বিজ্ঞাপন

উদীচী-বোধনের পৃথক আয়োজনে সংস্কৃতির সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান

December 15, 2021 | 9:31 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে চট্টগ্রামে বোধন আবৃত্তি পরিষদ পথ আবৃত্তি অনুষ্ঠান করেছে। অন্যদিকে উদীচী চট্টগ্রাম দেশের গানে তুলে ধরেছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথা। উভয় আয়োজনে চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনেরা সংস্কৃতির সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকায় বোধন এবং উদীচী পৃথকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

চেরাগি চত্বরে বোধনের পথ আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আগে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও পিনাকী দাশ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, চসিক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, আবৃত্তিশিল্পী অঞ্চল চৌধুরী, বোধনের সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষ এবং সহ-সভাপতি নারায়ণ প্রসাদ বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন বোধনের নিশি চৌধুরী জুঁই, রীমা দাশ, সেতার রুদ্র ইশিতা, তাহেরা আফিফা, হোসনে আরা নাজু, উর্মি চৌধুরী, অর্পণ চক্রবর্তী, কেয়া চক্রবর্তী, শাহিন সুলতানা এবং শিমলা চক্রবর্তী। এছাড়া আমন্ত্রিত হিসেবে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সাফা মারওয়া, উচ্চারকের শামীমা ইয়াসমিন, বৈখরীর ঐশী পাল, একুশের রেনিয়া চৌধুরী এবং চট্টলার সুপ্রিয়া চৌধুরী আবৃত্তি পরিবেশন করেন।

বিজ্ঞাপন

স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ঋত্বিক নয়ন, সৈকত দে, রিমঝিম আহমেদ, শুকলাল দাশ, মিনু মিত্র, মোস্তফা মহাম্মদ ইমরান, শিপ্রা দাশ, মনিরুল মনির এবং মোহাম্মদ জুবায়ের।

বোধনের ৫০ শিশু শিল্পীর অংশগ্রহণে বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। সন্দীপন সেন একা’র গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ এবং বৃন্দ আবৃত্তি মাইনুল আজম চৌধুরীর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ‘পঞ্চাশ বছর ধরে’ পরিবেশিত হয়। এতে নাট্যাংশ পাঠ করেন মাইনুদ্দিন কোহেল। রীয়া দাশ চায়নার পরিচালনায় ‘নৃত্য নিকেতন’ সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে।

উদীচী চট্টগ্রাম

বিজ্ঞাপন

এদিকে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে উদীচী চট্টগ্রামের তিনদিনের আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে আলোচনা সভা, গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর চেরাগি পাহাড়ের নন্দন চত্বরে বিজয় মঞ্চে আলোচনায় অংশ নেন কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন। সঞ্চালনা করেন উদীচী চট্টগ্রামের সহ-সাধারণ সম্পাদক জয় সেন।

কবি কামরুল হাসান বাদল বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাঙালি সংস্কৃতির আন্দোলনের একটি ফসল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে আমাদের আবারও আবহমান সংস্কৃতি চর্চার ওপরই জোর দিতে হবে। সংস্কৃতি মানুষের মননে মানবিকতা বোধ জাগ্রত করে। দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি মমত্ববোধ তৈরি করে। সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ জাগ্রত করে মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে শেখায়। সংস্কৃতিহীনতা আমাদের অমানুষ করে দেবে। সুতরাং যে সাংস্কৃতিক চেতনার মধ্য দিয়ে আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক, মানবিক রাষ্ট্র পেয়েছি, সেটার মূল আদর্শ আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি দেশ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশকে ব্যর্থ করে আবারও পাকিস্তান বানানোর অনেক চক্রান্ত হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধীদল জামায়াত ইসলামীকে এদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সেই মানবতাবিরোধী জামায়াতের নেতাদের বিচার করেছি। কিন্তু তারা এখনও ধর্মের নামে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সুতরাং এই বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা সেই জায়গায় ফিরতে হবে। সংস্কৃতির সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশকে বাঁচাতে হবে এবং এগিয়ে নিতে হবে।’

আলোচনা শেষে বোধন আবৃত্তি পরিষদের শিল্পীরা আবৃত্তি, নৃত্য নিকেতনের পরিবেশনায় নাচ এবং সঙ্গীতশিল্পী মানস পাল দেশের গান পরিবেশন করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনদিনের আয়োজনের শেষদিনে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসে সকাল থেকে চেরাগি চত্বরে ‘মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র’ প্রদর্শন হবে। বিকেলে উদীচী চট্টগ্রামের শিল্পীরা গণসঙ্গীত ও দেশের গান পরিবেশন করবে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন