বিজ্ঞাপন

তিন কারণে ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

April 7, 2018 | 7:06 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলে রোববার (৮ এপ্রিল) বিকেলে দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন।
ঢাকা ও নয়া দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তিন কারণে ঢাকা সফরে আসছেন পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলে।

গত জানুয়ারিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিজয় কেসব গোখলের এটাই হবে প্রথম বাংলাদেশ সফর। কূটনৈতিক শিষ্টাচার অনুযায়ী, এটি মূলত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে একটি পরিচিতিমূলক সফর।

দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফরের মূল বিষয় থাকবে- দুই দেশের সম্পর্ককে আরও কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই বিষয়ে কাজ করা। দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যুগুলোকে সমাধানের পথে আনতে কাজ করবেন তিনি।
সফরে তিস্তা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বিজয় কেসব গোখলে। এছাড়া সেনাপ্রধানের বক্তব্য সম্পর্কে নয়া দিল্লি ঢাকাকে দেওয়া বার্তায় জানাবে যে এটা ভারতের বক্তব্য নয়, এটা সেনাপ্রধানের নিজস্ব মতামত।

বিজ্ঞাপন

তৃতীয় কারণ হলো, ১৬ থেকে ২০ এপ্রিল লন্ডনে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের চেষ্টা চালাচ্ছে ঢাকা ও নয়া দিল্লি। সফরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলে লন্ডনে দুই দেশের নেতার মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে কাজ করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলের ঢাকা পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নিয়ে দুই দেশের সচিব একটি সমাঝোতা স্মারকে সই করতে পারে।

ঢাকা সফরে বিজয় কেসব গোখলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এই অঞ্চলের আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারত তার অবস্থান সুদৃঢ় করতে চায়। বিশেষ করে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সাম্প্রতিককালের সম্পর্কের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখছে ভারত। এই অঞ্চলের চালকের আসনটি অন্য কোনো দেশের হাতে দিতে চায় না মোদি সরকার। যে কারণে সম্প্রতি সমুদ্র নিরাপত্তা ইস্যুতে ফ্রান্সের সঙ্গে বিশেষ চুক্তি করেছে ভারত।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ভারত বাংলাদেশকে বিশেষ বন্ধু মনে করে। আঞ্চলিক রাজনীতিতে ঢাকাকে নয়াদিল্লির পাশে চায় মোদি সরকার। কিন্তু বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত নয়া দিল্লি। গত দুই বছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং যেসব সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে তার প্রতিও সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে নয়া দিল্লি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের গণমাধ্যমকর্মীদের স্পষ্ট করে বলেছেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক শুধুমাত্র দেশের উন্নয়নের স্বার্থে। এতে ভারতের বিচলিত হওয়ার কিছু নাই।

নয়া দিল্লি প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারেননি। বাংলাদেশর সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট বার্তা পেতে চায় নয়া দিল্লি। বিজয় কেসব গোখলের ঢাকা সফরে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা জানার চেষ্টা চালাবেন। পাশাপাশি ভারতের পাশে বাংলাদেশের সরব সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবেন।

ঢাকার কূটনীতিকরা বলছে, বিজয় কেসব গোখলের সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতের সরব সমর্থনের অভাব এই ইস্যুকে ঢাকার পক্ষ থেকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া আসামে বাংলাদেশ সম্পর্কে দেশটির সেনা প্রধানের দেওয়া বিতর্কিত মন্তব্য সম্পর্কেও পররাষ্ট্র সচিবের সফরে জানতে চাইবে ঢাকা।

ভারতের কূটনীতিকরা বলছে, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বিরাজ করছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও নয়া দিল্লি ঢাকার পক্ষেই রয়েছে, এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বোঝাতেই বিজয় কেসব গোখলে বাংলাদেশ সফরে আসছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন