বিজ্ঞাপন

জবিতে ‘বাড়তি আয়ের’ সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দাবি শিক্ষকদের

November 20, 2021 | 11:34 pm

জবি করেসপন্ডেন্ট

জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বরের পর থেকে বন্ধ থাকা সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম আবারও চালুর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রোগ্রাম চালু থাকলে বিভিন্ন জায়গায় কর্মজীবীরা এখানে পড়াশোনার সুযোগ পান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার হয়। প্রায় দুই বছর ধরে এ প্রোগ্রাম বন্ধ থাকার পেছনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হস্তক্ষেপ রয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের অনেকে।

বিজ্ঞাপন

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষকরা বাড়তি আয়ের উদ্দেশেই এই সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করার পক্ষে দাবি তুলেছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ঢাকার বাইরে অবস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতই সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামের ভর্তি কার্যক্রম ও পাঠদান চলছে।

শিক্ষকরা বলছেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোর্স করতে ১৭ হাজার টাকা লাগে, একই কোর্স জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে করতে লাগে মাত্র সাড়ে ৭ হাজার টাকা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মানও ভালো। আর ঢাকার ভেতরে সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীও অনেক। যারা বিভিন্ন পেশায় কর্মরত থাকার পাশাপাশি সান্ধ্যকালীন কোর্স করেন, শিক্ষার মান ও খরচের দিক বিবেচনা করে তারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি না হয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এটা হলে স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থী সংকটে পড়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এ কারণে কৌশলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ধারণা শিক্ষকদের।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুনভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি না করার অনুরোধ করেন। এ নির্দেশনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সান্ধকালীন কোর্স বন্ধ। গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের আগে নীল দলের দু’গ্রুপ নির্বাচনী ইশতেহারে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দাবি তোলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু থাকলে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রফেশনাল শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটে। শুক্র ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে। এসময় দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা সান্ধ্যকালীন ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ পান। বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কোর্স চালু রয়েছে। সেখানে দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি নেন। কিন্তু আমাদের দেশের কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রোগ্রাম বন্ধ। এতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রোগ্রাম কোর্স করছে। এতে টাকাও বেশি লাগছে, আবার সেখানকার প্রফেশনাল কোর্সের মান নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ থাকার পেছনে স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।’

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘সান্ধ্যকালীন কোর্সে মাস্টার্সে চারটি সেমিস্টারে ২০টি কোর্স পড়ানো হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সের মানের চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান অনেক ভালো। সান্ধ্যকালীন কোর্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয় না।’

বিজ্ঞাপন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর বিষয়ে আমাদের ইচ্ছে আছে। আমাদের শিক্ষকরা কোয়ালিটির দিক থেকে সেরা। এ বিষয়টি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনা করে সিন্ধান্ত নেব। শিক্ষকরা রাজি থাকলে ইউজিসির সঙ্গে কথা বলে খুব শিগগিরই আমরা এ কোর্স চালু করতে পারবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করলে আমরা নীতিমালা ঠিক করে দেবো। কোন কোন বিভাগ চালু করতে পারবে, চালু করলেও কয়টা ব্যাচ ভর্তি নিতে পারবে, এগুলোর একটা নীতিমালা থাকবে। কোনোভাবেই নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সমস্যা যাতে না হয়, এটা আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবো।’

সারাবাংলা/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন