বিজ্ঞাপন

৩০০ আসনে প্রার্থীর টার্গেট, তৃণমূল চষে বেড়াবে জাপা

November 13, 2021 | 9:00 am

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে না থেকে এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যের কথা অনেক দিন ধরেই বলে আসছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। তবে শর্ত মিললে অন্য কোনো দলকে নিয়ে নিজেরাও জোট গড়ে চায় দলটি। আপাতত এসব লক্ষ্য সামনে রেখেই দলকে সাংগঠনিকভাবে সুসংগঠিত ও সুসংহত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য একটি কর্মপরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছে দলটি। সেই কর্মপরিকল্পনার আওতায় সারাদেশ চষে বেড়ানোর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি জেলা ও বিভাগী শহর তো বটেই, গুরুত্বপূর্ণ উপজেলাগুলোও সফর করবেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব সফরে তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। পাশাপাশি স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। এই সফরের মূল লক্ষ্যই হবে তৃণমূলের কাছে জাতীয় পার্টির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সঠিকভাবে তুলে ধরা। একইসঙ্গে ৩০০ আসনে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক কাজটিও এই সফরের মাধ্যমেই সম্পন্ন করার লক্ষ্য দলটির।

জাপা নেতারা বলছেন, এই সফর শেষ হলে পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলে বড় ধরনের একটি ‘শোডাউন’ দেখানোর জন্য দলের পক্ষ থেকে মহাসমাবেশ আয়োজন করা হবে। সেই মহাসমাবেশ থেকেই ঘোষণা করা হবে দলটির নির্বাচনি রোডম্যাপের চুম্বক অংশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, তৃণমূল সফরের এই কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে আজ শনিবার (১৩ নভেম্বর) দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। বৈঠকে সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও দলীয় ও জাতীয় রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হবে।

বিজ্ঞাপন

জাপার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনকে জাতীয় পার্টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। ক্ষমতায় যেতে পারুক বা না পারুক, তারা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে লড়াই করতে চায়। তবে নির্বাচনের সময় পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে তারা এবার পদক্ষেপ নেবে। নির্বাচনে জাপা নিজেদের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।

দলটির প্রেসিডিয়াম ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের একটি বড় অংশই আর জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকতে রাজি নন। গত দুইটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা অনুযায়ী আসন দেয়নি— এমন অভিযোগ তাদের। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ কৌশলে ওই সব আসনে জাপাকে প্রার্থী দিতে বললেও নিজ দল থেকে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ দাঁড় করিয়েছিল। আগামী নির্বাচনে তাই এই ‘ভুল’ আর করা যাবে না। বরং ৩০০ আসনে নিজেরা প্রার্থী দিলে জাপা আরও বেশি আসন পাবে— এমনটিও মনে করেন দলের নেতাকর্মীদের অনেকেই। আর সে কারণেই এখন থেকেই তারা মাঠে জাপার তৎপরতা দেখতে চান।

সংশ্লিষ্টরা বলেছে, জাতীয় পার্টি মূলত মহাজোটের শরিক দল হিসেবে এখন আর নেই। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা নেই। তবে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের একাধিকবার সভা-সমাবেশ ও প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়টি বারবার বলেছেন। শনিবারের প্রেসিডিয়াম বৈঠকেও এ বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসতে পারে বলে আভাস রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জাপা সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নিয়ে এই বৈঠকের পর তাদের সঙ্গে দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ে আরও একটি যৌথ সভা করা হবে। তবে যৌথ সভা কবে হবে, সেই দিন-তারিখ এখনো ঠিক করা যায়নি।

এসব বিষয় নিয়ে জানতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সারাবাংলাকে বলেন, জাপাকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করার জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। সেই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করা হবে। এজন্য প্রেসিডিয়াম বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে অনেক বিষয়েই বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, আমাদের লক্ষ্য ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করা। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।

মহাজোটের শরিক দল হিসেবে থাকা প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে চুন্নু বলেন, আমরা মহাজোটে নেই। আমরা এককভাবেই নির্বাচনে যেতে চাই। তারপরও আগামী নির্বাচনের আগের পরিবেশ-পরিস্থিতি বলে দেবে আমরা কোনো জোটে যাব কি না। এমনও হতে পারে, আমাদের নেতৃত্বাধীন কোনো জোটেই অন্য দলগুলো নির্বাচনে আসবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন