বিজ্ঞাপন

নভেম্বরে ৪৯ জনসহ এ বছর নির্বাচনি সহিংসতার বলি ৯১

December 31, 2021 | 10:21 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে ২০২১ সালে ১৬৭টি নির্বাচনি সহিসংতার ঘটনায় কমপক্ষে ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কেবল নভেম্বরেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৯ জন। এছাড়াও এসব সহিংসতায় ১০০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এবং ১ হাজার ৮১৫ জনেরও বেশি মানুষ সংঘর্ষ-সহিংসতায় আহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) ২০২১ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলয়নায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপনের মাধ্যমে চলতি বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতির নানা দিক তুলে ধরা হয়।

এমএসএফের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন নির্বাহী প্রধান অ্যাডভোকেট মো. সাইদুর রহমান। পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফের সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী এ বছরের জানুয়ারি থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনি সংঘর্ষ-সহিংসতায় হতাহতের চিত্র তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৯১ জনের মধ্যে ২১ জন প্রতিপক্ষের গুলিতে এবং ছয় জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে মারা গেছেন। নিহতদের প্রায় সবাই ভোটে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সমর্থক বা কর্মী।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে উঠে আসে, সবচেয়ে বেশি নির্বাচনি সহিংসতা হয়েছে নভেম্বরে। এ মাসে কেবল নরসিংদী জেলায় নিহত হয়েছেন ১১ জন। একদিনের হিসাবে গত ২৯ নভেম্বর ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনি সহিংসতায় একজন নারী, একটি শিশু, দু’জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী, দু’জন নৃতাত্বিক জাতিগোষ্ঠীর সদস্য ও একজন বিজিবি সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার তাণ্ডবে নির্বাচনি সৌন্দর্য ম্লান হয়েছে বলে মনে করছে এমএসএফ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর নির্বাচন কমিশনসহ দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে সহিংসতামুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে— উৎকণ্ঠা, সহিংসতা, হানাহানি ও হতাহতের মাত্রা নতুনভাবে যোগ হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনীত একক প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন না পেয়ে অধিকাংশ স্থানেই আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ক্ষমতাসীন দলের নিজেদের মধ্যকার সংঘাত-হিংস্রতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করে এমএসএফ।

এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে সুলতানা কামাল বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় সহিংসতার ঘটনা বেশি ঘটেছে বলে মনে করছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

পর্যবেক্ষণে এমএসএফ আরও বলছে, এসব নির্বাচনে অন্তত ১৫৬টিতে চেয়ারম্যন পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনি সংঘাত, সহিংসতা ও নানাবিধ অনিয়মের কারণে স্বাধীনভাবে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। এসবের ফলে নির্বাচনগুলো প্রহসনে পরিণত হচ্ছে। পাশাপাশি প্রশ্নবিদ্ধ এসব নির্বাচন ক্রমাগত জনগণের আস্থা হারাচ্ছে, যা দেশের গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি বলেও এমএসএফ মনে করে।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন