বিজ্ঞাপন

স্মৃতির ২২ গজে মুখর স্বাধীনতা

March 26, 2018 | 4:43 pm

মোসতাকিম হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

মিরপুরে ঢুকতেই দেখা হয়ে গেল মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে। সুপার লিগ চলছে, অনুশীলন তো করতেই হবে। মাঠেও একবার চক্কর দিয়ে গেলেন। খানিক পর দেখা মিলল মুশফিকুর রহিমের, সেই চিরচেনা হাসি নিয়ে লাল-সবুজ পতাকা ওড়ালেন পতপত করে। চারদিক থেকে তখন আলোকচিত্রীদের শাটারের তুমুল ক্লিক। সাকিব আল হাসানের আপাতত খেলা নেই, তবে ড্রেসিংরুমে ঢুঁ মারলেন একবার। এই ড্রেসিংরুম এখন তাঁদেরই, তবে আজকের দিনের জন্য তা ছেড়ে দিতে হলো অগ্রজদের। স্বাধীনতা দিবসে যে মিরপুরে সাবেক ক্রিকেটারদের একটা মিলনমেলাই হয়ে গেল! স্কোরকার্ড বলছে, প্রীতি ম্যাচে লাল দল সবুজ দলকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে, তবে জয় পরাজয় ছাপিয়ে পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থনটাই যেন উঠে এলো বেশি করে।

 

বিজ্ঞাপন

বিশেষ দিবসে মিরপুরে সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে ম্যাচটা একটা অলিখিত রেওয়াজই হয়ে গেছে। মিনহাজুল আবেদীন, হাবিবুল বাশাররা এখন নির্বাচক, তবে আজ অন্যের খেলার চেয়ে নিজেদের দলের খেলাটাই দেখতে হলো। ধারাভাষ্য কক্ষ ছেড়ে আতাহার আলী খান নেমে পড়লেন ব্যাট-প্যাড নিয়ে, তাঁর ব্যাটিং দেখেই আজ ধারাভাষ্য দেওয়া হলো। আকরাম খান, খালেদ মাহমুদদের জাতীয় দলের সময় অহর্নিশ থাকতে হয় স্নায়ুচাপে, আজ তাঁরা মাঠে নামলেন নির্ভার হয়ে। তবে ‘অস্ত্র জমা দিলেও ট্রেনিং যে জমা দেননি’ সেটাই যেন প্রমাণ করলেন আজ।

আকরাম খান যেমন সেই দারুণ কয়েকটা লফটেড শটে জাগিয়ে তুললেন পুরনো স্মৃতি। মিনহাজুল আবেদীনের ব্যাটে এখনো লেগে আছে সেই আভিজাত্য মোড়ানো শটের রেশ, হাবিবুল বাশারও ভোলেননি সেই ট্রেডমার্ক শটগুলো। পেসারদের অবশ্য গতি কমে গেছে অনেকটাই, বয়সের সাথে সেটাই স্বাভাবিক। তবে হান্নান সরকার, হাসানুজ্জামানরা দেখালেন ফিটনেসের দিক দিয়েও তারা খুব বেশি পিছিয়ে নেই। আজকের দিনের সব আলো অবশ্য কেড়ে নিয়েছিলেন হান্নান সরকার, ২৪ বলে ৬১ রানের ইনিংসে বলতে গেলে একাই জয় এনে দিয়েছেন বিসিবি লাল দলকে।

বিজ্ঞাপন

তবে উপভোগ করেছেন কমবেশি সবাই। মাঠে নামার আগে যেমন আকরাম খান রসিকতা করে বলছিলেন, আজকে আবার বল টেম্পারিং হবে না তো? কথাটা উঠতেই হাসির তুমুল কোরাস। আকরাম ২০ বলে ২১ রানও করে ফেলেছিলেন, সাইফুল্লাহ জেমের বলে আউট হওয়ার সময় ফিরতি ক্যাচটা জেম ঠিকঠাক ধরেছিলেন কি না সেটা ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না। আম্পায়ারও শুরুতে আউট দেননি, তবে আকরাম সেই সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই শুরু করে দেন হাঁটা। পেশাদার ক্রিকেটে এত দ্রুত ‘ওয়াক’ করার আগে নিশ্চয় দুবার ভাবতেন আকরাম!

খালেদ মাহমুদ যেমন ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করার পর দুই দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাতেই ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। ততক্ষণে সাবেক ক্রিকেটারদের স্ত্রী, সন্তানেরা মাঠের প্রান্তে চলে এসেছেন। অনেকটাই যেন ঈদ পরবর্তী পুনর্মিলনী! পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও শুরু হলো, তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মর্তুজা। সমবেত ফটোশুটে শেষ হলো আনন্দময় একটা দিন, যেখানে ২২ গজে মিলে ছিল লাল-সবুজের অহংকার।

 

বিজ্ঞাপন

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বিসিবি সবুজ একাদশ : ২০ ওভারে ১৬৬/৭ (রফিকুল ইসলাম খান ৩৪, হারুনুর রশিদ লিটন ২৭, জাহাঙ্গীর আলম ২৭, হাসানুজ্জামান ঝড়ু ২২; জাকির হাসান ৩/২২, খালেদ মাহমুদ ৩/৪১

বিসিবি লাল একাদশ: ১৮.১ ওভারে ১৬৭/৪ (হান্নান সরকার ৬১, মিনহাজুল আবেদীন ৩১, খালেদ মাহমুদ সুজন ২৮*, আকরাম খান ২১; শফিউদ্দিন বাবু ২/১৮)

ফল: বিসিবি লাল ৬ উইকেটে জয়ী

 

সারাবাংলা/এএম/এসএন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন