বিজ্ঞাপন

নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী, করোনা ঝুঁকিতে চরাঞ্চলের মানুষ

July 13, 2021 | 8:10 am

রানা আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিরাজগঞ্জ: মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোধে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ অমান্য করে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মোনাকষা-বানতিয়ার-জামিরতা-ছোট চানতারা নৌরুটে চলাচলকারী অর্ধশতাধিক ইঞ্জিনচালিত শ্যালো নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, নৌকায় থাকা যাত্রীদের অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। এতে উপজেলার কৈজুরি ও সোনাতনী ইউনিয়নের যমুনা নদীর চর এলাকার অন্তত ১৫ গ্রামের ৬৫ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু করোনা ঝুঁকিতে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিক উপার্জনের আশায় এভাবে নৌ পরিচালনা করায় করোনা ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

চরাঞ্চলে করোনার সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা গ্রামগুলো হলো- , শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের ঠুটিয়া, ভাট দীঘুলিয়া, চৌরাপাচিল, সোনাতনী ইউনিয়নের মাকড়া, ধীতপুর, শ্রীপুর, সোনাতনী, কুরসী, ছোট চানতারা, বড় চানতারা, বানতিয়ার, লহিন্দাকান্দি, দইকান্দি, বানিয়া সিংগুলি ও দাসুরিয়া।

এছাড়া এ নৌরুটে চৌহালী উপজেলার ঘোরজান ইউনিয়নের ঘোরজান, বরংগাইল, স্থল ইউনিয়নের উত্তর নওহাটা, দক্ষিণ নওহাটা, ঠেঙ্গামারা ও বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আরো ১০ হাজার মানুষসহ মোট পৌনে এক লাখ মানুষ যাতায়াত করে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে কৈজুরি ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান মল্লিক ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার জানান, কৈজুরি বাজারের ইলেকট্রিশিয়ান বাবুল হোসেন বাবু মোনাকষা (সরকারী নাম চৌরা পাচিল) ঘাটের মূল ইজারাদার। তার সঙ্গে ১৮ জন ভাগিদার রয়েছে। এদের কেউই প্রকৃতপক্ষে মাঝি না। এদের নিজস্ব কোনো নৌকা নেই।

তারা আরও জানান, নৌকাপ্রতি সপ্তাহে ২৫০০ টাকা ভাড়ায় এরুটে ৪/৫ টা নৌকা চালানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ ঘাট থেকে আধা ঘণ্টা পরপর নৌকা ছাড়ার কথা থাকলেও ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পরপর নৌকা ছাড়া হয়। ফলে প্রতিটি নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে হয়। নৌকা স্বল্পতার কারণে যাত্রীরাও নিরুপায় হয়ে করোনা ঝুঁকি নিয়েই গাদাগাদি করে চলাচল করতে বাধ্য হয়।

প্রতিবাদ করলে ঘাট ইজারাদারের ভাড়াটিয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় জানিয়ে তারা বলেন, প্রাণ ভয়ে কেউ টু শব্দ করে না। প্রায়ই নৌকার ফ্যান ভেঙে যায়। এছাড়া প্রায়ই যাত্রীদের গভীর রাত পর্যন্ত মাঝ যমুনার চরে আটকা পড়ে থাকতে হয়। বারবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসে না। এসময় যাত্রীরা ডাকাতের হামলা ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় পরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। আর এ দুর্ঘটনা রাতে হলে নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা আরো বেশি হুমকির মধ্যে পড়ে। তারপরও যাতায়াতের বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় যাত্রীরা করোনা ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দ্বিগুণ ভাড়ায় এ নৌরুটে যাতায়াত করতে বাধ্য
হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, এই নৌরুটে সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ ভাড়া ১৫ টাকা। অথচ যাত্রীদের গুনতে হয় ২ থেকে ৩ গুণ বেশি ভাড়া। এ সমস্যা সমাধানে তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঘাট ইজারাদার বাবুল হোসেন বাবু বলেন, যাত্রীদের থেকে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না।

বিধিনিষেধ অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা না চাইলেও যাত্রীরা জোর করে উঠে পড়ে। তখন বাধ্য হয়ে যাত্রীদের নিয়ে যেতে হয়।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, আমি ঘাটের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দেখে সে অনুযায়ী দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো এবং অতিরিক্তি যাত্রীবহন না করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসএ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন