বিজ্ঞাপন

নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে যাচ্ছে: ফখরুল

March 25, 2021 | 4:56 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে কেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরেও কী কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে চলে যাচ্ছে? কারণ কী? একটাই কারণ, এই সময়ে তাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে।’

পাকিস্তান আমলে তৈরি শত্রু সম্পত্তি আইন সরকার কেন বাতিল করছে না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগে মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে চায়, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত শত্রু সম্পত্তি আইন তারা বাতিল করেনি, তাদের যে ন্যায্য অধিকারগুলো রয়েছে তা দেয়নি।’

বিজ্ঞাপন

‘বিএনপির শাসনামলে ২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের দেশ ছাড়ার মাত্রা বেশি ছিল’— আওয়ামী লীগের এমন বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি যে বক্তব্য দেবো, যেটা আমার দলীয় বক্তব্য হবে- তাই না। আপনারা যে ইনভেস্টেগেটিভ জার্নালিজম করছেন, সেখান থেকে তো আপনারা দেখতে পারবেন। প্রত্যেকটা রিপোর্টে আসছে, এই সময়ে বেশি বেড়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভারতে যাওয়া।’

সেটা ২০০১ সালের থেকেও বেশি কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘অনেক বেশি, অনেক বেশি..। নিঃসন্দেহে। এটা আমার কথা না। আমেরিকাই তো পারসেন্টেজ বলে দিয়েছে। তাদের পত্র-পত্রিকায় আসছে।’

সুনামগঞ্জের শাল্লায় উপজেলায় নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বছর দুয়েক আগে ঠাকুরগাঁওয়ে একজন প্রভাবশালী এমপি কয়েক’শ একর জমি দখল করেছিলেন। সেটার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ মিছিল করেছে, মানববন্ধন করেছে, কিন্তু কোনো সুরাহা বা সমাধান পায়নি। ফরিদপুরেও এরকম ঘটনা। এবার শাল্লার ঘটনার নেতৃত্বে দিয়েছে যুব লীগের নেতা। অথচ ওবায়দুল কাদের বলছেন, এখানে বিএনপি নেতৃত্ব দিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম গন্ধ নেই এখানে। এটা হচ্ছে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, মানুষকে ভুল বোঝানো, মানুষকে ভুল রাস্তায় নিয়ে যাওয়া। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কখনোই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষের শক্তি ছিল না, বা এদেশে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির পক্ষে তারা কখনোই ছিল না।’

শাল্লায় ঘটনা সরেজমিনে পরিদর্শন করে আসা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি-ঘরে, উপাসনালয়ে অবর্ণনীয় ধ্বংস লীলা দেখতে পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তরা ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় অকপটে বলেছেন, ঘটনার দিন মাইকে প্রচার করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা স্বাধীন মিয়ার নেতৃত্বে তার অনুসারী শত শত মানুষ ওই গ্রামে উপস্থিত হয়ে প্রায় ৬০/৭০টি বাড়ি লুটপাট করে। বাড়িঘরের জানালা, দরজা, বেড়া কুপিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে, নারী পুরুষ ও শিশুদের মারধর করে। শিশুদের নিয়ে বাথরুমে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে থাকা মহিলাদের বের করে এনে লাঞ্ছিত করে। আওয়ামী যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, মন্দির-উপাসনালয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।’

গত ২০ মার্চ নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী শাল্লায় গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে একটি প্রতিবেদন দলের কাছে জমা দেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন