বিজ্ঞাপন

‘মায়ের দুধপানে শিশু মৃত্যুর হার কমে ৩১ শতাংশ’

August 2, 2021 | 8:40 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পান করালে শিশু মৃত্যুর হার শতকরা ৩১ ভাগ কমে যায়। জন্মের পর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করালে (এক ফোটা পানিও নয়) শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি আরও ১৩ শতাংশ কমে যায়।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২১ এর উদ্বোধনকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিভিন্ন জরিপের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘শিশুরাই জাতির ভবিষ্যত। যে জাতি শিশুদের কথা ভাবে না, সে জাতি খুব বেশি উন্নত হতে পারে না। আর দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নত অবস্থানে দেখতে হলে আমাদের আজকের এবং অনাগত শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘শিশুর মৃত্যুহার রোধে এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশে জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যেই মায়ের দুধ পান করাতে হবে। পূর্ণ ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান এবং ৬ মাস বয়সের পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত ঘরে তৈরি বাড়তি খাবারের পাশাপাশি বুকের দুধ চালিয়ে যেতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী শিশুকে মায়ের দুধ পান করানোর হার এখনও অনেক কম। মাত্র ৪৩ শতাংশ নবজাতককে জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পান করানো হয়ে থাকে এবং ৪১ শতাংশ শিশুকে পূর্ণ ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করানো হয়। বাংলাদেশে এ হার বর্তমানে যথাক্রমে ৬৯ শতাংশ এবং ৬৫ শতাংশ। শিশুকে ২৪ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করানোর হার এখন ৮৭ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী শিশুর পূর্ণ ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করানোর হার ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই তা অর্জন করেছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবার মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালন শুরু হয়েছে। এ বছর ২ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত এ সপ্তাহটি পালিত হবে। আজ ২ আগস্ট সকালে জুম প্লাটফর্মে অংশ নিয়ে সপ্তাহব্যাপী মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বিজ্ঞাপন

২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ১-৭ আগস্ট বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘মাতৃদুগ্ধ দান সুরক্ষায়, সকলের সম্মিলিত দায়’। বর্তমানে নিরাপদে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে ঢাকা শহরে ২৫টি, বিভাগীয় শহরে ৫টি, জেলা শহরে ১৩টিসহ মোট ৪৩টি ডে-কেয়ার সেন্টার চালু রয়েছে। এছাড়াও গার্মেন্টসে কর্মরত নারীদের সন্তানদের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের প্রতিটিতে ৩০ আসন বিশিষ্ট ১৫টি ডে-কেয়ার সেন্টার চালু রয়েছে। হতদরিদ্র গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকালী মায়েদের ভাতা ৫০০ টাকার স্থলে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ভাতার মেয়াদ ২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩ বছর করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানুসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভা সঞ্চালনা করেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবার লাইন ডিরেক্টর ডা. এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন