বিজ্ঞাপন

এক সেতুর অভাবে দুর্ভোগে লাখো মানুষ

September 27, 2021 | 6:33 pm

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সুনামগঞ্জ: দোয়ারা বাজার উপজেলার দুই গ্রাম আলীপুর ও টেংরাটিলা। একটি সেতুর অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। নদীর দুই পাড়ে দুই গাছের সঙ্গে বাঁধা আছে একটি রশি। সেই রশির সাহায্য নিয়ে পার হচ্ছে নৌকা। আর এই নৌকা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন শত শত মানুষ। গত ৫০ বছর ধরেই চলছে এই অবস্থা। নদীটির নাম খাসিয়ামারা।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, টেংরাটিলা-আলীপুর বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খাসিয়ামারা নদীতে সেতু না থাকায় এই খেয়াঘাট দিয়ে রশি টেনে খেয়া পারাপার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে অনেক পানি আর স্রোত থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাওরপাড়ের জনসাধারণকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় এই নদী। নদী পার হয়েই এলাকার মানুষদের যেতে হয় দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর ও জেলা সদরে। আর যোগাযোগের এই নাজুক ব্যবস্থার কারণে কৃষক ও মৎস্য খামারিদের গুণতে হয় বাড়তি খরচ।

স্থানীয়রা জানান, এই নদীতে দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তা পূরণ হয়নি। এতে সুরমা ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের টেংরাটিলা, আলীপুর, আজবপুর, গিরিসনগর, পশ্চিম টিলাগাঁও, নূরপুর, সোনাপুর, নন্দীগ্রাম, সুলতানপুর, বড়কাটা, বৈঠাখাই, হাছনবাহার, এরুয়াখাই, রসরাই, সোনাপুরসহ এলাকার অন্তত ২০-২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

বিজ্ঞাপন

আলীপুর গ্রামের মৎস্যখামারি আব্দুর রহিম বলেন, ‘সেতু না থাকায় আমরা যে কতো দুর্ভোগে আছি, তা শুধু আমরাই জানি। কিন্তু এসব দেখার মতো কেউ নেই। পুরো বছরই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে নদী পারাপার হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাতায়াত, মাছের খাবার পরিবহন সবকিছুতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ।’

হাছনবাহার গ্রামের বাসিন্দা রহমত মিয়া জানান, অনেক সময় নদী পার হতে গিয়ে দড়ি ছিঁড়ে যায়। সবসময় আতঙ্ক নিয়ে নদীটি পার হতে হয়।

নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ মশিউর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘খাসিয়ামারা নদীতে সেতু হলে হাওরপাড়ের শিক্ষা, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

আজবপুর গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমি একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করি। তাই প্রতিদিন আমাকে এই নদীটি পার হয়ে মাদরাসায় যেতে হয়। অনেক সময় খেয়া নৌকা ঘাটে থাকে না। ফলে আমি ঠিক সময়ে মাদরাসায় যেতে পারি না।’

লক্ষীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘খাসিয়ামারা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। আমরা শুনেছি সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। আশা করি দ্রুত নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’

দোয়ারাবাজারে দায়িত্বরত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী দেবতোষ পাল জানান, খাসিয়ামারা নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। খুব দ্রুত সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

বিজ্ঞাপন

এলজিইডির সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, খাসিয়ামারা নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য ৪ কোটি ২৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দরপত্রের মূল্যায়ন চলছে। এরপরই পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করে দ্রুত এখানে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন