বিজ্ঞাপন

সরকার আগুন নিয়ে খেলছে: মোশাররফ

February 14, 2021 | 6:24 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জিয়াকে ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কোনোক্রমে লেখা সম্ভব হবে না। এদেশে ২৫ মার্চের আগে স্বাধিকারের আন্দোলন হয়েছে, স্বায়ত্বশাসনের আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। সেই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের ষড়যন্ত্র করে সরকার আগুন নিয়ে খেলছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই খেতাব কেউ দেয় নাই। জিয়াউর রহমানসহ যারা এই খেতাব পেয়েছেন তারা প্রত্যেকে অর্জন করেছেন। এই খেতাবের ওপরে হাত দেওয়ার কোনো অধিকার কারও নেই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই সরকার সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে এদেশের জনগণের ঘাড়ের ওপর চেপে আছে। তাদের পক্ষে নৈতিক কথা বলা সম্ভব নয়। মিথ্যার ওপরে প্রতিষ্ঠিত, মিথ্যা তাদেরকে বলতে হবে, তারা অন্যায়ের ওপরে প্রতিষ্ঠিত তাদের অন্যায়ই করতে হবে।’

মোশাররফ বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে সুশাসনের অভাব, গণতন্ত্র নাই, অর্থনীতিতে লুটপাট, ব্যাংকগুলো লুটপাট হচ্ছে, রিজার্ভ ডাকাতি হচ্ছে, শেয়ারবাজার লুট হচ্ছে। একটি জায়গাও নেই যেখানে তারা কোনো ভালো কাজ করেছে এবং ন্যায়ের কাজ করেছে, কোনো সত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের এই দুর্গন্ধ বাংলাদেশে শুধু নয়, বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আল-জাজিরা একটা রিপোর্ট দিয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে নাকচ করে দিলেন। যদি ওই রিপোর্টের বিষয়বস্তুগুলো মিথ্যা হয় তাহলে সরকারের দায়িত্ব ছিল এই সম্বন্ধে প্রতিবাদ করা। কিন্তু তারা বিষয়বস্তুর মধ্যে যান নাই শুধু রাজনৈতিকভাবে নাকচ করে দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

‘এটাই কী শেষ। দি ইকোনোমিস্ট আরও এক স্টেপ সামনে গিয়ে যে লেখা লিখেছে কৈ এখন পর্যন্ত সরকার থেকে প্রতিবাদ করার সাহস পায় নাই। ডয়েচে ভেলে এই সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী সাক্ষাৎকারে একটি প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন নাই। কারণ তার কাছে জবাব নাই। অতত্রব এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য অর্জনের পথে সাহসের সঙ্গে পথ চলতে হবে। অনেকে বলেন- হাসিনা একটার পর একটা আইটেম দেয় আমাদেরকে ব্যস্ত রাখার জন্য। আমাদের এখন সব আইটেম নিয়ে ব্যস্ত থাকার দরকার নাই, অনেক আইটেমে নিয়ে মাথা ঘামানোরও দরকার নাই। ওই হীরক রাজার দেশের যে একটা শ্লোগান- রশি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। আমাদের ওই জায়গা থাকতে হবে।’

ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি তো সাক্ষী আছি। জেড ফোর্স যুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। সবচাইতে বেশি সাহসিকতা পদক অর্জন করেছে, সবচাইতে বেশি জীবন দিয়েছে জেড ফোর্সের সৈনিকেরা। অথচ তার কমান্ডারের একটি খেতাব এখন ছিনিয়ে নেবার জন্যে কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’

‘বাংলাদেশের রাজাকার শব্দটি অত্যন্ত ঘৃণিত। আরেক শব্দ ঘৃণিত হওয়ার পথে। ইতিমধ্যে ঘৃণিত হয়ে গেছে— যার নাম জামুকা। নব্য রাজাকারের দল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করতে চায়। যুদ্ধ কত ভয়াবহ এই জামুকা-ফামুকা কল্পনাও করতে পারে না’— বলেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘আমি শহীদ জিয়াউর রহমানের পক্ষে। আমার মতে জিয়াউর রহমান বীর পুরুষদের একজন, খুনিদের বিপক্ষে। তুমি কে? এই খেতাব কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেবার তুমি কে? তুমি তো যুদ্ধ করনাই। বুকের রক্ত ঢেলে দিতে যারা রণাঙ্গনে ছিল, তারা সেই বীর উত্তম, বীর প্রতীক, বীর বিক্রম। তুমি কে- একথা আপনাদের সকলকে এখন বেশি বেশি করে বলতে হবে। আজ থেকে আমরা শপথ করি- আমরা জিজ্ঞাসা করব, তুমি কে?’

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আালাল, শিরিন সুলতানা, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, গণফোরামের মোশতাক আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের মকসুদ আলী মঙ্গোলিয়া, আবদুল খালেক, ফরিদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের কালাম ফয়েজী, রায়হান আল মাহমুদ, মাজহারুল ইসলাম, সালেহা আখতার প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন