বিজ্ঞাপন

‘সাহেদের সঙ্গে এত মহব্বত কীভাবে হয়েছিল’

October 7, 2021 | 2:01 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ সময় বিচারক তার কাছে জানতে চান, সাহেদের সঙ্গে আপনার এত মহব্বত কীভাবে হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন আবুল কালাম আজাদ। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন।

এদিকে শুনানি চলাকালীন আবুল কালাম বিচারককে বলেন, ‘আমি সারা জীবন কোনো অন্যায় করিনি। আর কখনও অন্যায় করব না। সারা পৃথিবীতে করোনার যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থায় রিজেন্টের লাইসেন্স নবায়ন না থাকার পরও সচিব মহোদয়ের নির্দেশে মানুষের জীবন বাঁচাতে এটা করা হয়েছিল। এমনকি ওই সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সক্ষমতাও কম ছিল। ওই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের সামনে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর সই হয়। সাহেদ যে একজন প্রতারক সেটা আমার জানা ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের মাধ্যমে করোনার টেস্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু মানব সেবার নামে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় টাকা নিচ্ছে রিজেন্ট হাসপাতাল- এমন অভিযোগ আমি জানতে পারি। এরপর সঙ্গে সঙ্গে বলি, এই দুটি শাখা বন্ধ হয়ে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

এরপর বিচারক বলেন, ‘সাহেদের সঙ্গে আপনার এত মহব্বত কীভাবে হয়েছিল।’ তখন তিনি বিচারককে বলেন, ‘সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার দিন সাহেদের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মহোদয় উপস্থিত ছিলেন। আরও বড় বড় কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ওই থেকে সাহেদের সঙ্গে আমার পরিচয়। আমি আগে থেকে জানতাম না যে, সাহেদ একজন প্রতারক। স্যার আমার ডায়াবেটিস রয়েছে। আমারা জীবন তুচ্ছ করে মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমি কোনো অপরাধ করেনি। ভবিষ্যতেও করব না।’

এদিন আবুল কালাম পক্ষের আইনজীবী মাসুদ মজুমদারসহ কয়েকজন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের মীর আহম্মেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজির ২ নভেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার চার্জশিট থেকে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক সই ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখান থেকে তারা অবৈধ পারিতোষিক বাবদ রোগী প্রতি ৩ হাজানর ৫০০ টাকা হিসেবে মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া চার্জশিটে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরাসহ সমঝোতা স্মারকের খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বমোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ মামলাটি করে।

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন