January 27, 2021 | 4:19 pm
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন প্রয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো দেশে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্স ও একজন চিকিৎসকসহ মোট পাঁচ জন প্রথম এই ভ্যাকসিন পেয়েছেন।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত থেকে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে তিনি ওই পাঁচ জনের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম দেখেন।
প্রথম ধাপের যে পাঁচ জন ভ্যাকসিন পেয়েছেন তারা হলেন— কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা, একই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ।
দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্তের ৩২৭ দিন পরে প্রথম ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হলো। এরপর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-মৈত্রী জেনারেল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা হবে।
এর আগে, ভ্যাকসিন প্রয়োগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলা করতে শুরু থেকেই আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলে রেখেছিলাম, কোথাও ভ্যাকসিন তৈরি হলে যেন আমরা আগে বুকিং দিয়ে রাখতে পারি। যে ভ্যাকসিন আগে বাজারে আসবে, সেটিই আমরা নেব— সেভাবেই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনা ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করল। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট সেই ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলো। এর মধ্যে সিরামের সঙ্গে যোগাযোগ করল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। আমি বলেছিলাম, যতগুলো ডোজ ভ্যাকসিন কেনা যায়, আমরা নিয়ে নেব। সেভাবেই সিরাম ও বেক্সিমকোকে সঙ্গে নিয়ে সরকার ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করেছে। সেই সূত্রেই এখন ভ্যাকসিন দেশে এসেছে।
অনুষ্ঠানে কুর্মিটোলা প্রান্তে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এরই মধ্যে আমাদের দেশে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন এসেছে। ভারত সরকার দুঃসময়ে আরও ২০ লাখ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। এ জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানাই। এ পর্যন্ত যত ভ্যাকসিন উৎপাদন হয়েছে এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন সবচেয়ে নিরাপদ।
তিনি আরও বলেন, আমরা সুষ্ঠুভাবে টিকা দেওয়ার সব ব্যবস্থা নিয়েছি। এ জন্য ৪২ হাজার নেতাকর্মী কাজ করছে। টিকা গ্রহীতাদের নিবন্ধনের জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি অ্যাপ অনুমোদন করা হয়েছে।
এর আগে, স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান জানান, এই পাঁচ হাসপাতালে ৪০০ থেকে ৫০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়েই দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে, তাদের মধ্যে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কিনা সেটা দেখা হবে।
সারাবাংলা/এসবি/এএম/টিআর