বিজ্ঞাপন

জাল সনদে করোনা টেস্টের নামে ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা

September 1, 2021 | 6:37 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাল অনুমোদন দেখিয়ে কোভিড টেস্টের নামে ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতাররা হলেন আব্দুল্লাহ আলামিন (ম্যানেজিং ডিরেক্টর), আবুল হাসান তুষার (চেয়ারম্যান) ও মোহাম্মদ শাহিন মিয়া (মার্কেটিং ম্যানেজার)। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, ট্যাক্স সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের জাল নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা ও ঝালকাঠি জেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর ) বেলা ২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

বিজ্ঞাপন

ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণিতে অবস্থিত আল-রাজি কমপ্লেক্সের ২য় ফ্লোরকে নিজেদের কার্যালয় সাজিয়ে গত ১১ জুলাই একটি প্রতারক চক্র TKS Group এর একটি Sister Concern TKS Healthcare Service নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান বানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর একটি আবেদন করে। ওই আবেদনে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৯২টি উপজেলা এবং ৪ হাজার ৫৬২টি ইউনিয়নে বিনামূল্যে Covid-১৯ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করতে তাদের মোট ৫ হাজার ১২৬ জন সম্মুখযোদ্ধা প্রস্তুত আছে মর্মে আবেদনে উল্লেখ করে।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ভূঁইফোড় এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোনো অস্তিত্ব না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয় থেকে কোভিড টেস্ট, লোক নিয়োগ, ক্যাম্প স্থাপনের কোনো অনুমতি তারা পাবে না প্রতীয়মান হওয়ায় প্রতারক চক্রটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, প্রশাসন শাখা-১ অধিশাখা, বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে (৪৫.০০.০০০.১৪০.১১.০১৯.২০২১ (অংশ-১)-০৪, তারিখ-১৯ জুলাই এর একটি সম্পূর্ণ জালিয়াতি করে। এছাড়াও তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জাকিয়া পারভীনের স্বাক্ষর সীল জাল করে নিজেরাই বুথ স্থাপন, স্যাম্পল কালেকশন, লোক নিয়োগ এবং ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দিয়ে দেয়।’

বিজ্ঞাপন

এই ভুয়া অনুমতিপত্রের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতরা ঢাকা এবং ঝালকাঠি জেলার উপজেলা কো-অর্ডিনেটর এবং ইউনিয়নের ফিল্ড অফিসার পদে বিভিন্ন জনকে নিয়োগ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত কোনোরকম সনদ এবং অভিজ্ঞতা না থাকার পরেও শুধু প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই চক্রটি এই কর্মে লিপ্ত থাকে। এ পরিকল্পনাকারী আদুল্লাহ আল আমিন CIB (Care Givers institute of Bangladesh’ এর মার্কেটিং ম্যানেজার এবং আবুল হোসেন তুষার আলফালাহ ইসলামী ব্যাংকের সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আব্দুল্লাহ আল আমিন এবং আবুল হাসান তুষার প্রাথমিকভাবে কোম্পানির প্রোফাইল বানানোর জন্য খরচ করে এক হাজার টাকা, বিভিন্ন লোগো সংবলিত আবেদনপত্র প্রিন্ট করার জন্য খরচ করে এক হাজার টাকা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা সর্বমোট ২৫০০ টাকা বিনিয়োগ করে সমগ্র বাংলাদেশে ১০০টি ক্যাম্প স্থাপন করে। প্রতিটি ক্যাম্পের ডিলারশিপ দেওয়ার জন্য তারা কমপক্ষে ২ লাখ টাকা করে মোট ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করছিল। একইসঙ্গে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র/যুবকদের মধ্য থেকে বেশ কয়েক লাখ ছাত্র যুবককে ১০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের নামে আরো কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছিল।’

জনগণের উদ্দেশ্যে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘কোভিড-১৯ টেস্ট করিয়ে সেবার নামে জালিয়াতি সম্পর্কে সবাই সতর্ক থাকবেন। ফ্রি কোভিড-১৯ টেস্টের নামে কেউ কোথাও ক্যাম্প স্থাপন করলে পুলিশকে অবগত করুন, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’

বিজ্ঞাপন

এ সংক্রান্ত গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন