বিজ্ঞাপন

জাতির পিতাকে হত্যার পর সবাই কেন থমকে গেল?— প্রশ্ন শেখ হাসিনার

January 5, 2022 | 7:07 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যে জাতি এক নেতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে দেশ স্বাধীন করেছে; সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো তখন সবাই কেন থমকে গেল? সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের জবাব কখনও খুঁজে পাইনি। তবে হয়তো পাব।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জন্মলগ্ন থেকেই ছাত্রলীগ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করেছে। বাংলাদেশের সব সংগ্রাম ও ইতিহাসের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সাল থেকেই চিন্তা করেছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা যাবে না। এজন্য তিনি নিউক্লিয়াস গঠনসহ নানা পদক্ষেপ নেন। সেখানে ছাত্রলীগ ছিল তার অগ্রগামী দল। তিনি যখন যে কাজ করেছেন সবার আগে ছাত্রলীগকে মাঠে নামিয়েছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ মাঠে নিয়ে গেছে ছাত্রলীগ। জাতীয় পতাকার ডিজাইন করে তৈরি রাখার নির্দেশও ছাত্রলীগকে দেওয়া হয়েছিল। আর যখনই তিনি কারাগারে বন্দি হতেন তখন ছাত্রলীগের দায়িত্ব আমার মা নিজেই নিতেন।”

নিজেও ছাত্রলীগের সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ইডেন ইন্টারমেডিয়েট গার্লস কলেজের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ সবসময় প্রত্যেক আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রগামী ভূমিকা নিয়েছে। মানুষের অধিকার সংগ্রাম প্রতিষ্ঠায় সব থেকে বেশি শহিদ হয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।’

বিজ্ঞাপন

কাজেই ছাত্রলীগের ইতিহাসের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি দেশ দিয়ে গেছেন, আদর্শ দিয়ে গেছেন। যে আদর্শ নিয়ে একটি জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেট শুধু জাতির পিতাকেই কেড়ে নেয়নি, স্বাধীনতার চেতনা এবং আদর্শকেও বুলেটবিদ্ধ করেছিল, ধ্বংস করে দিয়েছিল।’

আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের কিছু লোক হয়তো বিভ্রান্ত হয়েছিল, কিন্তু মূল দল বা তৃণমূল থেকে এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় সোচ্চার ও সক্রিয় ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগকে কিন্তু সবসময় সেই আদর্শ নিয়েই গড়ে তুলতে হবে। ক্ষমতার লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে নিজেদের আদর্শবান কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’ জাতির পিতার আদর্শ যদি একবার ধারণ করা যায় তাহলে দেশপ্রেমে উদ্বুব্ধ হওয়া কঠিন কাজ নয় বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, ‘যদি দেশ প্রেম না থাকে, জনগণের প্রতি যদি দায়িত্ববোধ না থাকে তাহলে শুধু ক্ষমতায় বসে ক্ষমতাকে উপভোগ করা যায়। দেশের উন্নতি করা যায় না। ২১ বছর সংবিধান লঙ্ঘন করে হত্যা-ক্যূ ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যারা এদেশের ক্ষমতা দখল করেছিল একের পর এক তারা বিলাসিতায় গা ভাসিয়েছে। একটা ক্ষুদ্র এলিট শ্রেণি তৈরি করেছে।’

বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সংগঠনটা গড়তে হবে। কারণ এই সংগঠনই শক্তি। আমি ১৯৮১ সালে এসে মূল দলের পাশাপাশি প্রতিটি সহযোগী সংগঠন গড়ে তোলার কাজ শুরু করি প্রথমে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তখনই আমি নিজেকে যোগ্য মনে করব যখন দেখব সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর সহযোগী সংগঠনগুলো গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ছিল আগে দল গড়ে তোলা। ক্ষমতায় যেতে হবে তখনই যখন দেশের মানুষের জন্য কাজ করার শক্তি থাকবে। যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার লোভ আমি করিনি, করবও না। আমার লক্ষ্য ছিল, ক্ষমতা চাই দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। এভাবে আমি ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হয়েছি। কাজও করেছি।’

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সংগঠনের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। সাবেকদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, হুইপ ইকবালুর রহিম, অসীম কুমার উকিল, অজয় কর খোকন, একেএম এনামুল হক শামীম, লিয়াকত শিকদার, বাহাদুর বেপারী, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন