বিজ্ঞাপন

আসছে বর্ষা মৌসুম, ঝুঁকিতে ২ লাখ রোহিঙ্গা

March 26, 2018 | 6:04 pm

।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার : কিছুদিন পরেই শুরু হবে বর্ষা মৌসুম। ওই সময় মারাত্মকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হবেন পাহাড়ে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা। বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গাদের ঘরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিতে প্লাবিত হবে নীচু এলাকা। সংকট দেখা দেবে পানি ও খাবারে। ঘটতে পারে হতাহতের মতো ঘটনাও। এই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন পাহাড়ে অবস্থান করা ২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও রাখাইনদের নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে উখিয়া-টেকনাফের পাহাড় ও তার পাদদেশে। গত ২৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের লেদা নামে দুইটি রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্প থাকলেও বর্তমানে ১২ ক্যাম্প রয়েছে। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে পাহাড় কেটে। তারা নিজেরাই প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে তৈরি করছে ঘরবাড়ি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা।

এই অবস্থায় বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পড়বে নরম মাঠির পাহাড়ের উপরের ঘরগুলোতে। এরইমধ্যে গত ২০ দিন আগে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৩টি ঘর পড়ে গেছে বলে জানান, ওই ক্যাম্পের মাঝি নুরুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

আসন্ন ঝুঁকিকে সামনে রেখে দুর্যোগ মোকাবেলার উপযোগী ঘর তৈরীর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আইএমও সহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থা।

এদিকে যতই দিন গড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা ততই আতংকিত হয়ে পড়ছে আর নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সেনুয়ারা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা নারী জানান, তিনি পাহাড়ে কখনও বসবাস করেনি। বাধ্য হয়ে তাকে পাহাড়ের ঢালুতে ঘর করতে হয়েছে। প্রতিরাতে ভয় লাগে যদি ঘরটা ভেঙ্গে পাহাড়ের নিচে পড়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

লিয়াকত মিয়া নামে আরেক রোহিঙ্গা জানান, বৃষ্টি পড়লে তারা কোনো অবস্থায় পড়বেন তা বুঝতে পারছে না। তার ধারণা পাহাড়ে থাকা নড়বড়ে সব ঘরবাড়ি ভেঙে পড়বে। কারণ পাহাড়ের মাটিগুলো নরম। এছাড়া টয়লেট আর নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়ছে। এতে দূষিত হবে পরিবেশ। আর মারাত্মক সমস্যায় পড়বে রোহিঙ্গারা।

কবির আহম্মদ নামে আরেক রোহিঙ্গা জানান, তিনি দুর্যোগ মোকাবেলার উপরে আইওএম থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এরপরও তার মধ্যে অজানা আতঙ্ক কাজ করছে।

এ ব্যাপারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে ঝুঁকির মধ্যে থাকা ২ লাখ রোহিঙ্গাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়াসহ সচেতনতামূলক কাজ চলছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।

বৃষ্টির আগেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলা না হলে হতাহতসহ বহুমুখি সমস্যার সৃষ্টি হবে। আর এর প্রভাব পড়বে কক্সবাজারসহ পুরো দেশে। আর এই সমস্যা সমাধানে দেশি-বিদেশি এনজিও সহ সকলে যেন যথাযথভাবে দ্রুত কাজ করে এমনই প্রত্যাশা করছেন সচেতন মহল।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিএম/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন