বিজ্ঞাপন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জনসহ ১১ কর্মকর্তাকে সতর্ক করলেন আদালত

February 18, 2021 | 1:58 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ধর্ষণের শিকার শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার তিনটি প্রতিবেদন ও একটি ছাড়পত্রে অসামঞ্জস্যতার ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে হাজির হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ও এসপিসহ ১২ কর্মকর্তাকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট। এরপর তাদেরকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১১ মার্চ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহপরান চৌধুরী।

আদালতে হাজির হওয়া ১১ কর্মকর্তা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ, পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিফুল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. আরিফুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. একরামুল রেজা, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য ডা. ফাহমিদা আক্তার, ডা. তোফায়েল হক, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন এবং নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মো. শাহরিয়ার, ডা. তাসনিম তামান্না ও ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জনসহ ১২ কর্মকর্তা হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। পরে আদালত তাদেরকে সতর্ক করে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১১ মার্চ দিন ঠিক করেছেন আদালত।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি তাদের হাইকোর্টে তলব করা হয়। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আইজিকে এ ঘটনা তদন্ত করে একমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ধর্ষণ মামলার কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার পিতা নাসিরনগর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, ৪ সেপ্টেম্বর তার সাত বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মামলায় আসামির বয়স উল্লেখ করা হয় ১৫ বছর।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে পরদিন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ৮ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় এ বিষয়ে ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি ডাক্তারি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরইমধ্যে আসামি হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করে। গত বছর ৩ নভেম্বর এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এদিন আসামির বয়স প্রমাণের জন্য তার জন্মসনদ দাখিল করা হয়। জন্মসনদ অনুযায়ী তার বয়স ছিল ১০ বছর। এ অবস্থায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মামলার সিডি এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

এরইমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আইনের ৯(১) ধারায় অভিযোগপত্র দেয়। পরবর্তীতে তদন্ত কর্মকর্তা ও নাসিরনগর ওসি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। এ সময় জেলা সদর হাসপাতাল থেকে ১২ সেপ্টেম্বরের দেওয়া একটি ডাক্তারি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এবারের প্রতিবেদনে অসংগতি দেখার পর আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা জেলা সদর হাসপাতালের আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ অবস্থায় আজ জেলার সিভিল সার্জন, এসপি, নাগিরনগর থানার ওসি, তদন্ত কর্মকর্তাসগ সংশ্লিস্ট চিকিৎসকদের তলব করে হাইকোর্ট।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এসএসএ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন