বিজ্ঞাপন

নৌ ভ্রমণের চাঁদার টাকা ফেরত চাওয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা

July 27, 2021 | 7:35 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

নরসিংদী: মনোহরদী উপজেলায় ঈদ পরবর্তী নৌ ভ্রমণের চাঁদার টাকা ফেরত চাওয়ায় আকরাম হোসেন শ্রাবণ (২২) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বখাটেরা। এসময় শ্রাবণের মামা সাখাওয়াত হোসেনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। সোমবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টার দিকে উপজেলার একদয়ারিয়া ইউনিয়নের একদুয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

পরে এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকালে কাপাসিয়ার সনমানিয়া থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে দুপুরে শ্রাবণের বাবা দুই জনের নাম উল্লেখ করে ৪ থেকে ৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মনোহরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

নিহত আকরাম হোসেন শ্রাবণ উপজেলার একদয়ারিয়া ইউনিয়নের কামার আলগী এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে।

গ্রেফতাররা হলো, উপজেলার একদয়ারিয়া ইউনিয়নের আসাদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৮) ও রান্দনদিয়া এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে মৃদুল মিয়া (১৬)।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৫ জুলাই রোববার হৃদয়ের নেতৃত্বে একদুয়ারিয়া এলাকার ৭৩ জন ছেলে পাশ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার লাখপুর শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকা ভ্রমণে যায়। এজন্য সবার কাছ থেকে ৫০০ করে টাকা নেওয়া হয়। কামার আলগী এলাকার বায়োজিদ (১৪) ও ইয়াছিন (১৭) নৌকা ভ্রমণে তাদের সঙ্গে গিয়েছিল। কিন্তু করোনাকালে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করায় নরসিংদী জেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিনাত ফৌজিয়া লাখপুর বেড়িবাধঁ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নৌকাটি আটক করে। এসময় বিধিনিষেধ ভঙ্গের কারণে হৃদয়, মৃদুল, বায়োজিদ ও ইয়াছিনসহ ৩২ জনকে আর্থিক জরিমানা করা হয়। যার ফলে নৌকা ভ্রমণ পণ্ড হয়ে যায়। পরে বায়োজিদ ও ইয়াছিন নৌকা ভ্রমণ না করার কারণে হৃদয়কে তাদের চাঁদা ও জরিমানার টাকা ফেরত দিতে বলে। কিন্তু হৃদয় তা দিতে অপারগতা জানায়। পরে তারা টাকা উদ্ধারের জন্য শ্রাবণের কাছে বিচার দেয়। শ্রাবণ টাকার জন্য হৃদয়কে চাপ দেয়। পরে হৃদয় জরিমানার টাকা নেওয়ার জন্য শ্রাবণকে সোমবার রাতে একদুয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আসতে বলে। পরে রাতে শ্রাবণ তার মামা সাখাওয়াতকে নিয়ে স্কুলের সামনে আসলে হৃদয় ও মুদুলসহ আরও ৪ থেকে ৫ জন তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা বাশেঁর লাঠি ও চালা দিয়ে শ্রাবণ ও সাখাওয়াতকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্রাবণকে মৃত ঘোষণা করেন। আর সাখাওয়াত মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহতের বাবা শাহজাহান বলেন, আমার ছেলে নৌ ভ্রমণে যায়নি। সে অন্যের ভালো করতে গিয়েছিল। কিন্তু সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য তারা আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, সকালে কাপাসিয়ার সনমানিয়া এলাকায় হৃদয়ের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হৃদয় ও মৃদুলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আজকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। আর নিহত শ্রাবণের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ করছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন