বিজ্ঞাপন

‘বইয়ের আবেদন মুছে যাবে না, তবু ডিভাইসে হলেও পড়ুন’

March 18, 2021 | 5:51 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ডিজিটাল ডিভাইস বা যন্ত্রে বই পড়ার সুযোগ থাকলেও ছাপা বই হাতে নিয়ে পড়েই বেশি আনন্দ পান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরও ছাপা বই পড়ার সুযোগ না পেলে প্রয়োজনে ডিজিটাল ডিভাইসেই বই পড়তে সবাইকে উৎসাহিত করেছেন তিনি। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের নাগরিকরা যেন বই পড়তে আগ্রহী হয়, তিনি সেটি নিশ্চিত করতে বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বই পড়ার অভ্যাসটা থাকলে কিন্তু সময় কাটাতেও কষ্ট হয় না। এখন অবশ্য মোবাইল ফোন, ট্যাব— এগুলোর ব্যবহার বেড়েছে। এগুলোতেও কিন্তু বই পড়ার সুযোগ আছে। তাই এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমেও বই পড়তে পারেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে বলব— একটি বই হাতে নিয়ে, বইয়ের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে পড়ার আনন্দটাই আলাদা। এই আনন্দ যন্ত্রের মধ্যে পাওয়া যায় না। তবে যন্ত্র বহন করতে সুবিধা বেশি। তারপরও বলব, বইয়ের আবেদনটা কিন্তু কোনোদিন মুছে যাবে না। তারপরও যেভাবেই হোক, বই পড়ুন।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বইমেলা উদ্বোধনের আগে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বাংলা একাডেমি প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বিজয়ী ১০ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

আরও পড়ুন- শঙ্কা ছাপিয়ে শুরু প্রাণের বইমেলা

বিজ্ঞাপন

সাহিত্য, বিশেষ করে অনুবাদ সাহিত্যের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিজের মায়ের ভাষাকে মর্যাদা দেওয়াটা যেমন দরকার, আবার অন্য ভাষাকে জানাও দরকার। সে কারণে অনুবাদ একান্তভাবে দরকার। বাংলা একাডেমিকে সবসময় অনুরোধ করেছি, অন্যান্য দেশের সাহিত্য যেন আমরা পড়তে পারি। কারণ সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে অন্যদের জীবনযাত্রা, তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রাজনীতি করি। বক্তৃতা দিয়ে অনেক কথাই বলি। সেই কথাগুলো মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। কিন্তু তার থেকেও বেশি মন ছুঁয়ে যায় সাহিত্য। সাহিত্যের ভেতর দিয়ে কোনো বার্তা যদি আমরা মানুষের হৃদয়ে পৌঁছাতে পারি, সেটার স্থায়িত্ব অনেক বেশি হয়। সাহিত্যের আবেদনটাও বেশি। দ্বিতীয়ত, সাহিত্যের মধ্য দিয়ে একটি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি জানারও সুযোগ হয়। সাহিত্যের মধ্য দিয়ে ইতিহাস-সংস্কৃতি— সবকিছুই আমরা জানতে পারি। এজন্য ভাষা নিয়ে গবেষণা যেমন প্রয়োজন, তেমনি অনুবাদও প্রয়োজন।

মেলায় ঘুরে ঘুরে বই দেখা ও কেনার মধ্যে যে আনন্দ, সেই আনন্দ থেকে যেন পাঠকরা বঞ্চিত না হয়, সে কারণেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতেও বইমেলা আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তবে বইমেলায় যারা অংশ নিচ্ছেন এবং ক্রেতা-দর্শনার্থী যারা আসবেন, তাদের সবাইকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নতুন প্রজন্মকে বই পড়ায় উৎসাহিত করতে সবাইকে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে নিজের জীবনের উদাহরণও তিনি তুলে ধরেন। বলেন, শিশুদের বই পড়ে শোনানোর অভ্যাস তাদের বাড়িতে সবসময়ই ছিল এবং এখনো রয়েছে। সে কারণেই তার পরিবারের সবার মধ্যেই বই পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বই পড়তে হবে, বই দেখতে হবে বা বই হাতে নিতে হবে। সবসময় যে ছোট্ট একটা লাইব্রেরি তাদের (শিশুদের) জন্য করে রাখি, যেন তারা অন্তত বই পড়ে বা দেখে। আপনারা সবাই এ বিষয়ে একটু যত্নবান হবেন— সেটাই আমরা চাই।

‘আসুন সবাই মিলে আমরা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলি এবং আমাদের আগামী প্রজন্মকেও বই পড়ায় উৎসাহিত করি,’— এই আহ্বান রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা শুরু থেকে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম বলেই করোনাভাইরাস আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু এখন আবার এর দ্বিতীয় ওয়েভ, কোথাও কোথাও তৃতীয় ওয়েভ শুরু হয়ে গেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ভাইরাস আরও মারাত্মক আকারে দেখা দিচ্ছে। তবে এর মধ্যেই আমরা করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে যাচ্ছি। ৪৫ লাখের বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গেছে। এই কর্মসূচি চলতে থাকবে। তারপরও ভ্যাকসিন নিয়েই মনে করবেন না যে একেবারে সুরক্ষিত হয়ে গেছেন।

বইমেলায় যারা আসবেন, তাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিজেকে সুরক্ষিত করা মানে অন্যকে সুরক্ষিত করা। আমি বারবার একথাটা বলে যাচ্ছি, আশা করি আপনারা সবাই এই বিষয়টিতে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। বইমেলায় যাবেন। বই দেখবেন, বই ধরবেনও। কিন্তু তারপরও নিজের স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে নিজেকে সুরক্ষিত করবেন। এটুকুই আমার চাওয়া।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন