বিজ্ঞাপন

ফোনালাপ ফাঁসের মামলায় আমীর খসরুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

December 23, 2021 | 12:23 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: তিনবছর আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সময় ফাঁস হওয়া একটি টেলি কথোপকথনের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। একই অভিযোগপত্রে আমীর খসরুর সঙ্গে আলাপকারী তৎকালীন এক ছাত্রদল নেতাকেও আসামি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষ ক্ষমতা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে উভয়ের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের হয়েছিল। তবে তদন্ত শেষে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। টেলিফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় গুহ চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দেন। অভিযোগপত্রে সাবেক ছাত্রদল নেতা ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীকেও আসামি করা হয়েছে।

জানতে চাইলে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার ফারুকুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দুজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এতে শুধু দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের আসামি করা হয়েছে। প্রসিকিউশন শাখা সেটি আদালতে দাখিল করবে। আদালত অভিযোগপত্র পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে আদেশ দেবেন।’

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় অভিযোগপত্র পেয়েছি। সেটি আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।’

নগরীর কোতোয়ালী থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) এর ৫৭ (২) ধারায় মামলাটি হয়েছিল। দাখিল করা অভিযোগপত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে উল্লেখ করা অভিযোগের বিষয়ে ‘তথ্যগত ভুলের’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার ফারুকুল হক।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনের মধ্যে আমীর খসরুর মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে কুমিল্লায় অবস্থানরত তৎকালীন ছাত্রদল নেতা মিলহানুর রহমান নাওমীর টেলিফোনে একটি কথোপকথন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আমীর খসরুর কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, তিনি ওই কর্মীকে বলছেন ঢাকায় এসে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তে।

ওই বছরের ৪ আগস্ট বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। মামলায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রের চেষ্টার অভিযোগ এনে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। মামলায় জাকারিয়া দস্তগীর দাবি করেন, আমীর খসরুর উসকানির জেরে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তার কথার জেরেই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়।

ওই মামলায় ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর উচ্চ আদালতের অর্ন্তবর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। একমাসের বেশি সময় তিনি কারাগারে ছিলেন।

এছাড়া পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালতের নির্দেশে মিলহানুর রহমান নাওমীকেও আসামি করা হয়, যদি মামলার এজাহারে তার নাম ছিল না। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

একই ঘটনায় একই সময়ে দু’জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায়ও একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় দেড়বছর আগে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন