বিজ্ঞাপন

‘তিস্তা’ ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ দুটি উচ্চারণও করলেন না গোখলে

April 9, 2018 | 9:03 pm

এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঢাকা-নয়া দিল্লির দ্বিপক্ষীয় বর্তমান সম্পর্ককে স্বর্ণযুগ উল্লেখ করে ভারতের সফররত পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলে বলেছেন, ‘এই সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উন্নয়নের স্বার্থে গতি শ্লথ করা যাবে না।’

সোমবার (৯ এপ্রিল) সফরের দ্বিতীয় দিনে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর অপর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন অনেক কথাই বললেন কেসব গোখলে। পরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সেমিনারেও দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরে সাত পৃষ্ঠার দীর্ঘ বক্তৃতা করলেন।

কিন্তু তার মধ্যে একটিবারও উচ্চারিত হলো না ঢাকার অতি কাঙ্খিত দুটি শব্দ ‘তিস্তা’ ও ‘রোহিঙ্গা’।

বিজ্ঞাপন

অথচ আগে থেকেই গোখলের এই সফরে ঢাকার কূটনীতিকদের প্রধানতম দুটি ইস্যুই ছিলো তিস্তার পানি বন্টন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট।

তবে যৌথ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক একাধিকবারই জানিয়েছেন, দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় তিস্তার পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের বিষয়ে কথা হয়েছে এবং সহযোগিতার আশ^াস মিলেছে।

মো. শহীদুল হক বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অন্য ইস্যূর পাশাপাশি তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে আলাপ হয়েছে। ভারত আশ^স্ত করেছে যে খুব শিগগির এই সমস্যা মিটে যাবে। তারা এই বিষয়ে কাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

আর রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানেও ভারতের আশ^াস মিলেছে বলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন শহীদুল হক।

ভারতের পররাষ্ট্র গত রোববার (৮ এপ্রিল) বিকেলে তিন দিনের ঢাকা সফরে আসেন। এসেই সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ক্লোজড ডোর বৈঠক করেন। এরপর সোমবার সকালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ প্রেসব্রিফে অংশ নেন। আর পরে দুপুরে অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখেন তিনি।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর গণমাধ্যম কর্মীদের ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলে বলেন, ‘বন্ধুরা, এতোক্ষণ আমি আমাদের সম্পর্কের চমৎকার উন্নতির কথা বললাম, যেগুলো আমরা যৌথভাবে কাজ করে বাস্তবায়ন করেছি। তারপরেও আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আরো কিছু অমিমাংসিত ইস্যূ রয়ে গেছে, এগুলো আমরা ভুলে যাই নি। অমিমাংসিত বিষয়গুলোর মিমাংসার জন্য আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

রোহিঙ্গা শব্দটি একবারের জন্যও উচ্চারিত হতে শোনা যায়নি তার মুখে। রোহিঙ্গা না বলে তাদের রাখাইনের বাস্তুচ্যূত জনগোষ্ঠী বলে উল্লেখ করেন গোখলে।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সরকার ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উচ্চারণ করে না এবং ‘রোহিঙ্গা’য় বিশ্বাস করেনা।

ওই প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘গত আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বাস্তুচ্যূতির বিষয় আন্তর্জাতিক অঙ্গণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বাংলাদেশ বাস্তুচ’্যত এই জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দিচ্ছে, যা প্রসংশনীয়।
ভারত এই সঙ্কট সমাধানে সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত। অপারেশন ইনসানিয়াত নামে ভারত সরকার গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত ৩ লাখ জনগোষ্ঠীকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপ করে দ্বিতীয় পর্যায়ের ত্রাণ সহায়তা দেবে ভারত।’

তিনি আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করছে ভারত সরকার। বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী রাখাইনে ফিরে যাতে থাকার জায়গা পায় এজন্য রাখাইনে ঘড়-বাড়ি উন্নয়ন করার পরিকল্পনা করেছে ভারত।’

সাারবাংলা/জেআইএল/এমএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন