বিজ্ঞাপন

বঞ্চিত মানুষের আশ্রয়ের ঠিকানা শেখ হাসিনা

September 28, 2021 | 7:48 pm

রাজন ভট্টাচার্য

দেশের কোন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, হত্যা, নির্যাতনসহ যে কোন বড় রকমের সহিংস ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে সেটি সবার আগে আসে গণমাধ্যমে। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসন, রাজনীতি হয়ে বার্তাটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কান পর্যন্ত পৌঁছায় তারও আগে। সামাজিক যে কোন বড় রকমের অনাকাঙ্খিত ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা বা প্রভাবশালীরা দ্বিধা-বিভক্ত হয়। প্রশাসনও শক্তিশালি পক্ষে অনেক সময় অবস্থান নেয়।
দেশের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী যদি প্রকৃত খবরটি পান তাহলে পরে এর একটা সুষ্ঠু বিহিত হবেই। ন্যায়বিচার পাবেন নির্যাতিত মানুষ। আইনের মুখোমুখি হবে অপরাধীরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে মানুষ আশায় বুক বেঁধে বসে থাকে শেখ হাসিনা পাশে আছেন। সবাই সরকারের সহযোগিতা পাবেন। নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো তাদের জন্য কঠিন কিছু হবে না। সারের সংকট হলে কৃষকরা আশায় থাকেন শেখ হাসিনা জানলে ফসল নষ্ট হবে না। যে কোন মূল্যে তিনি কৃষি উপকরণের যোগান দেবেন। সমস্যার সমাধান করবেন। জাতির জনকের কন্যা বলে কথা নয়, শেখ হাসিনার প্রতি এখনও অনেকের এমন বিশ্বাস বা আস্থা এমনই। এরকম আস্থার জায়গাটি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অর্জন। যা মানুষের অন্তর থেকেই তৈরী হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দুই

ঘটনা প্রবাহের দেশ বাংলাদেশ। এখানে সংকটের শেষ নেই। রাত পোহালেই নতুন অনেক সমস্যার জন্ম হয়। এগুলো সমাধান হতে না হতেই পুরোনোগুলো ছাপিয়ে নতুন অনেক কিছু সামনে চলে আসে। তাই এদেশের গণমাধ্যম নিয়মিত সুখবর নিয়ে প্রকাশিত হয় না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশ আছে সেখানের গণমাধ্যমে খারাপ খবর লেখার কিছু নেই। সব ভালো, তাই আরো ভালো খবর নিয়ে প্রতিদিন পাঠকের কাছে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। আমাদের দেশে মন্দের ভীড়ে যেমন ভালো খবরগুলো দেয়ার সুযোগ থাকে না, অনেক দেশে ভালো খবরগুলোই মূল খবর। দু’একটি মন্দ ঘটনা ঘটলে সেগুলো সাধারণ ভেবে গণমাধ্যমগুলো অনেক সময় প্রকাশ্যে এড়িয়ে চলে। আবার দু’একটি মন্দ ঘটনা সমাজ, রাষ্ট্র তথা গোটা রাজনীতিকে ভাবিয়ে তোলে। যা সামাধানে সব পক্ষ থেকেই দ্রুত তৎপর হতে দেখা যায়।

আমাদের দেশে সাধারণত দেখা যায়, বছর ধরে সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে। পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। খাদ্য সংকট দেখা দেয়। নানা সংকটের মুখে সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে ওঠে আসে। বারবার প্রকৃতি দুর্যোগের থাবায় নিঃস্ব হয় মানুষ। অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, সামাজিক অপরাধ, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, অর্থনৈতিক সংকট, বিনিয়োগ সমস্যা, দখল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাচার, শ্রম বাজারে ধসসহ বহুমাত্রিক সমস্যা মাথায় নিয়ে সরকারকে পথ চলতে হয়। এর সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও। এসব সমস্যা তো একদিনে তৈরী হয়নি বা হয় না। অনেক আগে থেকেই ছিল। সময়ের কারণে কোনটি বাড়ে, কোনটি কমে। এতসব সমস্যা নিয়ে পথ চলতে গেলে ভালো খবরগুলো গণমাধ্যমে সামনে আসবে না এটাই স্বাভাবিক। চলমান নানা সমস্যা মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ সরকারের পথচলার ১৩ বছরের মাথায় করোনা মহামারির ধাক্কা। এতোকিছুর পরেও কিন্তু বৈশ্বিক উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। সবকিছু সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার কারণেই। কারণ মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী তিনি। থেমে যাওয়া বিশ্বাস করেন না।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন যখন পালন হচ্ছে তখন দল বা সরকার প্রধান হিসেবে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলার স্বপ্ন দেখেন তিনি। শুভ জন্মদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনার প্রবল মানসিক শক্তি দেশের মানুষকে এগিয়ে চলার সাহস ও শক্তি যোগায়। এর ধারাবাহিকতা আপনাকেই ধরে রাখতেই হবে। কারণ আপনার চোখ দিয়ে দেখা স্বপ্নে বিভোর ১৬ কোটি মানুষ। অর্থাৎ এগিয়ে চলার বাংলাদেশে আপনার স্বপ্নের সারথি গোটা জাতি।

তিন

শেখ হাসিনার কাছে আগামী প্রজন্মের প্রত্যাশা হলো, শহর হবে গ্রাম। দুর্নীতিমুক্ত হবে বাংলাদেশ। অব্যাহত থাকবে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান। বেকারত্ব ঘুচবে। সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। রাজনীতি থাকবে প্রকৃত দেশপ্রেমিক মানুষের হাতে। আধুনিক চিন্তা ও সিদ্ধান্তে দেশের গণতন্ত্রের ভীত আরো মজবুত হবে। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আর কোন প্রশ্ন ওঠবে না। এজন্য আপনার হাত দিয়ে একটি স্থায়ী সমাধান চায় সচেতন মানুষ। সামনের দিনগুলোতে সকলের প্রত্যাশা দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে। মজবুত হবে দেশের অর্থনৈতিক ভিত। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে শত বছরের করা ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু হবে। যানজটমুক্ত হবে রাজধানী। গ্রামে গ্রামে পৌঁছাবে সব রকমের নাগরিক সুবিধা। রাষ্ট্রের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় তরুণরা হবে উদ্যোক্তা। সবখানে সমান কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে শহরমুখি কমবে মানুষের স্রোত। নৌ ও রেলপথ হবে আরো গতিশীল। উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্টীর সঙ্গে সরকার কোন অবস্থাতেই আপোস করবে না। ৭২’র সংবিধানে ফিরবে রাষ্ট্র। আপনার উপস্থিতিতেই ২০৪১ সালের বদলের যাওয়া বাংলাদেশ উপভোগ করবে গোটা জাতি। সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গড়ে তোলার বাঁশিওয়ালা কিন্তু আপনিই।

বিজ্ঞাপন

চার

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ঐ বছরেরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন প্রথমবারের মত দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালে চতুর্থ বারের মত নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্ন তিনি হয়ত ১৯৮১ সাল থেকে দেখতে শুরু করেন। তার দেখা স্বপ্ন বিফলে যায়নি। অনেক স্বপ্ন সফল হয়েছে। তাই দেশ ও মানুষের প্রয়োজনে শেখ হাসিনার ভালো কাজগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনার কিছু নেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে দেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে দীর্ঘদিন জমে থাকা যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়েছেন আপনি। এজন্য আপনার প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়ত কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে। তবে আপনার প্রতি প্রত্যাশার জায়গাটুকু কখনই নষ্ট হবে না। বিশ্বাস আছে আপনি করবেন, আপনি পারবেন। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আপনার কর্ম ও সিদ্ধান্তে সবার শতভাগ আস্থা ফিরবে। আপনি সাধারণ মানুষের আস্থার ঠিকানা হয়ে থাকুন যুগ যুগ।

লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন