বিজ্ঞাপন

জুলহাস-তনয় হত্যা মামলার রায় আজ, আসামিদের ফাঁসি চায় রাষ্ট্রপক্ষ

August 31, 2021 | 9:31 am

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-ইউএসএআইডি কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যার মামলায় সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার তারিখ আজ (৩১ আগস্ট) ধার্য রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করবেন। গত ২৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ তারিখ ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল।

রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলার ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ সালের আইনে ১৬১, ১৬৪ ধারায় আসামিদের জবানবন্দি, আর্গুমেন্ট এবং মামলার অন্যান্য আলামত আসামির বিরুদ্ধে গেছে। আদালতে ২৪ জন সাক্ষীকে উপস্থাপন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রমাণ করার জন্য অর্থাৎ আসামিরা যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা প্রমাণ করার জন্য সাক্ষ্যপ্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে কোনো ঘাটতি নেই। এজন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় চার পলাতক আসামিসহ হাজতে থাকা চার আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড আশা করছি।’

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হননি। এজন্য তারা খালাস পাবেন। আসামি আরাফাত রহমানের আইনজীবী এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম (লিটন) সারাবাংলাকে বলেন, ‘আরাফাত রহমানকে ব্লগার অভিজিৎ হত্যার মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়। এই মামলায় একজন আসামিকে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পরে তদন্ত কর্মকর্তারা গ্রেফতার করেন। চার আসামি মধ্যে তিনজনকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। শ্যোন এরেস্টের পর আরাফাতকে আট দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে আসামি ফৌজদারি কার্যবিধি আইন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। ১৬৪ ধারায় আসামি নিজেকে জড়িয়ে কোনো বক্তব্য নেই। বাকি যে দুই আসামিকে শ্যোন এরেস্ট করা হয়েছে তাদেরও অভিজিৎ হত্যা মামলা থেকে নেওয়া হয়েছে। তারাও আরাফাতের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে কোনো বক্তব্য দেয়নি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ যে আসামিকে গ্রেফতার করেছে উনিও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই আসামির জবানবন্দিতে আরাফাতকে হত্যার ঘটনার কয়েকদিন আগে ঘটনাস্থানে রেকি করেন বলে উল্লেখ আছে। কিন্তু বাকি দু’জন আসামির নাম বলেননি। আসামি আরাফাত যে ঘটনা সম্পর্কে জানে সে বিষয়ে (অন্যদের জড়িয়ে) কোনো বক্তব্য দেয়নি। ২৪ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। তবে সেই সাক্ষীদের মধ্যে সুরতহাল সাক্ষী দু’জন, সিজার লিস্টের ছয় জন, মেডিকেলের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ, ১৬৪ ধারায় রেকর্ডকারী ছয় জন ম্যাজিস্ট্রেটকেও সাক্ষী করা হয়নি। পরে এ সকল ব্যক্তিদের আদালত ও প্রসিকিউশনের আবেদন অনুযায়ী সাক্ষ্য দিলেও তারা কেউ আসামির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়নি। এই মামলায় অনেকে চাক্ষুষ সাক্ষী রয়েছে, তারা কেউ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়নি। আসামি এই মামলায় সম্পূর্ণ নির্দোষ। আসামিকে সন্দেহের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। আশা করি তিনি খালাস পাবেন।’

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- আনসার আল ইসলামের মিডিয়া শাখার প্রধান এবং ইন্টেলিজেন্স সদস্য মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মান (২৫), সামরিক শাখার সদস্য ও সমন্বয়ক মো. আরাফাত রহমান (২৪), ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রধান শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), সামরিক শাখার সদস্য আসাদুল্লাহ ওরফে ফয়সল (২৫), সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (৪২), আকরাম হোসেন (৩০), সাব্বিরুল হক চৌধুরী (২৬) ও মো. জুনাইদ আহমদ ওরফে মাওলানা জুনেদ আহম্মদ ওরফে জুনায়েত (২৬)। আসামিদের মধ্যে চারজন পলাতক এবং চারজন কারাগারে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে প্রবেশ করে ইউএসএআইডি কর্মকর্তা এবং সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র মামলাটি দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন