান সেলিম সম্প্রতি মারা গেছেন। এর ফলে ওই ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলিয়ে ভোটের মাঠে লড়ছেন ২২৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। এর মধ্যে ৩৯ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ১৬৯ জন। বাকি দুই ওয়ার্ডে ওই পদে নির্বাচন হচ্ছে না। সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন ৫৭ জন।

‘বিদ্রোহী প্রার্থী’তে উত্তাপ

তবে এবার ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়িয়েছেন তারা, যারা আওয়ামী লীগের সমর্থন না পেয়ে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। চট্টগ্রাম নগরীর ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে এবার প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর পদে ৫৫ জনকে সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগ। ২০১৫ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জিতে আসা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ১৯ জন এবার সমর্থন পাননি। তাদের মধ্যে ১৮ জনই এবার ‘বিদ্রোহী’ হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এছাড়া পাঁচটি ওয়ার্ড ছাড়া প্রত্যেক ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত অথবা পদ-পদবীতে থাকা তিন-চার জন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে গতবারের যেসব কাউন্সিলর নির্বাচন করছেন তারা হলেন— ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে গাজী মো. তৌফিক আজিজ, ২ নম্বর জালালাবাদে শাহেদ ইকবাল বাবু, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে জহুরুল আলম, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলীতে মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, ১২ নম্বর সরাইপাড়ায় সাবের আহম্মদ, ১৩ নম্বর পাহাড়তলীতে মোহাম্মদ হোসেন হিরণ, ১৪ নম্বর লালখানবাজারে এ এফ কবির মানিক, ২৫ নম্বর রামপুরে এস এম এরশাদ উল্লাহ, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদে এইচ এম সোহেল, ২৮ নম্বর পাঠানটুলীতে আব্দুল কাদের, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডে মাজহারুল ইসলাম, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজারে হাসান মুরাদ ও ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গায় জয়নাল আবেদিন।

২০১৫ সালে জয়ী হওয়া সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলদের মধ্যে যারা বাদ পড়েছেন তারা হলেন— আবিদা আজাদ, আনজুমান আরা বেগম ও ফারহানা জাবেদ। এছাড়া জেসমিন পারভিন ও ফেরদৌসি আকবরকে প্রথমে বাদ দেওয়া হলেও শেষ মুহূর্তে এসে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তাদের সমর্থন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ। বাকি তিন জনও আছেন ভোটের মাঠে।

১৯ লাখ ভোটার, ৭৩৫ ভোটকেন্দ্রের অর্ধেকের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ভোটারের সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন, নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন।

নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৩৫টি। ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৮৬টি। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র আছে দুইটি। অস্থায়ী ভোটকক্ষ আছে ৭৬৪টি।

ভোটগ্রহণের জন্য ৭৩৫ প্রিজাইডিং, ১৪৭০ সহকারী প্রিজাইডিং ও ২৯৪০ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। সংঘাতের আশঙ্কায় পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন ৪১৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৮ হাজার সদস্য

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রসহ সার্বিক নিরাপত্তায় যুক্ত থাকছেন পুলিশ-র‌্যাব-আনসার-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১৮ হাজার সদস্য।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, নির্বাচনে পুলিশের ৭ হাজার ৭৭২ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ২৫ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ৪১টি দল আছে। এছাড়া মোবাইল টিম থাকছে ৪১০টি। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে ১৪০টি দল। ভোটে দায়িত্ব পালন করবে প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাব ও পুলিশের একটি করে টিম। আনসারের প্রায় তিন হাজার আটশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন এই নির্বাচনে। এর মধ্যে ভোটের দিন দায়িত্বে থাকবেন ৪১ ওয়ার্ডে ৪১ জন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ২০ জন।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আট জন পুলিশ ও ১০ জন আনসার সদস্য মিলিয়ে ১৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন। সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ সদস্য থাকবেন ছয় জন, আনসার ১০ জন।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম

ভোটের দিন থাকছে না সাধারণ ছুটি

এবার প্রথমবারের মতো সাধারণ ছুটি ঘোষণা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার একটি সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

ভোটের দিন সাধারণ ছুটি না থাকায় ভোটার উপস্থিতি কম হবে কি না— জানতে চাইলে হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এর আগে অনেকগুলো নির্বাচন হয়েছে এভাবে। ঢাকায় অনেকগুলো উপনির্বাচন, দেশে উপজেলা ও অনেকগুলো পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে যে সিস্টেমে হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটির ভোটও সেটাকে অনুসরণ করে হচ্ছে। সাধারণ ছুটি সেখানেও ছিল না, সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি ছিল। আশা করি এখানেও সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি থাকবে।’

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রে এনআইডি নিয়ে আসা বাধ্যতামূলক নয়। সিএমপির এনআইডি নিয়ে সিদ্ধান্তে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না— জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বহিরাগত ঠেকানোর একটা পথ হচ্ছে এনআইডি কার্ড। একজন ভোটারকে শনাক্ত করা যাবে তার এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে। এনআইডি কার্ড যার কাছে থাকবে, তিনি এখানকার সম্মানিত ভোটার। তবে বয়স্ক নারী কিংবা বৃদ্ধ লোককে আমরা এ জন্য আটকাব না। আপনারা জানেন, নির্বাচনে সাধারণত কারা শক্তি প্রদর্শন করে থাকে। তাদের জন্য এ বার্তা।’

ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে ভোটের দিন কর্মস্থলে যাওয়া লোকজনকেও এনআইডি কার্ড সঙ্গে রাখার অনুরোধ করেন সিএমপি কমিশনার।

যানবাহন চলাচল বন্ধ

সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম নগরীতে জরুরি সেবার বাইরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের কমিশনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সিএমপি এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ২৭ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত নগরীতে যেকোনো ধরনের ট্রাক, পিকআপ, অটোরিকশা, ইজিবাইক, মাইক্রোবাস, কার ও জিপ চলাচল বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি সোমবার মধ্যরাত থেকে ২৮ জানুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনো ধরনের মোটরসাইকেল নগরীতে চলাচল করতে পারবে না।

তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতিসাপেক্ষে প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনি এজেন্ট এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম শিথিল থাকবে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ কাজে ব্যবহৃত যানবাহনের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে না বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন

রেজাউলের আশা, শাহাদাতের শঙ্কা

মেয়র পদে মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির শাহাদাত হোসেনের নির্বাচন নিয়ে চিন্তা ভিন্ন। রেজাউলে নির্বাচনের পরিবেশ দেখে আশাবাদী। তিনি মনে করছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটে এমন কোনো কর্মকাণ্ড আমি এখনো দেখিনি। বরং বিএনপি একের পর এক ভিত্তিহীন অভিযোগ করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। তারা সন্ত্রাসী জড়ো করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে পারে। আমি প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানাই। ইনশল্লাহ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এবং আমি জেতার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

অন্যদিকে শাহাদাত হোসেন মনে করেন, সরকার একতরফা ভোট ডাকাতির একটি নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। একতরফা একটা ভোট ডাকাতির নির্বাচনের দিকে সরকার আবার এগিয়ে যাচ্ছে। ১২ বছরের মধ্যে তাদের ইতিহাসে একটি রেকর্ডও নেই সুষ্ঠু নির্বাচন করার। সম্ভবত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনটিও সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। হয়তো ভোট ডাকাতির আরেকটি নির্বাচন আমরা দেখতে পাব।’

মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভোট দেবেন ‍বুধবার সকাল ৯টায় নগরীর বহদ্দারহাটে এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। আর শাহাদাত ভোট দেবেন বাকলিয়ায় বিএড কলেজ কেন্দ্রে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দীন হাতি প্রতীক নিয়ে বিএনপি সমর্থিত কমলালেবু প্রতীকের প্রার্থী এম মনজুর আলমকে পরাজিত করেন। ভোট শুরুর তিন ঘণ্টার মধ্যে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িছিলেন বিএনপির প্রার্থী মনজুর আলম। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন চার লাখ ৭৫ হাজার ৩৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। মনজুর আলম পান তিন লাখ ৪৮ হাজার ৩৭ ভোট।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করে গেছেন জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির মীর মো. নাছির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির এম মনজুর আলম এবং আওয়ামী লীগের আ জ ম নাছির উদ্দীন। এদের মধ্যে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। পরপর তিন দফা নির্বাচিত হয়ে তিনি ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন চসিকের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন