বিজ্ঞাপন

তথ্য অধিকার নিশ্চিতে এগিয়েছে অনেক, রয়েছে চ্যালেঞ্জ

December 17, 2021 | 2:23 pm

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের শহরাঞ্চলে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা যখন সেখানকার মানুষ তাৎক্ষনিক জানতে পারেন, কিন্তু দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর কমলাপুরের মানুষের কাছে সে খবর আসে তিনদিন পরে। শুধু তাই-ই নয়, সামান্য তথ্য জানতেও সেখানকার মানুষকে ছুটে যেতে হতো জেলা কিংবা উপজেলা শহরে। এই চিত্র মাত্র দুই বছর আগের। কমলাপুর গ্রামে এখন বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র। যার মাধ্যমে মানুষ কৃষি, শিক্ষা থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, সংস্কৃতিসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য অনলাইন কিংবা অফলাইন দুই দিক থেকেই পাচ্ছেন। যে কারণে দ্রুতই পরিবর্তন এসেছে কমলাপুরে।

বিজ্ঞাপন

এই চিত্র শুধু একটি ইউনিয়নের নয়, সরকারের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশের প্রায় সব ইউনিয়নে তথ্য সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রণয়ন করা হয়েছে তথ্য অধিকার আইন। যার সুফল মানুষ পেতে শুরু করেছে। বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাতেও।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি-১৬’র লক্ষ্য টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থার প্রসার, সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করা এবং সব স্তরে কার্যকর, জবাবদিহিতামূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা। ১০ লক্ষ্যের মধ্যে নম্বর ১০-এ জাতীয় আইন ও আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী জনসাধারণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে মূল ফোকাল পয়েন্টে থেকে কাজ করছে সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সহযোগিতায় রয়েছে তথ্য কমিশন, তথ্য অধিদফতর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এসব সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, গত এক দশকে তথ্য অধিকার নিশ্চিতে অনেক কাজ হয়েছে। এসব কাজের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন সেবা ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে জনগণের কাছে সহজে সেবা পৌঁছে দিতে ২০১৪ সালে তৈরি করা হয় জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৩৩ হাজারের বেশি ওয়েবসাইটের সমন্বয়ে তৈরি এই তথ্য বাতায়ন সরকারের তথ্য সহজেই জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের রূপকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে এ উদ্যোগের সুফল পাচ্ছেন প্রায় ১৬ কোটি মানুষ। তথ্য সেবা যেন মানুষ আরও সহজে পায়, সেজন্য দেশের ইউনিয়নগুলোতে তথ্য সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে সরকারের মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ অনলাইন, অফলাইনে উভয় মাধ্যমেই তথ্য সেবা পাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া টেকসই উন্নয়নের জন্য জনগণের কাছে দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান গঠন ও সরকারি তথ্যে জনগণের অধিগম্যতা বাড়াতে সরকার নানা রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, সিটিজেন চার্টার, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা, সেবা সম্পর্কিত হেল্প লাইন বা হটলাইন চালু করা। এর বাইরে দেশের গণমাধ্যম, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংগঠন (এনজিও) এবং সুশীল সমাজ জনগণের তথ্যের অধিকার সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূমিকা পালন করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দেশের মানুষ এখন দ্রুত তথ্য পাচ্ছেন। এটা তথ্য অধিকার নিশ্চিতের বড় সফলতা মনে করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার জনগণের জন্য কাজ করে। সরকারের কর্মকাণ্ড জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। তাছাড়া সরকার যে জনগণকে সেবা দিচ্ছে তা পাওয়ার ক্ষেত্রেও তথ্য জানার প্রয়োজন। তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে মানুষ যেমন সব তথ্য সহজে জানতে পারছে, অন্যদিকে দুর্নীতিও কমে যাচ্ছে। কারণ, অন্ধকারে রেখে কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন হয়েছে। এর সুফল মানুষ পাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) বাস্তবায়নের মতোই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তবে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন গণমাধ্যম ও জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো বিষয়ে এখনো বেশকিছু সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা অনুযায়ী, মতপ্রকাশ মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রের অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ। এছাড়া গ্লোবাল রাইট টু ইনফরমেশন রেটিং ২০১৮ অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্কোর ১৫০-এর মধ্যে ১০৭ এবং অবস্থান ১৩৯-এর মধ্যে ২৭তম।

এদিকে, জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকার আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এবং জাতীয়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সংবিধানে ৩৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং সংবাদ-ক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চিয়তা দেওয়া হয়েছে। তথ্য অধিকার বাস্তবায়নে আইনি কাঠামোর পাশাপাশি তথ্য কমিশন গঠন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে। এই সরকারের সময়ে গণমাধ্যমের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। সরকার ৪৫টি টেলিভিশনের লাইসেন্স দিয়েছে। ৩৫ টা টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে এখন। এছাড়া বিপুল সংখ্যক অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। আইপি টিভির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ওটিটি নীতিমালার কাজ চলছে। জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে ২০০৯ সালে সংসদের প্রথম অধিবেশনে তথ্য অধিকার আইন পাস হয়েছে।

জনগণের ক্ষমতায়ন, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানো, দুর্নীতি কমানো এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ জাতীয় সংসদে ‘তথ্য অধিকার আইন ২০০৯’ পাস করা হয়। ওই বছরের ১ জুলাই কার্যকর আইনটি। একইসঙ্গে তথ্য অধিকার নিশ্চিতে গঠন করা হয় তথ্য কমিশন। আটটি অধ্যায় ও ৩৭টি ধারা নিয়ে আইনটি প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য ছিল তথ্যে জনগণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, জনগণের পক্ষ থেকে তথ্য অধিকার চর্চা করে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি বা বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার কাজে স্বচ্ছতা আনা, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা ও বাড়ানো, দুর্নীতি কমানো এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। নীতিনির্ধারকদের মতে, জনগণ এরই মধ্যে এই আইনের সুফল পেতে শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান মরতুজা আহমদ বলেন, তথ্য অধিকার আইনের পরিধি দিন দিন বাড়ছে। দেশের মানুষ এর সুফল পাচ্ছেন এবং জনগণের সম্পৃক্ততা বেড়েছে। মানুষ এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন। তথ্য পেতে তাদের আর অফিসে ধরনা দিতে হয় না।

এদিকে, তথ্য অধিকার নিশ্চিতে কমিশন কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটিগুলোকে ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অনলাইন ট্র্যাকিং সিস্টেম (অনলাইনে আবেদন, আপিল ও অভিযোগ দায়ের ও ট্র্যাকিং করার পদ্ধতি) সম্পর্কে অবহিতকরণ সভা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যুগোপযোগী করার কাজ করছে। তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে দেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইট খুলেছে। অধিকাংশ জেলার তথ্য বাতায়নে তথ্য অধিকার আইন সন্নিবেশিত হয়েছে।

এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ে তথ্য অধিকার আইনের বাস্তবায়ন জোরদার করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, সমন্বয় ও সংস্কারের নেতৃত্বে আরটিআই ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভাগীয় কমিশনরাদের নেতৃত্বে তথ্য অধিকার বাস্তবায়নে সুপারভিশন ও পরিবীক্ষণ জেলা কমিটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ উপজেলা কমিটি কাজ করছে। তথ্য অধিকার আইন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তথ্য কমিশন বিভিন্ন মতবিনিময় সভা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করে এর স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াচ্ছে।

তথ্য কমিশনের ২০১৯ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তথ্য অধিকার আইনের নির্ধারিত ফরম্যাট ব্যবহার করে ২০১৯ সালে ১২ হাজার ৮৫২ আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর পর্যায়ের আবেদন ২৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কমিশনগুলোতে ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, জেলা পর্যায়ে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ, এনজিওতে ১০ দশমিক ২২ শতাংশ তথ্য পাওয়ার আবেদন পড়েছে। দেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়া ১২ হাজার ৮৫২টি আবেদনের মধ্যে ১২ হাজার ২৭১টি তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে, যা মোট আবেদনের ৯৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

অন্যদিকে ২০১৯ সালে তথ্য কমিশনে ৬২৮টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। ২৩৫টি অভিযোগ শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ৫২টি পরের বছর নিষ্পত্তি করা হয়। তথ্য কমিশনে গৃহীত ২ হাজার ৯৪৪টি অভিযোগ শুনানি শেষে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ৯৯ হাজার ২৩৯টি তথ্য পেতে আবেদন পাওয়া গেছে।

এত কার্যক্রমের পরেও জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি এসডিজিতে গুরুত্ব দেওয়া হলেও এসডিজি ঘোষণার পর গত চার বছরে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পাওয়া যায়নি। বাস্তবায়নে থাকা সরকারের মন্ত্রণালয় বিভাগগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি এতটা ব্যাপক যে চার বছরে এর অগ্রগতি দৃশ্যমান না হলেও প্রচুর কাজ হচ্ছে। মানুষ তার সুফল ভোগ করছেন।

তথ্য অধিকার নিশ্চিত নিয়ে বাংলাদেশ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) একটি সংক্ষিপ্ত গবেষণা করেছে। ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ১৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ৩৯টি এনজিওর ওয়েবসাইটের ওপর সংগ্রহ করা তথ্যে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার চেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে রয়েছে বলে গবেষণায় বেরিয়ে আসে। মোট তিনটি ক্ষেত্রে স্কোরিং করে দেখা গেছে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বতঃপ্রণোদিত তথ্যপ্রকাশে অগ্রগতি যথেষ্ট সন্তোষজনক নয়। তথ্যের প্রবেশগম্যতার ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবস্থা দেখা গেলেও তথ্যের ব্যাপ্তি ও উপযোগিতার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানেই আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটে বিধিমালা অনুযায়ী অনেক তথ্য প্রকাশিত হলেও তথ্যের হালনাগাদকরণ এবং ধরন অনুযায়ী তথ্যের বিন্যাস, বিস্তৃতি ও তথ্য পাওয়া সহজ নয়। এই ঘাটতি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটগুলোতেও দেখা গেছে।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেটা বলা যাবে না। যতটুকু হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়।

তিনি বলেন, বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে যাদের হাতে তথ্য, অর্থাৎ সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, সেখানে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্তরা মনে করেন— এই তথ্য তাদের কাছেই রাখতে হবে। তারা গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। যে কারণে সাধারণ মানুষ চাইলেও তথ্য পায় না এবং স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তারা যে তথ্য প্রকাশ করবে সে মানসিকতাও তৈরি হয়নি। এটি বড় প্রতিবন্ধকতা। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন।

তিনি আরও বলেন, সব জনগণ এখনো তথ্য অধিকার সম্পর্কে জানেন না। তাদের জানাতে হবে। তথ্য অধিকার আইনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ঘাটতিগুলোর কারণে আমরা তথ্য অধিকার নিশ্চিতে ততটা এগোতে পারিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা এমডিজি অর্জনের সময় শেষ হওয়ার পর শুরু হয়েছে ১৫ বছর মেয়াদি সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল বা এসডিজি। তবে এমডিজির ৮টির বিপরীতে এসডিজিতে পূরণ করতে হবে মোট ১৭টি লক্ষ্য। এই সতেরো লক্ষ্যে ১৬৯ টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্ষুধা, অসমতা, দারিদ্রের বিলোপ সাধন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় প্রবেশগম্যতার উন্নয়ন ঘটানো, মানুষ ও ধরিত্রীর কল্যাণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করার এই কর্মপরিকল্পনা অর্জন করতে হবে ২০৩০ সালের মধ্যে।

সারাবাংলা/জেআর/এএম

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন