বিজ্ঞাপন

বাজেটে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখুন: এলডিপি

May 25, 2021 | 4:33 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আসন্ন বাজেটে দেশের সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসী ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। মঙ্গলবার (২৫ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাব করেন সংগঠনের দুই নেতা।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেন, ‘দেশে যে ১৫-১৮ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে আয়কর দেন, সেই আয়কর দেওয়ার পেছনে তাদের ব্যক্তিগত বা সামাজিক প্রণোদনা কী?— এই প্রশ্নটি আজ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র নিবর্তনমূলক একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে বাধ্যবাধকতাই কর আদায়ের মূল ভিত্তি হলে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি ও করের পরিমাণ বৃদ্ধি একটা জায়গায় চিরদিনই আটকে থাকবে। বরং করদাতাদের করের বিনিময়ে রাষ্ট্র কী সেবা-সহায়তা নিশ্চিত করছে বা করদাতার কর দেওয়ার পেছনে অন্য কোনো প্রণোদনা সৃষ্টি করা যায় কি না, তা নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারকে এখনই ভাবা উচিত।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তার জন্য করব্যবস্থার পাশাপাশি সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য আজীবন পেনশন বা বিশেষ প্রনোদনার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে সরকার। কারণ, সরকারি চাকরির বাইরে যারা অন্য কোনো জীবিকায় নিয়োজিত এবং নিয়মিত আয়কর দিয়ে থাকেন, ৬০-৬৫ বছরের পর জীবনের বাকি দিনগুলোর জন্য রাষ্ট্রের উপর ভরসা করতে পারে।’

তারা বলেন, ‘এখন শুধু সরকারি কর্মচারীদের পেনশন দেওয়া হয় এবং সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ৩০ লাখ দরিদ্র বয়স্ক পুরুষ-নারীকে ৫০০ টাকা হারে আমৃত্যু বয়স্ক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন সবই সাধারণ করদাতার অর্থে সংস্থান করা হয়। তাই ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব কর্মজীবীরই পেনশনের অধিকার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এখনই শুরু করা প্রয়োজন এবং প্রয়োজন সার্বিক পেনশনব্যবস্থা সুষমকরণ।’

বিজ্ঞাপন

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, ‘এমন অনেক বেসরকারি চাকরিজীবী বা স্বনিয়োজিত কিংবা উদ্যোক্তা রয়েছেন, যিনি ৩০-৩৫ বছর কর দিয়েছেন কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে তার নিজের চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন জীবনযাপন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করলে বর্তমানে প্রদত্ত করব্যবস্থার সঙ্গে তার পেনশনব্যবস্থার সংযোগ স্থাপন করে এ অনিশ্চয়তার অবসান ঘটানো সম্ভব। করব্যবস্থার সঙ্গে পেনশন ও স্বাস্থ্য বা চিকিৎসার একটি কার্যকর সংযোগ স্থাপন সম্ভব হলে দেশে করদাতার সংখ্যা অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।’

তারা বলেন, ‘অন্তত ১৫ থেকে ২০ বছর নিয়মিতভাবে আয়কর দিয়েছেন এবং ৬৫ বছর বয়স অতিক্রম করেছেন, তাদের প্রদত্ত করের আনুপাতিক হারে বাকি জীবনের জন্য অবসরভাতা দেওয়া বিষয়টি সরকার বিবেচনায় নিতে পারে। একইসঙ্গে রাষ্ট্র চালু করতে পারে করদাতা সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্য কার্ড, যা তাদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকারভিত্তিক চিকিৎসার সুযোগ প্রদান করবে এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোও বিশেষ মূল্যছাড় প্রদান করবে।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘ভারত, জাপান, সুইডেন, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। ভারত ২০০৭ সালে আইন প্রণয়ন করে সিনিয়র সিটিজেনদের বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে সিনিয়র সিটিজেনদের জীবন ও সম্পদ সংরক্ষণ, জীবনযাপনের মূল চাহিদা পূরণ, সন্তান কর্তৃক পিতামাতার অবহেলায় শাস্তির বিধান, গণপরিবহন তথা- রেল, বিমান, বাস, লঞ্চ ইত্যাদিতে আসন সংরক্ষণ ও হ্রাসকৃত মূল্যে সেবা প্রদান, ব্যাংক, হাসপাতালসহ বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার ও হ্রাসকৃত মূল্যে সেবা প্রদান।’

বিজ্ঞাপন

তারা বলে, ‘প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশ সরকার উন্নত দেশের মতো কল্যাণমুখী বিভিন্ন কার্যক্রম এখনও গ্রহণ করেনি। তাই বাংলাদেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ভারত ও উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশ সরকারকে দেশের ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সিনিয়র সিটিজেনদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয় বিবেচনা জন্য আসন্ন বাজেটেই কর্মসূচী গ্রহণ করা উচিত।’

সারাবাংলা/এজেড/এসএসএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন