বিজ্ঞাপন

সারাদেশে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু আজ

February 7, 2021 | 12:55 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য রাজধানীর ৫০টি হাসপাতাল ও রাজধানীর বাইরে ৯৫৫টি হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য কাজ করবে দুই হাজার চারশ টিম। তবে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি টিম। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ভ্যাকসিন নিতে নিবন্ধন হয়েছে ৩ লাখের বেশি

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য তিন লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন নিবন্ধন করেছেন। যারা ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন, তারা সবাই শনিবার রাতের মধ্যে এসএমএস পেয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

কর্মসূচি শুরু সকাল ৯টা থেকে

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাতে ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টি টিম কাজ করবে। সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে দুই হাজার ১৯৬টি টিম কাজ করবে। মোট এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে মোট দুই হাজার চারশ টিম কাজ করবে। এছাড়াও ভ্যাকসিন বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য টিম প্রস্তুত রয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি। তবে আপাতত ২ হাজার ৪০০ জনকে দিয়ে রোববারের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। তবে এদিন যেহেতু ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হচ্ছে, তাই এই সময় কিছুটা শিথিল রাখা হবে।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে ডিজি হেলথ আরও বলেন, আজ ঢাকার অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখা হয়েছে। সবগুলোতেই মোটামুটি প্রস্তুতি ভালো। আমরা আশা করছি, কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আমরা ভ্যাকসিনর কাজ শুরু করতে পারব। তবে কিছু কিছু ছোট কেন্দ্র, বিশেষত মাতৃসদনের মতো কেন্দ্রগুলোতে খানিকটা প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। আশা করছি এগুলোর প্রস্তুতিও সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ হবে। রাতে আবার সব কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব। তখন যেখানে যা ঘাটতি বা সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।

ভ্যাকসিন নিচ্ছেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-সচিবরা

সারাদেশে একযোগে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির শুরুর দিনেই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবরা ভ্যাকসিন নেবেন। এই তালিকায় রয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনও।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এদিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অন্যদিকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। আর গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এছাড়া এদিন গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালেই ভ্যাকসিন নেবেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। অন্যদিকে চট্টগ্রামে ভ্যাকসিন নেবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভ্যাকসিন নেবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ভ্যাকসিন। রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, বিভিন্ন জেলায় এবং বিভিন্ন জায়গায় সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় বিশিষ্ট নাগরিক যারা আছেন, তারা নিজ নিজ এলাকায় ভ্যাকসিন নেবেন এবং ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমে সহায়তা করবেন। জনগণকে ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করতেই জনপ্রতিনিধিসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।

এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ওই দিন ২৬ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।

পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৫৪১ জনকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত দেশে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৫৬৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন নেওয়া এই ৫৬৭ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন