‘হেফাজতের কর্মকাণ্ড পৃথিবীর সকল মুসলমানের জন্য লজ্জা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একজন মুসলমানের দায়িত্ব আরেকজন মুসলমানের জানমাল হেফাজত ও রক্ষা করা। কিন্তু দেশবাসী দেখল, হেফাজতের নামে তারা জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। আর বিএনপি-জামায়াত তাদের মদদ দিচ্ছে। এই লজ্জা শুধু বাংলাদেশের জনগণের না, এই লজ্জা পৃথিবীর সকল মুসলমানের।

রোববার (৪ মার্চ) একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরা ধর্মের নামে ব্যবসা শুরু করেছে। এদের এত অর্থ কোথা থেকে আসে। এই বিনোদনের টাকা কোথা থেকে আসে সেটাও একটা প্রশ্ন। ইসলাম ধর্মকে তারা ছোট করে দিচ্ছেন। কিছু লোকের জন্য এই ধর্মে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের নাম জুড়ে যাচ্ছে। হেফাজতের কর্মকাণ্ড জনগণ দেখেছে। এর বিচার দেশবাসী করবে। আর আইন তার আপন গতিতে চলবে।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘ইসলাম শন্তির ধর্ম। পবিত্র ধর্মকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দিচ্ছে তারা। তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য বহু মানুষের জীবন গেছে। ২৬ মার্চ অনেক মানুষের জীবন গেছে। এর জন্য দায়ী তো তারা। আমি শুধু এইটুকু বলব, দেশবাসী যেন একটু ধৈর্য্য ধরেন। আমার কাছে বিস্তারিত তথ্য আছে। আমাদের সবাইকে ধৈর্য্য ধরেই এগোতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ধর্মের নাম নিয়ে অধর্ম কাজ করে এটা জনগণ কখনই মেনে নেবে না। জনগণ কখনই সহ্য করবে না। আর এভাবে পবিত্র ধর্মকে কেউ অসন্মান করুক সেটাও আমরা চাই না। আমরা চাই এ দেশ এগিয়ে যাবে। এই দেশে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করে, সেটাই করবে। কিছু লোকের জন্য ইসলাম ধর্মের বদনাম হবে এটা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এই ধরণের অপকর্মে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের কর্মকাণ্ড জনগণ কি শুধু বসে বসে সহ্য করবে? জনগণ তো সহ্য করবে না। সংসদে কেউ কেউ বলছেন, পুলিশ কেন ধৈর্য্য দেখিয়েছে? আমরা ধৈর্য্য দেখিয়েছি এগুলো থেকে বিরত রাখার চেষ্টায়। কারণ সংঘাতে সংঘাত বাড়ে, আমরা তা চাইনি। আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ভালোভাবে উদযাপন করতে চেয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গতকালকে দেখেছেন, এরা একদিকে ইসলামের নামে, ধর্মের নামে, পবিত্রতার নামে এত কিছু বলে; আবার তারাই গিয়ে অপবিত্র কাজ করে ধরা পড়ে সোনারগাঁও’র রিসোর্টে। একটা রিসোর্টে ধরা পড়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব। তিনি ধরা পড়লেন এবং সেটা ঢাকার জন্য নানা রকম চেষ্টা। পার্লারে কাজ করা এক নারীকে বৌ হিসেবে পরিচয় দেন। আবার নিজের বৌ’র কাছে বলেন যে, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলে ফেলেছি।’

তিনি বলেন, ‘এরা কি ধর্ম পালন করে? মানুষকে কী ধর্ম শেখাবে? হেফাজতের সদস্যদের অনুরোধ করব, একটু বুঝে নিন কেমন নেতৃত্ব আপনাদের। আগুন লাগিয়ে জ্বালাও-পোড়ায় করে বিনোদন করতে গেলেন একটা রিসোর্টেভ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম। যে ইসলাম ধর্ম সব থেকে সহনশীলতার কথা শিখিয়েছে, শান্তির কথা বলেছে, সাধারণ মানুষের কথা বলেছে, মানুষের উন্নয়নের কথা বলেছে সেই পবিত্র ধর্মকে এরা কলুষিত করছে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম