বিজ্ঞাপন

‘শেখ হাসিনা শপথভঙ্গ করেছেন, ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই’

December 3, 2021 | 1:57 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম যা বলেছেন, তার সঙ্গে আমি একমত। তবে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। শপথ অনুযায়ী তিনি রাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করতে পারেন না। কিন্তু তার এই বক্তব্যে তিনি সেই বিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। তিনি শপথভঙ্গ করেছেন। এ কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। শপথভঙ্গের কারণে তার ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।

শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশের জাতীয় কাউন্সিলে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন- মন্টুর গণফোরামের সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে ২ চিঠি ড. কামালের

বিজ্ঞাপন

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিলাম ড. কামাল হোসেনকে দেখে, বিএনপিকে দেখে নয়। বিএনপির সঙ্গে জামায়াত আছে। এ কারণে আমি ঐক্যফ্রন্ট ছেড়েছি। জামায়াত যদি বেহেশতেও যায়, সেই বেহেশতে আমি যেতে পারি না।

দেশের জনগণ বিএনপিকে পছন্দ করে না জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, দেশের বর্তমান অস্থিরতার জন্য বিএনপি দায়ী। দেশের জনগণ গণফোরাম, জাসদ, বাসদসহ আমাদের পছন্দ করে। কিন্তু বিএনপিকে বাংলার জনগণ পছন্দ করে না, বিশ্বাস করে না। অথচ বিএনপি দেশের অন্যতম বড় একটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু তারা জনগণের জন্য রাজপথে নামে না। তেলের দাম বাড়ল, বাস ভাড়া বাড়ল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেল। অথচ বিএনপি জনগণকে নিয়ে মাঠে নামতে পারছে না। কারণ জনগণ বিএনপিকে বিশ্বাস করে না, তাই জনগণ মাঠে নামছে না।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ‘মাইনকার চিপা’য় পড়েছেন। আমি আমার ভগিনীকে (শেখ হাসিনা) বলছি, আপনি ছাত্রলীগ সামলান। তা না হলে আরও বিপদ সামনে। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছিলেন ছাত্র পরিষদের কিছু কর্মী। তাদের ওপরে যে নগ্ন হামলা হয়েছে তা দেখে আমি লজ্জা পেয়েছি। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। প্রকৃত যদি তাই হতো, তাহলে এর সুষ্ঠু একটি বিচার হতো।

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গ টেনে কাদের সিদ্দিকী বলেন, সরকার বলছে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আসলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। মুষ্টিমেয় কিছু মুক্তিযোদ্ধা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া মৃত্যুসজ্জা। বিদেশে চিকিৎসা করতে যেতে চান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, আপনি তাকে বিদেশ যেতে দিচ্ছেন না কিসের ভয়ে? তিনি কি বিদেশ গেলে আর ফিরে আসবেন না? অবশ্যই খালেদা জিয়া দেশের বাইরে গেলে ফিরে আসবেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও তাকে বিদেশ পাঠাতে চেয়েছিল। তিনি বলেছেন, মরতে হয় দেশের মরব। তাই আপনাকে (শেখ হাসিনা) বলব, একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে আজই তাকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কথা তুলে ধরে কাদের সিদ্দিকী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলাম। এখন যারা সরকারের মন্ত্রী-এমপি আছেন, তাদের তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি। অধ্যাপক আবু সাঈদ আমার সঙ্গে ছিলেন। ওই সময় যদি আমরা অস্ত্র হাতে তুলে না নিতাম, তাহলে আজকের আওয়ামী লীগের অনেক এখন কবরে থাকতেন।

জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুখে মুখে জাতীয় ঐক্যের কথা বললে চলবে না, তাগিদ দিতে হবে। সবাই মিলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

গণফোরামের এই কাউন্সিলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন