বিজ্ঞাপন

মুন্সীগঞ্জে আ.লীগ-বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ২০

November 14, 2021 | 10:01 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

মুন্সীগঞ্জ: সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, বাড়িঘর ভাংচুর ও দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রিপন হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মহসিনা হক কল্পনার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়দ্দা, লক্ষ্মীদিবি, মহেশপুর, ঢালীকান্দি, আনন্দপুর, বেহেরকান্দিসহ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে।

সূত্রে আরও জানায়, সকালে ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামে নৌকার প্রার্থী রিপন হোসেনের উঠান বৈঠককে কেন্দ্র করে বিদ্রোহী প্রার্থী মহসিনা হক কল্পনা পক্ষের লোকজন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মেজবাহউদ্দিন ঢালীর এলাকায় হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি, মোটরসাইকেল ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ করে। এতে কমপক্ষে ৩০টি ঘর ও দু’টি দোকান ভাংচুর করে মহসিনা হক কল্পনা পক্ষের লোক ও সমর্থকরা।

বিজ্ঞাপন

এই ঘটনার জেরেই নৌকার সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে নোয়দ্দা, লক্ষ্মীদিবি, মহেশপুর, ঢালীকান্দি, আনন্দপুর, বেহেরকান্দিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের সমর্থকরা প্রায় আড়াই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ সমর্থক আহত হয়।

পরে আবার দুপুরে নৌকার সমর্থকরা পাল্টা হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে আশেপাশের ৩টি ওয়ার্ডের ৭টি গ্রামে। শত শত ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকাজুড়ে। দফায় দফায় দুপুর পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি হামলায় দুইপক্ষের শতাধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর চালানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে। সংঘর্ষ থামলেও এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রিপন হোসেন বলেন, ‘সকালে ইউনিয়নের নোয়াদ্দা এলাকায় আমার উঠান বৈঠক ছিল। আমাদের গণসংযোগ বানচাল করার জন্যই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহসিনা হক কল্পনার পক্ষের লোকজন আমার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করে।’

তিনি জানান, ‘প্রথম হামলার পর আমি সদর থানার ওসি সাহেবকে ফোন দিই। তিনি ফোর্স পাঠালে কিছু সময় বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার সাব-ইনেসপেক্টর বাশার দায়ী। উনার ইন্ধনে এবং তার সমনেই সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করে।’

এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহসিনা হক কল্পনা বলেন, ‘রিপন পাটোয়ারী তার লোকজন দিয়ে তিনটি ওয়ার্ডের সাতটি গ্রামে আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এবং আমার ভোটারদের গ্রামছাড়া হতে বাধ্য করে। রিপন সমর্থিত কংশপুরা, আমঘাটা, রাজারচর ও চরডুমুরিয়াসহ পাঁচ গ্রামের সন্ত্রাসী বাহিনী একত্রিত হয়ে আমাদের গ্রামে হামলা করে এ তাণ্ডব চালায়।’

বিজ্ঞাপন

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, বর্তমানে মোল্লাকান্দি গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বা কেউ আহতও হয়নি। ককটেলের উৎস বের করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। তবে আমার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা বানোয়াট।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন