বিজ্ঞাপন

উন্নয়নশীল দেশ : প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনার প্রস্তুতি

March 27, 2018 | 10:18 pm

।। নৃপেন রায় ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে নাগরিক কমিটির উদ্যোগে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী ১৭ এপ্রিলের পর যে কোনো তারিখে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্পাদকমন্ডলীর দুজন সদস্য বলেন, বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা মেয়াদে ক্ষমতাসীন থেকে তার অদূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আজকে বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যে কারণে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যোগ্যতা অর্জনের প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করেছে। এ লক্ষ্যেই নাগরিক সমাজের ব্যানারে বিগত সংবর্ধনার ন্যায় প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। আগামী ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনার ব্যাপারে তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

এ লক্ষ্যে আগামী ৩০ মার্চ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ সম্পাদকমন্ডলীর এক সভা আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন  দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর ৩১মার্চ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক সভা সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

উক্ত সভায় সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন। সোমবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা এবং সম্পাদকমন্ডলীর সভা দুটি অনুষ্ঠিতের বিষয়ে জানান।

গত সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের ওই স্বীকৃতি উদযাপন উৎসবের উদ্বোধনীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। মন্ত্রিসভার পক্ষে অর্থমন্ত্রী মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ১৪ দলের পক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। এ ছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, পেশাজীবী, নারী সংগঠন, এনজিও প্রতিনিধি, শিশু প্রতিনিধি, প্রতিবন্ধী প্রতিনিধি, শ্রমজীবী প্রতিনিধি এবং মেধাবী তরুণ সমাজের পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দেওয়া হয়। দেশের ক্রীড়াবিদদের পক্ষে ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।

১৯৭৫ সালে স্বল্পোন্নত দেশ হওয়ার পর বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়, মানবোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিসূচকের শর্ত পূরণ করে প্রায় ৪৩ বছর পর উন্নয়নশীল দেশের কাতারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সম্প্রতি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি দেয়। এই স্বীকৃতির পর সরকারি উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীকে এক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক আনন্দ উৎসবের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

তবে ২০১৫ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২৯ মে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই গণসংবর্ধনায় তাকে দেশরত্ম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। সব্যসাচী লেখক প্রয়াত সৈয়দ শামসুল হককে চেয়ারম্যান করে ২০২ সদস্যের জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। আর চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতি উদযাপনে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করেন নাগরিক কমিটির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিভিন্ন দেশের আরও ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রমাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করে নেয় ইউনেস্কো। এ স্বীকৃতির উদযাপনেই আজ নাগরিক কমিটির ব্যানারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল স্বাধীনতার উদ্যান  সোহরাওয়ার্দীতে।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন