বিজ্ঞাপন

অামরা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই : প্রধানমন্ত্রী

March 29, 2018 | 3:40 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঠাকুরগাঁও থেকে ।।

বিজ্ঞাপন

সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কা দেবে উন্নতি, নৌকা মার্কা দেবে আপনাদের শান্তি। নৌকা মার্কা দেবে আপনাদের জীবন মানের উন্নতি।

বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (বড়মাঠ) জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পদক্ষেপ ও বিগত সময়ে বিএনপি জামায়াতের দুর্নীতি, অপশাসন, জঙ্গিবাদ নিয়ে কথা বলেন। গত জাতীয় নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের কঠোর সমালোচনা করেন। আর ঠাকুরগাঁও জেলার বাসিন্দা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা যখন দেশের উন্নয়ন করি, বিএনপি কী করে? ওই মির্জা ফখরুল ইসলাম, দিন রাত গলা ফুলিয়ে কথা বলতে বলতে গলাই ফুলিয়ে ফেলেছে। গলার চিকিৎসা করতে বিদেশেও যায়। মিথ্যে কথা বলার একটা সীমা আছে। এতো মিথ্যা কথা বললে তো আল্লাহও নারাজ হয়।

বিজ্ঞাপন

 

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলের বড়মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভার একাংশ।

 

মির্জা ফকরুলকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে ছিল বিমান মন্ত্রী। বিমানের কি উন্নয়নটা করেছিল? বিমানকে পুরোপুরি ধ্বংস করে রেখে গিয়েছিলেন। বিমানের রাডার নাই। রাডার স্টেশন মাত্র। সবকটা স্টেশন নষ্ট। সবকিছু ধ্বংস করে রেখে গিয়েছিলো। আমরা আসার পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানে যুক্ত হয়েছে ৮টি নতুন বিমান। বিমান আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা বিমানকে উন্নত করেছি। এই সৈয়দপুর বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো বিএনপির আমলে। বিমানমন্ত্রী আপনাদের এখানকার। আর সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দেয়। আমরা সরকারে এসেছি। সেই এয়ারপোর্ট চালু করে দিয়েছি।তিনি বলেন, এরা ধ্বংস করতে জানে। সৃষ্টি করতে জানে না। এরা মানুষের ধন লুটপাট করে খেতে পারে। মানুষকে দিতে জানে না। বিএনপির আমলে পাঁচ পাঁচবার বাংলাদেশ বিশ্বের দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমার কাছে দাবি করার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশ আমি চিনি। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে আমি ঘুরেছি। বাংলাদেশের কোথায় কী প্রয়োজন। আমি সমস্ত বাংলাদেশ সফর করেছি আর বাবার কাছে শুনেছি। কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে। তাই যখনই আমরা ক্ষমতায় আসি। বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়। কারণ ক্ষমতাকে আমরা ভোগের বস্তু মনে করি না। ক্ষমতাকে মনে করি জনগণের সেবা করা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি মনে করি, আমি আপনাদের সেবক। জনগণের সেবক। আপনাদের সেবক হিসেবে আমরা কাজ করি। আর বিএনপি, তারা তো লুটপাট ও দুর্নীতিতেই ব্যস্ত। তার ছেলেরা প্রায় ৯৮০ কোটি ২০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। দেশে-বিদেশে প্রচুর সম্পদ বানিয়েছে।

এ বিষয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে টাকা এসেছে এতিমখানা বানানোর জন্য। ১৯৯১ সালে সেই টাকা এসেছে। একটা টাকাও এতিমের হাতে তুলে দেয় নাই। সব টাকা নিজের মধ্যে রেখে দিয়েছে। মামলা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কোর্ট রায় দিয়েছে। এতিমের টাকা লুট করে না খেতে, এটা তো কোরআন শরীফের কথা। এতিমের হক না দিলে পরে তার জন্য আল্লাহই শাস্তির বিধান করে দিয়েছেন। আর এতিমখানার নামে যে টাকা এসেছে খালেদা জিয়া, এক টাকাও এতিমকে দেয় নাই। কোর্ট রায় দিয়েছে। আজকে সাজাপ্রাপ্ত। তার জন্য আবার আন্দোলন করতে চায়। যে এতিমের টাকা চুরি করে, তার জন্য আবার আন্দোলন কিসের?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণকে দিতে এসেছি। জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি। আমাদের কাজ জনগণের কল্যাণ করা। জনগণের মঙ্গল করা। আমরা সেই কাজটাই করে যাচ্ছি। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এটাই তো আমাদের কাজ। আর সেটাই আমরা করবো। এটাই আমাদের ওয়াদা। আওয়ামী লীগ আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। বিএনপি আসলে হয় না।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা চাই, দেশ এগিয়ে যাক। দেশ উন্নত হোক। আর বিশ্বসভায় বাংলাদেশ একটা মর্যাদা নিয়ে চলুক। এটা আমরা চাই। বিএনপি আসা মানেই হচ্ছে দেশ ধ্বংস হওয়া। আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারা। দুর্নীতি করা। লুটপাট করা। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা। আওয়ামী লীগ আসা মানেই দেশের উন্নয়ন, শান্তি। দেশের উন্নতি-ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করা, উন্নত বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চল থেকে প্রত্যেকটি মানুষ খেয়ে পরে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে সেটাই আমাদেরও লক্ষ্য। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমাদের দায়িত্ব স্বাধীনতার সুফল প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের জীবনকে সুন্দররভাবে গড়ে তুলতে চাই। সেই জন্য আপনাদের কাছে আবেদন- ২০০৮ সালে সরকারে এসেছি। আমরা ২০১৪ সালে আবার পুনরায় সরকারে এসেছি। সরকারের ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজকে উন্নয়নের ছোঁয়া প্রত্যেক জেলায় জেলায় যাচ্ছে, গ্রামে গ্রামে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নৌকা মার্কায় আপনাদের কাছে আমি ভোট চাই। নৌকা মার্কায় দেবে উন্নতি, নৌকা মার্কা দেবে আপনাদের শান্তি। নৌকা মার্কায় দেবে আপনাদের জীবন মান উন্নত।
উত্তর জনপদের মানুষের কাছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে-ওয়াদা চাই, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা ওয়াদা করেন। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন, নৌকায় ভোট দেবেন।’

বিজ্ঞাপন

৭৫-এর ১৫ আগস্ট পিতা-মাতা-ভাইসহ স্বজন হারানোর বেদনা তুলে ধরে বলেন, আমার পিতা এই দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন। তার জীবনের স্বপ্ন ছিল প্রতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। দেশকে উন্নত করবেন। বিশ্বসভায় বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে। আজকে আমরা উন্নয়নের একটা ধাপ এগিয়ে গেছি- এই মার্চ মাসে। এই উন্নয়নের গতিধারা সামনে এগিয়ে নিয়ে আপনাদের সার্বিক উন্নয়ন বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী পালন করবো ২০২০ সালে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। নৌকা মার্কায় ভোট দেন, আপনাদের সোনার বাংলাদেশ উপহার দেবো।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ ও যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন