বিজ্ঞাপন

নীরবে ছবি এঁকে মমতার প্রতিবাদ

April 13, 2021 | 5:22 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ২৪ ঘণ্টা তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জির নির্বাচনি প্রচারণার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের ওই ‘অগণতান্ত্রিক’ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলকাতার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন মমতা। খবর ডয়চে ভেলে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তিনি।

যেখানে মমতা অবস্থান নিয়েছিলেন, ওই এলাকা সেনাবাহিনীর অধীনে। সোমবার (১২ এপ্রিল) সকালে তিনি অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। তবে অনুমতির তোয়াক্কা না করে মমতা হুইলচেয়ারে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে পড়েন। তিনি যখন কর্মসূচি শুরু করেন তখন সেখানে অন্তত ৫০০ মানুষ জড়ো হয় বলে জানিয়েছে ডয়চে ভেলে।

এদিকে, ওই কর্মসূচির লাইভ ভিডিও থেকে দেখা যায়— অবস্থান নিয়েই মমতা প্রথমে কিছুক্ষণ ফোনে কথা বলেন কিছুক্ষণ। তারপর বের করেন নতুন কেনা তুলির প্যাকেট ও রঙ। হাতে তুলে নেন ছোট ক্যানভাস। তারপর একমনে ক্যানভাসে রঙের আঁচড় দিতে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনি প্রচারণার ফাঁকে এই প্রথম ছবি আঁকতে বসলেন মমতা। এটা ছিল তার নীরব প্রতিবাদের অংশ। সাড়ে তিন ঘণ্টা এভাবেই প্রতিবাদ দেখান তিনি।

ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বাড়তে থাকে মানুষের সংখ্যা। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা মমতার সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে সেখানে হাজার দুয়েক মানুষ জড়ো হয়।

অন্যদিকে, মমতার নির্বাচনি প্রচারণার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলবে মঙ্গলবার রাত আটটা পর্যন্ত। তারপর তিনি প্রথমে বারাসতে জনসভা করবেন। সেখান থেকে যাবেন রাজারহাটে। এই দুই জনসভায় মমতা এবার কী বলবেন, তার দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৪ এপ্রিল) তিনি যাবেন মাথাভাঙা। শীতলকুচিতে গুলিতে আহতদের হাসপাতালে দেখতে। এরপর ধুপগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি হয়ে আসবেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতে। তারপর রাতে হরিণঘাটায় তার জনসভা করার কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে তৃণমূল নেতা ডেরেক ওব্রায়েন বলেছেন, এটা অবস্থান কর্মসূচি নয়, এটা হলো সত্যাগ্রহ। যখন তৃণমূলকে হারাতে পারছে না, তখন এভাবেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) অবশ্য বলছে, এটা নাটক। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী তো কথায় কথায় রাস্তায় বসে পড়েন। উনি সংবিধান, আইন কিছুই মানেন না। ২৪ ঘণ্টা প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্তই যথেষ্ট নয়।

কিন্তু তৃণমূলের দাবি, অন্য বিষয়ের সঙ্গে এবারের বিষয়কে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। আর এটা ভুলে গেলে চলবে না, অতীতে বারবার প্রমাণিত হয়েছে, মমতা যখন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেন, তখন তিনি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী সুজাতা মন্ডল ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিজেপি নেতারা যা খুশি বলে যেতে পারেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। শাস্তি হয় শুধু তৃণমূল নেত্রীর।

তবে, নির্বাচন কমিশন অবশ্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছে। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহাকে শাস্তি দিয়েছে কমিশন। তিনি দুই দিন প্রচারণা করতে পারবেন না। এর আগে, রাহুল বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী চারজনকে মারলো কেন, ওদের তো আটজনকে মারা উচিত ছিল। তার ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কমিশন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে শুধুমাত্র সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দুও প্রচারণায় সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রেখেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়াও, নির্বাচন কমিশন দিলীপ ঘোষকে নোটিশ দিয়েছে। দিলীপ বলেছিলেন, তৃণমূল বাড়াবাড়ি বন্ধ না করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন