বিজ্ঞাপন

কেন পশ্চিমবঙ্গে ৮ দফায় নির্বাচন?

March 29, 2021 | 3:29 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে। এবারই প্রথম আট দফায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, ২০১৬ সালে টানা ৭৭দিন ধরে সাত দফায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু, আট দফায় ধাপে ধাপে ভোট গ্রহণ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনি ইতিহাসে এই প্রথম।

এবার পশ্চিমবঙ্গে ৬৬ দিন ধরে প্রায় সাত কোটি ৩৩ লাখ ভোটার এক লাখ এক হাজার ৯১৬ কেন্দ্রে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবেন। অতীতের কোনো নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে এতো ভোটকেন্দ্র ছিল না। ২০১৬ সালে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৭৭ হাজার ৪১৩।

ভারতের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে প্রতি দফায় আনুমানিক ১২ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলবে। শুধু তাই নয়, এবারই প্রথমবারের মতো দুই দফায় ২৬ এবং ২৯ এপ্রিলে ভোট দেবে কলকাতা। শহর কলকাতার আশেপাশের কিছু অঞ্চল যেমনঃ যাদবপুর, ভাঙড় ইত্যাদি দক্ষিণ ২৪ পরগণার অন্তর্গত হওয়ায় সেখানে ভোটগ্রহণ হবে ১০ এপ্রিল।

বিজ্ঞাপন

কী কারণে এমন নির্বাচন সূচি? নির্বাচনের ওপর এর প্রভাবই বা কেমন হতে পারে তা জানিয়েছেন ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের শবনম সুরিতা। সারাবাংলার পাঠকদের জন্য ওই আলোচনার চুম্বক অংশ তুলে দেওয়া হলো —

প্রথম দফার নির্বাচনে মোতায়েন করা হয়েছে ৭৩২ কোম্পানি সেন্টাল আর্মড পুলিশ ফোর্সেস সদস্য। ভোটারদের মধ্যে সাহস জোগাতে ও তথাকথিত ‘অশান্ত’ অঞ্চলে শান্তির আশ্বাস দিতে রাজ্যজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সদস্য। বলা হচ্ছে, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ করতেই এই পদক্ষেপ।

২০২০ সালের জাতীয় অপরাধ দফতরের প্রতিবেদন এবং তৃণমূলের বিরোধী সমস্ত দলের তরফ থেকে ‘ফিডব্যাক’ নিয়েই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আট দফায় ভোটের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন, জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা।

বিজ্ঞাপন

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গুন্ডামি থেকে শুরু করে আইনহীনতা, অপরাধের বাড়বাড়ন্তের মতো ঘটনা, এমন কি রাজনৈতিক হত্যাকে ঘিরে তাদের কাছে বহু অভিযোগ জমা পড়াতেই আট দফার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, নির্বাচনসূচি এমনভাবে সাজানোর পেছনে নির্বাচন কমিশন বলেছে ধর্মীয় উৎসবের কথাও। নির্বাচনের সময়ে একইসঙ্গে চলবে দোল ও রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ বছর পবিত্র রমজান এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে। অথচ পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোটারদের একটা বড় অংশ যেখানে রয়েছেন যেমনঃ মুর্শিদাবাদ, মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুর সেখানে ভোট চলবে এপ্রিলের ২২ থেকে অর্থাৎ রমজান মাসেই। ফলে যে রাজ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম, সেখানে এমন নির্বাচনসূচি স্থানীয় ভোটার এবং নির্বাচনকর্মীদের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।

এদিকে, নির্বাচনসূচি প্রকাশের পর থেকেই সংবাদ মাধ্যমে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই সূচি কী মোদি আর অমিত শাহ’র পরামর্শে তৈরি করা হয়েছে? যেনো আসাম আর তামিলনাড়ুর ভোট মিটিয়ে তারপর এখানে আসতে পারেন? এতে ওদের (বিজেপি) কোনো সাহায্য হবে না।

অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট এই নির্বাচন সূচির সমালোচনা করলেও তৃণমূলের মতো সরাসরি বিরোধীতায় যায়নি। বিজেপিও এই ইস্যুকে তুলে ধরছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসাবেই। নিরাপত্তা ও করোনাকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকির দোহাই দিচ্ছেন তারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মহামারির মধ্যে যদি পুরোদমে রাজনৈতিক সভা-মিছিল সবই হয়, তবে নির্বাচন নয় কেন? মমতার সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রশ্ন করেছেন অখিলেশ যাদবও।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, তামিলনাড়ুর ২৩৪ আসনে ভোট হবে এক দফায়। সেখানে কি তবে কার্যকর নয় সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাস্থ্যবিধির প্রশ্ন? নাকি নির্বাচন কমিশনের প্রতি মমতার সন্দিহান আচরণ কিছুটা হলেও যৌক্তিক? সব প্রশ্নের জবাব না হলেও কিছুটা আভাস মিলতে পারে আগামী কয়েক সপ্তাহের ভোটের হাওয়া থেকে।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন