বিজ্ঞাপন

শাহাদাতের চাঁদাবাজির মামলার নেপথ্যে যা বললেন আইনজীবী

April 1, 2021 | 8:09 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে ‘বিএনপি নেত্রী’ লুসি খানের চাঁদাবাজির মামলাকে তার রাজনৈতিক ইমেজ ধ্বংসের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ। এ প্রক্রিয়ায় লুসি খান শাহাদাতের রাজনৈতিক শত্রুপক্ষকে সঙ্গে নিয়েছেন বলেও দাবি ওই আইনজীবীর।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাতের আইনজীবী সাজ্জাদ আরও জানিয়েছেন, লুসি খানের কাছ থেকে নিরীহ প্রবাসী দম্পতির পাওনা উদ্ধারে সহযোগিতা করায় শাহাদাতকে রোষানলের শিকার হতে হয়েছে।

গত ২৯ মার্চ দুপুরে নগরীর চকবাজার থানায় শাহাদাত হোসেনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন নগর বিএনপির সাবেক সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ডা. লুসি খান, যিনি জীবনচিত্র ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক। ওই দিন সন্ধ্যায় নগরীর পাঁচলাইশে শাহাদাতের মালিকানাধীন ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, একইদিন বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া দুই মামলায়ও শাহাদাতকে আসামি করা হয়।

চাঁদাবাজির মামলার বিষয়ে কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, ‘লুসি খানের মামলায় তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। শাহাদাত হোসেন, মুজাফফর আহমেদ ও তার স্ত্রী ফাতেমা জোহরা। মামলায় বলা হয়েছে, গত ২০ মার্চ জীবনচিত্র এনজিওর অফিসে গিয়ে মহাসচিব মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে অপহরণ করা হয়েছে এবং এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। মোজাফফর আহমেদ গত ২০ বছর ধরে সৌদি আরবে থাকেন। গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরুর আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এ বছরের ১১ মার্চ থেকে তিনি সৌদিআরবে অবস্থান করছেন। এ সংক্রান্ত সব প্রমাণ আমরা আদালতে দাখিল করেছি।’

‘চকবাজার থানায় দায়ের করা এজাহার অনুযায়ী, মহিউদ্দিন আহমেদ এখনও নিখোঁজ। অথচ গত ২২ মার্চ থেকে তিনি প্রতিদিন লুসি খানের সাথে বাসা থেকে বের হচ্ছেন, শহরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। এ সংক্রান্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজে, ছবি, সিডি আমাদের কাছে আছে। প্রতিটি মামলা দায়েরের আগে ‍পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করে। এরপর প্রাথমিক সত্যতা পেলে মামলা গ্রহণ করে। কিন্তু শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে এই মামলা কিভাবে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই গ্রহণ করা হলো, আমরা চট্টগ্রামবাসীর কাছে সেই প্রশ্ন রাখছি।’

বিজ্ঞাপন

বিরোধী দলের রাজনীতি করলে বাংলাদেশে একজন শিক্ষিত, সজ্জন মানুষের চরিত্রহনন ও রাজনৈতিক হয়রানি করা কতটা সহজ— এ মামলা তার প্রমাণ বলে মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।

শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা কেন— জানতে চাইলে আইনজীবী সাজ্জাদের দাবি, সৌদিপ্রবাসী মুজাফফরের বাড়ি ও শাহাদাতের বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলায়। প্রবাসী মুজাফফরের স্ত্রীর কাছ থেকে লুসি খান গত ৯ মার্চ তিন কোটি টাকার একটি জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেন। কিন্তু ওই মহিলাকে তিনি কোনো টাকা দেননি। পাওনা টাকার জন্য মুজাফফর এবং ফাতেমা জোহরা দ্বারস্থ হন তাদের এলাকার শাহাদাত হোসেনের কাছে।

সাজ্জাদ বলেন, ‘এক টাকাও না দিয়ে অশিক্ষিত ফাতেমা জোহরার কাছ থেকে তিন কোটি টাকার জায়গা ইনিয়ে-বিনিয়ে হাতিয়ে নেন লুসি খান। আর দলিল গ্রহীতা হচ্ছেন মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। শাহাদাত হোসেন মানবীয় গুণাবলীর অধিকারী এবং জনদরদী মানুষ বিধায় লুসি খানকে তিনি বলেন, আপনি তাদের পাওনা দিয়ে দেন। মানবতার সেবায় এ কাজ করে তিনি লুসি খানের রোষানলে পড়েছেন। রাজনৈতিক শত্রুপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শাহাদাত হোসেনের যে ইমেজ তৈরি হয়েছে, সেটা ধ্বংসের জন্য লুসি খান এ কাজ করেছেন এবং পুলিশকে খেলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন।’

কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া দুই মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোতোয়ালি থানার দুই মামলার ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে একটি সার্কিট হাউজের সামনে, আরেকটি নাসিমন ভবনের সামনে। একই লোক একইসময়ে একবার সার্কিট হাউজের গেটের সামনে, আরেকবার নাসিমন ভবনের সামনে— কিভাবে সম্ভব? আবার একই সময়ে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে। এটা কিভাবে হয়?’

বিজ্ঞাপন

এসময় শাহাদাতের আইনজীবীদের মধ্যে এস এম বদরুল আনোয়ার এবং এনামুল হকও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ বলেন, ‘জনপ্রিয় নেতা চিকিৎসক শাহাদাত হোসেনকে হাসপাতালে রোগী দেখা অবস্থায় ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। এটা অমানবিক। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার বিএনপির ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সকল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী শাসন চিরস্থায়ী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন