বিজ্ঞাপন

‘সংক্রমণ বাড়লে সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না’

July 17, 2021 | 8:53 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ তিন থেকে চার গুণ বেড়ে গেলে সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলমের লেখা সার্জারি বিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ আশঙ্কার কথা জানান মন্ত্রী। ‘খুরশীদস ডিকোডিং সার্জারি’ বইটির মোড়ক উন্মোচনের এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে হাসপাতালের শয্যা প্রায় শেষ হয়ে আসছে। চিকিৎসাসেবা দিতে দিতে চিকিৎসকরাও ক্লান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিন নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নির্দেশনায় নতুন করে চার হাজার চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে। চার হাজার নার্স নিয়োগ হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যতই নিয়োগ দিই না কেন, করোনা সংক্রমণ যদি এখনকার চেয়ে তিন-চার গুণ বেড়ে যায়, ১০ থেকে ১৫ হাজার শয্যার বিপরীতে ৪০ হাজার রোগী হয়, তখন সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না। যত সমালোচনাই করুন, এটিই বাস্তবতা।

বিজ্ঞাপন

এসময় দেশের হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যা খালি নেই জানিয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ। ধর্মীয় বিষয় যেমন আছে, তেমনি জীবন-জীবিকার বিষয়ও রয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই (বিধিনিষেধ শিথিল) নির্দেশনা দিয়েছেন। আশা করব, ঈদের এই কয়েকটি দিন আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব।

জাহিদ মালেক বলেন, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে এরই মধ্যে সব শয্যা রোগীতে প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। ঈদের এই কয়েকট দিনের মধ্যে আশা করব যেন সংক্রমণ না বাড়ে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় ফিরবেন।

বিজ্ঞাপন

সমালোচকদের উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, অনেকেই আমাদের অনেকভাবে সমালোচনা করে। কিন্তু চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে হাসপাতাল। যারা সমালোচক, তারা হাসপাতালে এসে চিকিৎসা দিচ্ছে না। সমালোচনা না করে কীভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সংক্রমণের উৎপত্তি স্থান চিহ্নিত করে সবার সহযোগিতায় এটি নিয়ন্ত্রণে কাজ করা উচিত। কাজেই এই সময়ে সমালোচনা না করে সংক্রমণ প্রতিরোধ একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানাব।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, উপউপাচার্য অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেনসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের সার্জনরা।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি গত কয়েক মাস ধরেই অবনতিশীল। বিশেষ করে জুলাই মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এ মাসেই একদিনে সর্বোচ্চ ২৩০ মৃত্যুর পাশাপাশি একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৬৮ সংক্রমণের রেকর্ডও হয়েছে।

শুধু তাই নয়, আজ শনিবার পর্যন্ত জুলাই মাসের ১৭ দিনেই দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৩ জনের শরীরে। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে সাড়ে ১০ হাজারেরও বেশি। অন্যদিকে এই ১৭ দিনেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬৬ জনের। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন মৃত্যু হয়েছে ১৮৬ জনের।

বিজ্ঞাপন

এ পরিস্থিতিতে দেশে ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। প্রথমে ৭ জুলাই ও পরে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সে বিধিনিষেধ বলবৎ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য ঈদুল আজহা সামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। তবে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ফের কঠোর বিধিনিষেধের নির্দেশনা রয়েছে।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন