বিজ্ঞাপন

আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না : প্রধানমন্ত্রী

March 21, 2018 | 1:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম ব্যুরো

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অন্তর্ভক্তিকে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭-ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, সাড়ে ৭ কোটি জনগণকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। তার সেদিনের সেই ঘোষণা আজ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। এসময় উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভবিষ্যতের সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২১ মার্চ) চট্টগ্রামে নেভাল একাডেমিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ডের ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছি। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য এক যুগান্তকারী মাইলফলক। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে আমরা আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবো। এজন্য উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

এসময় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী-২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের অগ্রগতির পথে সরকারের কর্মপ্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৯ বছরে দেশে যত উন্নয়ন হয়েছে তার ৯০ ভাগ আমরা নিজেদের টাকায় করেছি। দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় বেড়ে ১ হাজার ৬১০ ডলার হয়েছে। বর্তমানে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। থ্রি-জি থেকে ফোর-জি যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার করেছি। ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। মানুষের গড় আয়ূ বেড়ে হয়েছে ৭২ বছর। মেট্রোরেল, পায়রা বন্দর, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি।

নৌবাহিনীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবীত হয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পরিচিতি এখন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অনেক বেড়েছে। নৌবাহিনীর জাহাজ বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে এবং নিজেরাও সফলভাবে মহড়ার আয়োজন করছে। উপমহাদেশে শুধুমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় সফলভাবে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারাবিশ্বে উজ্জল করেছে।

মিয়ানমারের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে নৌবাহিনীর ভূমিকারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএন ডকইয়ার্ড সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজগুলো দীর্ঘকাল ধরে অপারেশনে থাকছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে নেভাল একাডেমিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আবক্ষ প্রতিকৃতি ভাস্কর্য এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন।

এর আগে বুধবার (২১ মার্চ) সকাল পৌনে ১১টায় হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ নৌঘাঁটিতে পৌঁছে প্রথমেই নেভাল একাডেমির নির্ধারিত কর্মসূচিতে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।এসময় নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য, সেনা ও বিমানবাহিনী প্রধান এবং সামরিক-বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আছেন।

নৌবাহিনীর কর্মসূচি শেষে বিকেল সাড়ে তিনটায় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় যাবেন। সেখানে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/আরডি/এমএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন