বিজ্ঞাপন

কোটা সংস্কার : বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, ক্লাস বর্জন

April 9, 2018 | 5:01 pm

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে রোববার (৮ এপ্রিল) থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনে নামে চাকরি প্রার্থী শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় আন্দোলনকারী ও পুলিশসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়। এই ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় উত্তেজনা ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।

হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৯ এপ্রিল) সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জন ও বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও জলকামান ছুড়ে তাদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।সেখানে সোমবার দুপুর থেকে দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. জুলকারনাইনসহ ৫০ জন আহত হন। আহত ২৫ জনকে সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় হাজার খানেক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয়পাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সোমবার সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা রায়সাহেব বাজার মোড়ে অবস্থান নেওয়ায় অচল হয়ে যায় পুরান ঢাকা। তবে এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে, সদরঘাট হতে গুলিস্থান, দয়াগঞ্জ, ধোলাইখাল, কেরানীঞ্জ এলাকায় চলাচলকারী সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। রাস্তায় আটকে পড়ে তিন শতাধিক গাড়ি।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষ্যমের ঠাঁই নাই, শেখ হাসিনার বাংলায় বৈষ্যমের ঠাঁই নাই’ ‘কোটা দিয়ে কামলা নয় মেধা দিয়ে আমলা চাই’-সহ বিভিন্ন স্লোগানে কম্পিত করে পুরান ঢাকা।

তবে শেখ হাসিনাকে অবমাননা করছে এমন অভিযোগ তুলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দিয়েছে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে রায়সাহেব বাজার মোড়, সূত্রাপুর, কোতয়ালী, বংশাল ও ওয়ারী থানার পলিশকে সতর্ক অবস্থায় দেখা যায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

এদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। সোমবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করেন।

এরপর ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় মূল ফটক জুড়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধু শিক্ষার্থীরা। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কার এখন সময়ের দাবি। এই দাবি আদায়ে আমরা ক্লাস বর্জন করে মাঠে নেমেছি। আমরা আমাদের দাবি আদায় করেই এখান থেকে ফিরবো।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জনের পাশাপাশিনগরী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখী ছেড়ে যাওয়া একটি শাটল ট্রেন আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সকাল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ করে। ক্যাম্পাসের বাইরে নগরীর ষোলশহর এলাকায়ও অবস্থান নেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

কোটা সংস্কার দাবিতে চলা আন্দোলনে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনে আহ্বানে একাত্মতা প্রাকাশ করে শাহজালালা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সকাল পৌনে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হতে থাকেন তারা। তাদের অভিযোগ কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

কেড়ে নেওয়া হয়েছে প্লাকার্ড। তারা আরও জানান, এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে তারা ক্লাস বর্জন করেছেন। সরকার তাদের দাবি মেনে নেওয়ার পরেই তারা ক্লাসে ফিরবেন।

এর আগে রোববার বিকেলে কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিল করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন । এ সময় বিভিন্ন বিভাগের কয়েক শ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আইএ/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন