বিজ্ঞাপন

এবার ভেষজ ওষুধ দিয়ে মশা মারার চেষ্টায় চসিক

August 16, 2021 | 8:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় অকার্যকর প্রমাণিত হওয়া রাসায়নিক বাদ দিয়ে ভেষজ ওষুধ দিয়ে মশা মারার অভিযান শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। সার্বিক কার্যক্রম তদারকির জন্য চসিকের প্যানেল মেয়র মো.গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি দুই সদস্য হলেন- কাউন্সিলর মোবারক আলী ও উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৬ আগস্ট) মশা নিধন অভিযানের সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা কর্মসূচিও শুরু করেছে চসিক। নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ১১ নম্বর সড়কে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় যেসব ওষুধ অকার্যকর বলা হয়েছে, সেগুলো আমরা বাদ দিয়েছি। নতুনভাবে হারবাল ওষুধ মসকুবার কেনা হয়েছে। আমরা ১০০ লিটারের অর্ডার করেছিলাম। ১০ লিটার ইতোমধ্যে সরবরাহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সেগুলো দিয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে বাকিগুলো আসবে।’

মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জানিয়েছেন, মশা নিধনের জন্য নতুন ওষুধ কেনার আগে চসিকের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কীটতত্ত্ববিদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। এরপর যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে নতুন ওষুধ সরবরাহের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ৩ আগস্ট মশার ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিণ আক্তার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়াকে আহ্বায়ক এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক রাসেলের নেতৃত্বে একটি টিম এই গবেষণা সম্পন্ন করেন।

চসিকের সরবরাহ করা পাঁচ ধরনের রাসায়নিক তারা পরীক্ষা করেন। এর মধ্যে চার ধরনের ওষুধে মশার শতভাগ মৃত্যুর প্রমাণ তারা পাননি। এমনকি ফগার মেশিনের মাধ্যমে এসব ওষুধ প্রয়োগে মশার মৃত্যুহার পাওয়া যায় ২৫ শতাংশেরও নিচে। তবে স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে হারবাল জাতীয় লার্ভিসাইড ও হারবাল জাতীয় এডাল্টিসাইড কেরোসিনের সঙ্গে মিশিয়ে (প্রতি লিটারে ১৬ দশমিক ৯ মিলিলিটার) ছিটানো পর শতভাগ মশার মৃত্যুর প্রমাণ পায় গবেষক দল।

তবে চবি’র গবেষক দলের প্রতিবেদনের পরও সেই অকার্যকর ওষুধ দিয়ে ৪ আগস্ট থেকে মশা নিধনের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করে চসিক। এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে চসিকের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাসায়নিকের মাত্রা বাড়িয়ে প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু রাসায়নিকের মাত্রা বাড়ানোর ফলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পিছিয়ে যায় চসিক।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে চবি’র উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক রাসেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি লিটার কেরোসিনে যদি হারবাল মসকুবার ১৬ দশমিক ৯ মিলিলিটার দেওয়া হয় তাহলে শতভাগ মশা মরবে। এটা ওই কোম্পানির নির্ধারিত মাত্রা। কিন্তু স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে ছিটাতে হবে। আমরা ফগার মেশিন দিয়ে ছিটিয়ে দেখেছি মশার মৃত্যুহার খুবই কম।’

পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মসকুবার বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ তেল দিয়ে তৈরি। এটা পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কেরোসিন অবশ্যই ক্ষতিকর।’

মশা নিধন কর্মসূচি তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর মোবারক আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভেষজ ওষুধ কেনার বিষয়ে আমরা আরও বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সরবরাহটা যাতে দ্রুত হয়, আমরা যাদে দ্রুত মশা নিধন করে নগরবাসীকে স্বস্ত্বি দিতে পারি সেই চেষ্টা করছি।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন