March 20, 2018 | 6:54 pm
এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: সরকারি কাজে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি কমাতে এবং সরকারি কাজে আরো স্বচ্ছতা আনতে আরেকটি সরকারি কর্মকমিশন স্থাপনের প্রস্তাব করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
পাশাপাশি সরকারি কাজে দুর্নীতি কমাতে ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মতে, আচরণ বিধিমালা মেনে চললে ৭৫ শতাংশ দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের শুদ্ধাচার শাখার একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, দুর্নীতি প্রতিরোধে গত মাসে সচিবালয়ে ‘সরকারি কর্মপ্রক্রিয়ায় শুদ্ধাচার চর্চা’ শীর্ষক একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রধান অতিথি, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ও দুদকের কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বিশেষ অতিথি ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বৈঠকটির সভাপতিত্ব করেন। ওই বৈঠকেই এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে সাতটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে-
– সরকারি কাজে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় সচিবালয় নির্দেশমালা এবং ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালা মেনে চলা;
– দুর্নীতি রোধে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন;
– মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তদারকি;
– প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারিদের শুদ্ধাচার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর কার্যক্রম জোরদার;
– সরকারি দপ্তরে দুর্নীতির কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া গেলে তা মৌখিক ও লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবকে অবহিত করা;
– দুর্নীতি রোধে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুসরণ করা; এবং
– সরকারি কাজে কর্মচারি নিয়োগের জন্য আরেকটি সরকারি কর্মকমিশন স্থাপন। যার উদ্যোগ নেওয়া হবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেই।
বৈঠক সূত্র সারাবাংলাকে জানায়, ‘সরকারি কর্মপ্রক্রিয়ায় শুদ্ধাচার চর্চা’ শীর্ষক ওই বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সরকারি কাজে স্বচ্ছতা আনার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, সরকারি কাজের তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে এর আগে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অনুসরণ করা হত। এখন তথ্য আইনের মাধ্যমে নাগরিকরা সরকারি কাজের তথ্য পাওয়ার অধিকার রাখে। এতে আগের থেকে এখন আরো বেশি স্বচ্ছতা এসেছে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে দুর্নীতি প্রতিরোধের বিকল্প নেই বলেও মত দেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সরকারি কাজে অনেক ক্ষেত্রেই সচিবালয় নির্দেশমালা মানা হচ্ছে না এমন মত দিয়ে বলেন, সচিবালয় নির্দেশমালা মানা হলে ৭৫ শতাংশ দুর্নীতি কমানো সম্ভব।
সরকারি কাজে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশি অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় এমন মত দিয়ে সভায় অংশগ্রহণকারীরা কর্মচারী নিয়োগের জন্য পৃথক একটি কর্মকমিশন গঠনের ওপর জোর দেন।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমএম