বিজ্ঞাপন

আমিই সর্বকালের সেরা: গেইল

December 13, 2017 | 2:55 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান তো বটেই, সেরা ক্রিকেটারই মনে করা হয় স্যার ডন ব্র্যাডম্যানকে। কিন্তু স্যার ডন তো আর টি-টোয়েন্টি দেখেননি, টি-টোয়েন্টির ব্র্যাডম্যান তাহলে বলা উচিত কাকে? কাল রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৪৬ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলার পর এমন প্রশ্ন উঠেছিল ক্রিস গেইলের দিকে। গেইল রসিকতা করে জানান, তিনিই সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার!

কাল যা করেছেন, টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সেই কীর্তি নেই কারও। এক ইনিংসে ১৮টি ছয়ের বিশ্বরেকর্ড, টি-টোয়েন্টি ফাইনালে সবচেয়ে বেশি রান- এমন রেকর্ড গুণে শেষ করা যাবে না। মাঠে যেমন বিনোদনদায়ী, মাঠের বাইরেও রংপুরের জয়ের পর গেইলের সংবাদ সম্মেলন হয়ে থাকল বিনোদনের উৎস। প্রশ্ন করা হয়েছিল নিজেকে সর্বকালের সেরা মনে করেন কি না, তখনই রসিকতা করে গেইলের ওই উত্তর, সংবাদ সম্মেলনকক্ষ ফেটে পড়ল হাসিতে। বিনোদনের ওখানেই শেষ নয়। গেইল তার আগে অবাক করে জানালেন, ছয়ের কোনো হিসেব তিনি রাখেননি।

ছয় এমনিতেই তার জন্য একেবারেই ডালভাত। টি-টোয়েন্টিতেই শুধু ৮১৯ ছক্কা হয়ে গেছে, ধারেকাছেও নেই কেউ। কাল প্রথম ছয় পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেকটা সময়, কিন্তু একবার পাওয়ার পর সেই ছয় এসেছে বাঁধভাঙা নদীর মতো। সংবাদ সম্মেলনে যখন প্রশ্ন করা হলো ১৮টি ছয় মারার কথা, গেইল তখনই থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আট না আঠার? আমি তো আসলেই জানতাম না!’

বিজ্ঞাপন

সম্পূরক প্রশ্ন হিসেবেই এলো, ছয় মারার ক্ষেত্রে নিজের চেয়ে ভালো কি আর কাউকে দেখেছেন? গেইল এখানেও রসিকতা করে বললেন, ‘না না না, এরকম তো শুধু একজনই বিশ্বে আছে।’ সঙ্গে সঙ্গেই সংবাদ সম্মেলনে আবার হাসির ধুম।

সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য একটু সিরিয়াস হলেন গেইল। নিজের উত্তরসূরির কথাও বলে গেলেন, ‘লুইস আসছে। ও তৈরি হচ্ছে আমার জায়গা নেওয়ার জন্য।’

গেইলের ব্যাটিং মানেই বিনোদন, যেটির আশায় গ্যালারি ঠাসা হয়ে ছিল দর্শকে। সেই আশা ষোলআনাই মিটিয়েছেন গেইল। কিন্তু বয়সও হয়ে যাচ্ছে, শুনতে পাচ্ছেন বেলা শেষের ডাক। গেইলও সেটা জানেন, তবে নিজের সেই চিরায়ত দর্শনের কথাই মনে করিয়ে দিলেন, ‘১১ হাজার রান, অসাধারণ একটা অর্জন। সত্যি বলতে আমি এটা মানুষের জন্যই করি, তারা এটাই দেখতে চায়। আমি যতদিন সম্ভব মানুষকে বিনোদন দিয়ে যেতে চাই। যত বেশি সম্ভব শিরোপা জয় করতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

কিন্তু নিজের এই ইনিংসকে কোথায় রাখবেন? টি-টোয়েন্টিতে তো এর আগেও ১৯টি সেঞ্চুরি পেয়েছেন, তবে ফাইনালে সেঞ্চুরি এটাই প্রথম। কিন্তু এর চেয়েও বড় ইনিংস খেলেছেন, এর চেয়ে বিস্ফোরকও ছিল সেগুলো। গেইল অবশ্য সেই ইনিংসকে সেরা না বললেও প্রথম পাঁচের মধ্যেই রাখলেন, ‘১৭৫ তো অবশ্যই স্পেশাল। কারণ ওটা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসেই সেরা ইনিংস। তবে এটা আমি সেরা পাঁচের মধ্যেই রাখব।’

এই ইনিংসটা অবশ্য একটা কারণে অবশ্যই আলাদা, এত সতর্ক হয়ে গেইল তো কমই শুরু করেন। বিশেষ করে নারাইনকে তো খুবই দেখেশুনে খেলেছেন। গেইলের কাছে সেটির ব্যাখ্যাও পাওয়া গেল, ‘টি-টোয়েন্টিতে একজন বোলারের সঙ্গে তো আপনি ইতিবাচক হতে চাইবেনই। আপনি খোলসে আটকে গেলে কাজটাও কঠিন হয়ে যাবে। নারাইন ওদের গুরুত্বপূর্ণ বোলার। চার্লস আউট হয়ে যাওয়ার পর আমি পরিস্থিতিটা বোঝার চেষ্টা করেছি, অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। বুঝতে হবে কখন রক্ষণ করবেন। স্ট্রাইক বদল করাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় আমি ও ম্যাককালাম অসাধারণ একটা কাজ করেছি। কাকে মারতে হবে, কাকে ঠেকাতে হবে, সেটাও ঠিকমতো করেছি।’

গেইলের যেদিন ঠিকঠাক হয়, অন্যদের তো কিছু করার থাকে না!

সারাবাংলা/এমআরপি/১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন